উনিশের
নির্বাচনের ফলাফল 
প্রভাবিত করার বিদেশি
প্রভাবিত করার বিদেশি
                      ষড়যন্ত্র
                     সাধন
কুমার পাল
   নির্বাচনের
সময় জনমত
কে নানা
ভাবে প্রভাবিত
করার প্রয়াস
করা হয়।
নিজেদের
পছন্দ মতো দলকে ক্ষমতায় আনার
জন্য নির্বাচনের
সময় সক্রিয়
হয়ে উঠে বিদেশি শক্তি গুলিও।
বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশন
ও ডিজিটাল যুগ শুরু হওয়ার পর
থেকে এই ধরণের অবাঞ্চিত
হস্তক্ষেপ  থেকে কোন দেশের
নির্বাচন কে মুক্ত রাখা কঠিন
ব্যাপার। অর্থ দিয়ে,
দেশি
ও বিদেশি
সংবাদ মাধ্যমে কোন কল্পিত
কেলেঙ্কারির ফাঁসের লোমহর্ষক
কাহিনী প্রকাশ করে
,
হাজার
হাজার  ফেক সোসাল মিডিয়া
অ্যাকাউন্ট খুলে এজেন্ডা
চালিয়ে ,
এনজিওর
আড়ালে  ছদ্ম
বেশি  রেডিক্যাল
গোষ্ঠীর মাধ্যমে
অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরী করে
 ,ভোট
দানের প্রাক মূহূর্তে ভোটারদের
উদ্দেশ্যে
সরাসরি 
ই-মেল
পাঠানো ছাড়াও আরো অনেক নিত্যনতুন
উপায়ে  ভোটারদের প্রভাবিত
করা প্রয়াস করা হয়।
একটি
গবেষণা মূলক সংখ্যা তত্ত্ব
বলছে ১৯৪৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত
বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে
কলকাঠি নাড়ানোর   ৮১টি ঘটনা
ঘটিয়ে বিশ্বে আমেরিকা প্রথম
স্থানে ,রাশিয়া
৩৬টি  ঘটনা ঘটিয়ে  দ্বিতীয়
স্থানে রয়েছে।অভিযোগ উঠেছে
২০১৬ সালের আমেরিকান প্রেসিডেন্সিয়াল
ইলেকশনে রাশিয়ান হস্তক্ষেপের
জন্যই ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন।১৯৯৬
সালে রাশিয়ার নির্বাচনে
আমেরিকা হস্তক্ষেপ করে ছিল
এমন অভিযোগও আছে।পেনসিলভানিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন
বিভাগের অধ্যাপক কথলিন হল
জেমিসন(kathleen
Hall Jamieson)  এক
গবেষনায় দেখিয়েছেন 'forensic
analysis of the available evidence and concludes that Russia Very
likely delivered Trump's victory”.  
জানা
গিয়েছে  রাশিয়া মূলত দুটি
প্রধান উপায়ে আমেরিকার
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কে
প্রভাবিত করেছে। এক,
ইন্টারনেট
রিসার্চ এজেন্সির তথ্যানুসারে
রাশিয়ার  সেন্টপিটার্সবাগে
একটি ট্রোল ফার্ম খুলে  ২০১৩
থেকে ২০১৭ সাল এই সময় সীমার
মধ্যে   চরমপন্থী আমেরিকানের
ছদ্মবেশে  শয়ে শয়ে সোস্যাল
মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খুলে,
মিছিল
মিটিংএর আয়োজন করে সোস্যাল
মিডিয়া ব্যাবহারকারী  লক্ষ
লক্ষ  আমেরিকানের কাছে নানা
বার্তা পৌছে দেওয়া হয়ে ছিল।বিশেষ
উদ্দেশ্যে তৈরী করা এই ধরণের
বার্তা গুলি শুধু  নির্বাচনে
অংশগ্রহনকারী প্রার্থীদের
মধ্যে  নয় সাধারণ ভোটারদের
মধ্যেও অবিশ্বাসের বাতাবরণ
সৃষ্টি করেছিল। দুই,
রাশিয়ান
মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স
অনুমোদিত হ্যাঁকারা ভোট দানের
প্রাক মূহূর্তে আমেরিকান
কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ
করে প্রোপাগান্ডা সম্বলিত
ইমেল ও সোস্যাল মিডিয়া
অ্যাটাচমেন্ট লক্ষ লক্ষ
আমেরিকান ভোটারের ব্যাক্তিগত
অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিয়ে ছিল।
দৃষ্টান্ত
আরো আছে।বারাক হোসেইন ওবামার
সময়  ইজরায়েলি আইন সভা নিস্সাত
(
knesset) এর
সদস্যদের প্রভাবিত করে ঐ দেশের
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন
নেতানিয়াহু কে পদচ্যুত করতে
আমেরিকান স্টেট ডিপার্টমেন্ট
একটি  ইজরায়েলি সংস্থা 'ওয়ান
নেশন'
কে
৩৫০০০০ ডলার দিয়ে ছিল। অভিযোগ
আছে যে রাশিয়া  প্রফেশনাল
হ্যাকার এবং সোস্যাল মিডিয়ার
মাধ্যমে  ব্রিটেনের বেক্সিট
নির্বাচন কেও প্রভাবিত করার
চেষ্টা করেছিল।
নরম
দেশের তকমা প্রাপ্ত ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং দেশ
হিসেবে ভারত বিশ্ব রাজনীতিতে
ক্রমশই প্রভাবশালী হয়ে
উঠেছেন।ভারতে এই  উত্থান
পাকিস্থান,
চিন,
আমেরিকার
মতো অনেক দেশের কাছেই সরাসরি
চ্যালেঞ্জের বিষয়।  এরকম
প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত ২০১৯
নির্বাচনে বিশ্বের মহাশক্তি
ও বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি
ভারতের নির্বাচনকে প্রভাবিত
করার প্রয়াস করবে না এটা বিশ্বাস
করা কঠিন ।ভারতে অনুষ্ঠিত
২০১৯ এর সাধারণ নির্বাচনে
রাশিয়া জনমত কে প্রভাবিত করার
প্রয়াস চালাতে পারে ,আমেরিকার
সেনেট ইনটেলিজেন্স কমিটি অন
ফরেন ইনফ্লুয়েন্স অন সোস্যাল
মিডিয়া প্লাটফর্মসএ  প্রোফেসার
হাওয়ার্ডের এরকম একটি পর্যবেক্ষণ
মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর
রাশিয়া সরকারি ভাবে প্রেস
বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি অস্বীকার
করে। 
২০১৯
এর নির্বাচন উপলক্ষে ভারত
এখন রণক্ষেত্র। ক্ষমতাসীন
বিজেপিকে আক্রমন করতে গিয়ে
বিরোধী দল গুলি অনেক ক্ষেত্রেই
সীমা লঙ্ঘন করে দেশের সাংবিধানিক
ব্যবস্থার  বিরোধিতা ,সেনাবাহিনীর
বিরোধিতায় নেমে পড়ছেন।বিরোধী
নেতাদের বক্তব্যকে হাতিয়ার
করে চিন পাকিস্থানের মতো দেশ
বিশ্বের দরবারে সরাসরি ভারতকে
কাঠঘড়ায় তুলছে।প্রশ্ন উঠছে
বিরোধী দল গুলির রাজনৈতিক
বিরোধীতার নামে দেশের বিরোধীতা
কোন বিদেশী ষড়যন্ত্রের অঙ্গ
নয় তো?
নির্বাচনের
দামামা বেজে উঠার আগেই সৈয়দ
সূজা নামে আমেরিকা ভিত্তিক
একজন স্বঘোষিত ভারতীয় সাইবার
এক্সপার্ট কংগ্রেস নেতা কপিল
সিব্বালকে পাশে বসিয়ে লন্ডনে
প্রেস কন্ফারেন্স করে অভিযোগ
করেণ যে ওর কাছে পাকা পোক্ত
প্রমান আছে যে ২০১৪ সালে ইভিএম
হ্যাক করেই নির্বাচনের ফলাফল
প্রভাবিত করা হয়ে ছিল।বিদেশের
মাটিতে বসে করা অভিযোগের ধরণ
দেখে এটা স্পষ্ট করেই বলা যায়
দেশ জুরে ভারতের গণতান্ত্রিক
ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার
বাতাবরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই
এই ধরণের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যে
কোন  নির্বাচনের আগে বিভিন্ন
মসজিদের মোল্লা মৌলভি ও বিভিন্ন
গির্জার ফাদারদের ফতোয়া গুলিতে
চোখ রাখলেই  ভারতে মুসলিম ও
খৃষ্টান নির্বাচক মন্ডলী কে
প্রভাবিত করার প্রয়াস স্পষ্টতই
চোখে পড়বে।এই সমস্ত ফতোয়ার
 পিছনে  আন্তর্জাতিক চার্চ
সংগঠন ,
বিদেশ
ভিত্তিক বিভিন্ন ইসলামিক
সংস্থার  যোজনাবদ্ধ প্রয়াস
এবং বিদেশী অর্থের প্রভাব
নেই একথা হলফ করে বলা যাবে
না।এদেশের মাওবাদী গোষ্ঠী
গুলিকে চীনা মদতের বিষয়টি
সর্বজন বিদিত।যে কোন নির্বাচনে
মাওবাদীরা হয় ভোট বয়কট এবং
ক্ষেত্র বিশেষে কোন কোন দলকে
সমর্থন করে থাকে। যেমন মিডিয়ায়
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে সদ্য
অনুষ্ঠীত ছত্রিশগড়ের বিধানসভা
নির্বাচনে মাওবাদীরা বিজেপিকে
পরাজিত করার জন্য গোপনে সরাসরি
কংগ্রেসের পক্ষে প্রচার চালিয়ে
ছিল।
পাকিস্থানের
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তো
প্রকাশ্যেই বলেছে ২০১৯ এর
লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন
সরকার গঠিত হওয়ার পর ভারতের
সাথে আবার আলোচনা শুরু হবে।কংগ্রেস
নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার নরেন্দ্র
মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করার
জন্য পাকিস্থানের সাহায্য
চেয়ে রেখেছেন।পাকিস্থানের
মোল্লা মৌলভীরাও  ভারতীয়
মুসলিমদের নরেন্দ্র মোদীকে
পরাজিত করার আবেদন রেখেছেন।এরকম
একটি পরিস্থতিতে  স্বাভাবিক
ভাবেই একটি প্রশ্ন উঠে  ভারতের
বিরোধীদল গুলির হাতে রাজনৈতিক
অস্ত্র তুলে দিতে নির্বাচনের
আগে ইচ্ছে করেই পুলওয়ামার
সন্ত্রাসবাদী হামলা ঘটানো
হয় নি তো?পরমানু
শক্তিধর দেশ হিসেবে পাকিস্থানের
হয়তো বিশ্বাস ছিল পাকিস্থানের
ভিতরে আক্রমন করার সাহস  ভারত
দেখবে না।কিন্তু পাকিস্থানের
দম্ভ গুড়িয়ে দিয়ে বালাকোটের
এয়ার স্ট্রাইকের পর ভারত
সরকারের দৃঢ়তা ও বায়ুসেনার
পরাক্রম দেখে সমস্ত ভারতকে
 আত্মবিশ্বাসের আলোতে ঝলমলিয়ে
উঠতে দেখে শুধু পাকিস্থান ও
পাকিস্থানের সন্ত্রাসবাদী
গোষ্ঠী গুলি নয়  ভারতের বিরোধী
দল গুলিও ব্যাকফুটে চলে
গিয়েছিল।পাকিস্থানের দম্ভ
গুড়িয়ে দেওয়ার জেরে দেশজুরে
তৈরী হওয়া উচ্ছাস আসন্ন লোক
সভা নির্বাচনে ভোটে রুপান্তরিত
হয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন
বিজেপির  ভোট বাক্স ভরিয়ে দেবে
না তো?
সংশয়
ছড়িয়ে পড়ে বিরোধী শিবিরে।
এই
আশঙ্কা থেকেই প্রমাদ গুনলেন
মমতা রাহুল অখিলেশ কেজরীওয়ালদের
মতো ভারতের বিরোধী নেতারা।নরেন্দ্র
মোদীকে আক্রমনের নামে বায়ুসেনার
পরাক্রম নিয়েই প্রশ্ন তুলে
দিলেন।ভারত বিরোধী বিদেশি
মিডিয়া ও পাকিস্থানের সাথে
সুরে সর মিলিয়ে এয়ার স্ট্রইকে
কত জনের মৃত্যু হয়েছে শুধু
তার প্রমাণ চেয়ে থেমে থাকলেন
না,
নানা
প্রসঙ্গ উপস্থাপন করে এটা
বোঝানোর চেষ্ঠা করলেন আসলে
পাকিস্থান নয়,
নির্বাচন
কে সামনে রেখে সমস্ত ঘটনা
ঘটানো হয়েছে। বিশ্বের দরবারে
কোনঠাসা পাকিস্থান ও ইসলামিক
সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী গুলি 
ভারতের বিরোধী নেতাদের বক্তব্য
হাতিয়ার করে নিজেদের নির্দোষ
প্রমাণের চেষ্ঠা করলো।চীনের
আপত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘে  মাসুদ
আজাহারকে গ্লোবাল টেরোরিস্ট
ঘোষনা আটকে যেতেই উচ্ছসিত 
বিরোধীরা যেন আবার ফ্রন্ট
ফুটে এসে নরেন্দ্র মোদীকে
আক্রমন করতে শুরু করলেন।রাহুল
গান্ধী প্রতিক্রিয়া জানাতে
গিয়ে চীনের বিরুদ্ধে একটি
বাক্যও উচ্চারণ না করে বললেন
নরেন্দ্র মোদী নাকি চীনের
প্রসিডেন্টকে ভয় পান।এর থেকে
স্পষ্ট বিরোধীরা ক্ষমতা ফিরে
পাওয়ার জন্য   ভারতের স্বার্থ
 বিরোধী  কোন বিদেশি রাষ্ট্রের
 পদক্ষেপকেও স্বাগত জানাতে
প্রস্তুত।
উড়ি
হামলা  ও তার জেরে হওয়া  সার্জিক্যাল
স্ট্রাইক এবং  বালাকোটের হামলা
নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর থেকে 
মমতা ব্যানার্জি,
রাহুল
গান্ধী,
দিগ্বিজয়
সিং,
নভোজ্যোত
সিং সিধু,অরবিন্দ
কেজরিওয়াল অখিলেশ যাদববের
মতো অনেক বিরোধী নেতাই এখন
পাকিস্থানি মিডিয়ায় হিরো।সমস্ত
বিশ্ব সমর্থন জানালেও নির্বাচনের
মুখে সন্ত্রাস মোকাবিলায়
ভারতের ভুমিকা নিয়ে মোদী
সরকারকে হেনস্থা করে যে ভাবে
পাকিস্থানের সুবিধে করে দেওয়া
হচ্ছে তাতে কিন্তু এই শত্রু
দেশটির কলকাঠি নাড়ার সম্ভবনা
উড়িয়ে দেওয়া যায় না।   খুব
সাধারণ যুক্তিতেই বোঝা যায়
 ভারতের বিরোধী দল গুলির
প্রো-পাকিস্থানী
অবস্থান দেখে পাকিস্থান লোকসভা
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সরকারকে
হেনস্থা করার রসদ যুগিয়ে
ভারতের বিরোধী নেতাদের হাত
শক্ত করার কোন সুযোগই হাতছাড়া
করতে চাইবে না। সোস্যাল মিডিয়ার
মাধ্যমে ,
বিভিন্ন
ধর্মীয় জমায়েত  থেকে গুজব
ছড়িয়ে  বিশেষ করে মুসলিম
সম্প্রদায়ের মানুষের মনে 
বিজেপি বিরোধী ঘৃণা ও ভয়ের
ভাব তৈরী করতে যে পাকিস্থান
সক্রিয় ভুমিকা নেবে এই বিষয়েও
খুব একটা সন্দেহের অবকাশ নেই।
ওসামা
বিন লাদেনের  মৃত্যুর খবর
প্রচারিত হওয়ার পর কেউ ওসামার
লাশ দেখতে চেযেছে বা প্রমাণ
চেয়েছে এমন নজির নেই।পাকিস্থানের
বালাকোটে ভারতীয় বিমান হানার
পর সমস্ত  বিশ্ব ভারতের পাশে
দাড়িয়ে একযোগে পাকিস্থানের
নিন্দা করেছে।সন্ত্রাসবাদের
বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের
ভুমিকা,
আত্মরক্ষার
অধিকার কে কুর্নিশ জানিয়েছে
সমগ্র বিশ্ব।এই পরিস্থিতিতে
পাকিস্থানকে চরম শিক্ষা দিয়ে
ভারতকে ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের
কালো ছায়া থেকে মুক্ত করার
মতো পরিবেশ যখন নির্মান হয়েছে
ঠিক সেই সময় কয়েকটি বিদেশি
সংবাদ মাধ্যমের ভারত বিরোধী
প্রোপাগান্ডাকে অবলম্বন করে
 ভারতের ভিতর থেকেই সমস্ত ঘটনা
নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো।
কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং
পুলওয়ামার ৪৪ জন জওয়ানের
মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে উল্লেখ
করে এটিকে সন্ত্রাসবাদী হানা
বলতেই নারাজ। বিমান বাহিনী
বালাকোটের জঙ্গলে বোমা ফেলে
গাছ উপরে এসেছে এমন কথাও বলছেন
বিরোধীরা।
উইংকমান্ডার
অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তির
ঘটনাকে ভারতের কুটনৈতিক সাফল্য
না বলে পাকিস্থানী প্রধানমন্ত্রীর
মহানুভবতা বলে প্রচার
করছেন।পাকিস্থানী মিডিয়া 
ভারতের বিরোধী নেতাদের বক্তব্য
ফলাও করে প্রচার করেছে।সন্দেহ
নেই ভারতের বিরোধী নেতাদের
ভুমিকা ভারতের অবস্থান কে
দুর্বল করে পাকিস্থান কে
আভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক
মহলে অক্সিজেন জুগিয়েছে।ভারতের
মধ্যে এই অনৈক্যের বার্তা
ইসলামিক সন্ত্রসাবাদী গোষ্ঠী,
পাকিস্থান
বা চিনের মতো বৈরী দেশ গুলিকে
ভারত বিরোধী ক্রিয়াকলাপ চালাতে
উৎসাহিত করবে ,বিপাকে
ফেলতে উৎসাহ যোগাবে। স্বাভাবিক
ভাবেই প্রশ্ন উঠবে যে ভারতের
বিরোধী নেতারা পাকিস্থানের
ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডার
মাধ্যম হয়ে উঠলেন না তো?
১৯৯৯
সালের ২৪ ডিসেম্বর কান্দাহারে
ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া  ইন্ডিয়ান
এয়ার লাইনন্সের আইসি ৮১৪
বিমানের যাত্রীদের ছাড়ানোর
জন্য ভারতে  মিছিল মিটিং,প্রধানমন্ত্রী
বাসভবনের সামনে ধরণা প্রদর্শনের
ঘটনায় সমস্ত দেশ উত্তপ্ত হয়ে
উঠে ছিল।সে সময় কেন্দ্রে
অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার
।বিরোধীরাও  মাসুদ আজাহার সহ
সমস্ত সন্ত্রাসবাদীদের ছেড়ে
দেওয়ার বিনিময়ে হলেও যাত্রীদের
মুক্তি চাইছিলেন।মিডিয়ার
মাধ্যমে ভারতের  অভ্যন্তরীণ
পরিস্থিতির উপর নিরন্তর চোখ
রাখছিল সন্ত্রাসবাদীরা।মিডিয়ায়
প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে
অজিত দোভাল (বর্তমানে
ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি
এডভাইজার )
কে
বলতে শোনা গেছে তিনি যখন 
যাত্রীদের মুক্ত করার ব্যাপারে
 আলাপ আলোচনা করছিলেন সে  সময়
সন্ত্রাসবাদীরা বারবার এটাই
বলছিলেন যে '
তোমার
দেশের মানুষ সমস্ত দাবি মেনে
যাত্রীদের মুক্তির কথা বলছে,
কোন
অধিকারে এখানে তুমি  দরকষাকষি
করছ?'দোভাল
আরো জানান যে দেশের অভ্যন্তরীণ
অবস্থা সম্পর্কে  ভারতীয়
মিডিয়ার তুলে  ধরা সমস্ত  তথ্য
সন্ত্রাসবাদীরা এমন ভাবে
উল্লেখ  করছিল যে ওদের সাথে
কথাবার্তা চালানোই সমস্যা
হয়ে দেখা দিয়ে ছিল।শ্রী দোভালের
এই সাক্ষাৎকার থেকে এটা স্পষ্ট
যে সন্ত্রাসবাদ কিংবা চিন
পাকিস্থানের মতো
দেশের ভারত
বিরোধী প্রোপাগান্ডা 
মোকাবিলার পথে প্রধান সমস্যা
ভারতের অন্ত:সার
শূন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি।এই
সংস্কৃতির ধারক ও বাহক সিংহভাগ
ভারতীয় মিডিয়া জ্ঞাতসারে বা
অজ্ঞাতসারে হলেও ভারত
বিরোেধী প্রোপাগান্ডা
বিস্তারে সাহায্য করে থাকে।
ভারতীয়
রাজনীতির চলমান গতি প্রকৃতি
বিশ্লেষন করলে দেখা যাবে যে
সমগ্র দেশ এখন স্পষ্টতই দুইটি
রাজনৈতিক মেরুতে বিভক্ত।একটি
হচ্ছে ক্ষুদ্র  স্বার্থ'
কেন্দ্রিক
রাজনীতি  যাতে সবার উপরে
'ব্যাক্তি
কিংবা দল '
সত্য
তার উপরে নাই।আরেকটি 'বৃহত্তর
স্বার্থ'
কেন্দ্রিক
রাজনীতি যাতে সবার উপরে 'দেশ
সত্য'
তার
উপরে নাই।বিগত পাঁচ বছরে পাইয়ে
দেওয়ার রাজনীতির সস্তা পথে
না হেঁটে  দেশের বুনিয়াদী
ব্যাবস্থার  উন্নয়নের জন্য
বিজেপি নেতৃত্বধীন কেন্দ্রীয়
সরকার নোট বাতিল,
জিএসটি,
স্বচ্ছভারত,
জনধন
যোজনা,
ডিজিটাল
ইন্ডিয়া,
মেক
ইন ইন্ডিয়া,স্টার্টআপ
ইন্ডিয়া অ্যাকশন প্ল্যানের
মতো  বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত
নিয়েছে।কারণ স্বাধীনতার পর
থেকে চলে  আসা  সস্তা রাজনৈতিক
সংস্কৃতি দেশের বুনিয়াদি
ব্যবস্থা গুলিকে  দুর্বল করে
দিয়েছিল। কঠিন পরিস্থিতির
সন্মুখীন হয়েও  বৃহত্তর স্বার্থে
ভারতবাসী হাসি মুখে এই সমস্ত
উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।স্বাধীনোত্তর
ভারতে জনমোহিনী রাজনৈতিক
সংস্কৃতির পরিমন্ডলে এই ধরণের
'ভোট
বিমূখ'
সিদ্ধান্তের
নজির খুব একটা নেই। কিন্তু
এই সমস্ত প্রকল্প নিয়ে  বিরোধীদের
 সেই প্রচলিত সস্তা রাজনৈতিক
সংস্কৃতিজাত আক্রমনের ভাষা
ও ভাব লক্ষনীয়।বিরোধীরা এই
সমস্ত কঠোর  সিদ্ধান্তের
পিছনেও ব্যাক্তি স্বার্থ
,দলীয়
স্বার্থ ,
ভোটের
রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। যেমন
,নোট
বাতিলের গাযে ভারতের সবচেয়ে
বড় দুর্নীতির তকমা দিয়ে
দেশবাসীকে এটা বোঝানোর চেষ্ঠা
হয়েছে যে হাতে গোনা কয়েক জন
মানুষের স্বার্থে এই নোট বাতিল
করা হয়েছে।জিএসটিকে গব্বর
সিং ট্যাক্স বলে কটাক্ষ করে
এই নতুন কর ব্যবস্থায় মানুষের
প্রাথমিক সমস্যা গুলিকে উস্কে
দিয়ে একটি অনাস্থার পরিবেশ
তৈরীর চেষ্ঠা হচ্ছে। স্বাভাবিক
ভাবেই যে দেশের রাজনীতিতে
রাজনীতির নামে  বিরোধীতার
কোন লক্ষন রেখা নেই,মর্যদার
কোন সীমারেখা টানা নেই সেই
দেশের নির্বাচনে বিদেশি শক্তি
অতি সহজেই  হস্তক্ষেপ করতে
পারে । 
বিভিন্ন
সোস্যাল মিডিয়া কোম্পানি
গুলিও যে ভারতের আভ্যন্তরীন
ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে সেটাও
ইতি মধ্যে  প্রমাণিত। ২০১৮
সালের গুজরাট বিধানসভা 
নির্বাচনের সময় কেমব্রিজ
এনালাইটিকার মতো বিদেশি
কোম্পানি ভারতীয়দের সোস্যাল
মিডিয়ার তথ্য চুরি করে বিজেপির
বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষে
নির্বাচন কে প্রভাবিত করার
অভিযোগে ভারতীয় রাজনীতি উত্তাল
হয়ে উঠে ছিল। উনিশের নির্বাচনে
বিদেশি ষড়য়ন্ত্র ব্যর্থ করে
ভারতে  'বৃহত্তর
স্বার্থ কেন্দ্রীক'
রাজনৈতিক
সংস্কৃতি  চালু করার বড় সুযোগ
উপস্থিত ।
এই
নির্বাচন কে কোন দল বিশেষের
জয় পরাজয় হিসেবে না দেখে ভারতীয়
রাজনীতির গুনাত্মক পরিবর্তনের
সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত । এই
সুযোগ ভারতবাসী কতটা কাজে
লাগাবে তা দেখার জন্য আরো
অপেক্ষা করতে হবে। #
  
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন