সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বড় ষড়য়ন্ত্র

       
   মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর বেশ কয়েক বার হামলা করার প্রয়াস হয়েছে।এই প্রসঙ্গে ভারতের সলিসিটার জেনারেল হরিশ সালভে ২০১৪ সালে বলে ছিলেন  ভারত সরকার কে অস্থির করার জন্য বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টের সাহায্য নিতে পারে।প্রথমে অবসর প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শ্রী দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কারণে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার প্রয়াস হয়েছিল ,এখন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর বিরুদ্ধে যৌন উৎপিড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে দেশের বিচার ব্যাবস্থার বিরুদ্ধে কোন বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে না তো ? এই প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হলে প্রশ্ন উঠবে কারা দেশের বিচার ব্যাবস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত?
সাধারণ যুক্তিতেই বলা যায় সুপ্রিম কোর্টের রায় যাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে তারাই এই ধরণের  ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকতে পারে।কংগ্রেস সহ সাতটি বিরোধী দল অবসর প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শ্রী দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট
প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেছিল।মজার ব্যাপার হলো  ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার বেশ কিছুদিন আগে থেকে প্রধান বিচারপতি শ্রী দীপক মিশ্র এমন কিছু মামলার রায় দিয়ে ছিলেন যাতে বিরোধী দল গুলির খুশি হওয়ার কথা নয়।যেমন অযোধ্যা মামলার শুনানি  ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পরে করার কংগ্রেসের আবেদন  বিচারপতি মিশ্র খারিজ করে দিয়েছিলেন। ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার একদিন আগে বিচারপতি লোহার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার পুনর্বিচারের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ছিলেন।
সুপ্রিমকোর্টে কর্মরত একজন মহিলা কর্মচারি  দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন উৎপিড়নের অভিযোগ এনেছেন।গত ১৯ এপ্রিল ঐ মহিলা কর্মচারি ওর উপর যৌন উৎপিড়নের বিবরণ উল্লেখ করে একটি হলফনামা সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত বিচারপতিদের কাছে পাঠিয়েছেন।  কিন্তু এর পিছনে যে এক বড় ষড়যন্ত্র কাজ করছে তা ইতি মধ্যেই প্রকাশিত। সুপ্রিম কোর্টের একজন বরিষ্ঠ উকিল উৎসব বৈন্স ওঁর ফেস বুক পোষ্টে জানিয়েছেন যে প্রধান  বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা সাজানোর জন্য ওনার কাছে বড় রকম ঘুষের প্রস্তাব এসেছিল।মহিলা কর্মচারির অভিযোগের সারবত্তা তদন্তের পর জানা যাবে ।তবে এটা যে একটি বড় ষড়যন্ত্রের অঙ্গ এটা হলফ করে বলা যায়।
 এখানে উল্লেখ্য, জাষ্টিস গগৈ ইতি মধ্যেই রাফাল মামলায় প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলার জন্য রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা প্রার্থনায় বাধ্য করেছেন।চিটফান্ড মামলায় মমতা ব্যানার্জীর আশির্বাদ ধন্য পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার কে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিতে পারেন এমন সম্ভবনা তৈরী হয়েছে।সন্দেহ নেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এটি একটি বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে। জাষ্টিস গগৈ ইতিমধ্যেই প্রশান্ত ভূষণের আপত্তি উপেক্ষা করে ভারত সরকারের আর্জি মেনে সাত জন রহিঙ্গাকে মায়নমারে ফেরত পাঠানোর আর্জিতে সায় দিয়েছেন।NRC মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায়  জাষ্টিস গগৈ এর এজলাস থেকেই হবে এমনটাই সম্ভাবনা।বলার অপেক্ষা রাখেনা এই সমস্ত রায়ের কোনটাই বিরোধীদের রাজনৈতিক স্বার্থের অনুকুল নয়।এই পরিস্থিতে দেশের বিচার ব্যাবস্থার উপর প্রশ্ন চিন্হ তুলে দিতে পারলে এই ধরণের রায় জনিত অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে।দেশে এখন নির্বাচন চলছে, গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে  বিপন্ন দেখালে আম জনতাকেই সেই দায়িত্ব নিজেদের কাধে তুলে নিতে হবে। # 
                     সাধন কুমার পাল
 

মন্তব্যসমূহ

  1. একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের আইন প্রশাসন ও বিচার বিভাগককে বিধ্বস্ত করা, কব্জা করা ও প্রভাবিত করার দীর্ঘ মেয়াদী ষড়যন্ত্র চলছে । কেবলমাত্র রাষ্ট্র বাদী চিন্তাবিদদের কাছেই এটা ধরা পড়ছে । ব্যাপক জনসচেতনতা দরকার ।

    উত্তরমুছুন
  2. Anti Nationls are doing their best to topple the Modi Govt. but it is certain that Nationlist will win the battle....Nice Blog

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...