প্রকাশ্য
জনসভায় তিনি খিস্তি ছাড়া,
চিৎকার
ছাড়া কথা বলেন না বললেই ভালো।বিশেষ
করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের
প্রসঙ্গ এলে তো কথাই নেই।চুনোপুটি
বিরোধী নেতাদের কথা ছেড়েই
দিন।সাংবিধান সম্মত উপায়ে
জনগণের ভোটে নির্বাচিত
প্রধানমন্ত্রীকেও তিনি  মানেন
না বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন।একটি
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে
তিনি  তুই-তোকারি
থেকে শুরু করে
উন্মাদ,ভয়ঙ্কর,নিষ্ঠুর,অর্ধশিক্ষিত,
নির্লজ্জ,
অহংকারী,
চোর,
ডাকাত,
বুড়ো
খোকা,ধেরে
খোকা,
উদ্ধত,
প্রতিহিংসাপরায়ণ
,দাঙ্গাবাজ,
রাবণের
মতো অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ
করে কখনো বলছেন কান ধরে উঠবোস
করাবেন,কাদামাটি-ষ্টোনচিপসের
দাঁতভাঙ্গা মিষ্টি খাওয়াবেন
আবার কখনো বলছেন গণতন্ত্রের
থাপ্পর মারবেন।মুখে সদাসর্বদা
খিস্তি খেউর করলে কি হবে তিনিই
যে  বাংলার ও বাঙালির কৃষ্টি
সংস্কৃতি,
কালচার
,হেরিটেজের
একমাত্র রক্ষাকর্তা এটা কিন্তু
জানাতে কখনো ভুল করেণ না।।ছবি
আঁকা ,
কবিতা
রচনা,লেখালিখি,ঘটা
করে মনীষীদের জন্মদিন পালন,
সরকারী
খরচে মনীষীদের পাশে নিজের
ছবি ছাপানো কোনটাতে  তিনি
নেই।বিদ্যাসাগরের মুর্তি
ভাঙার মতো বেদনা দায়ক কাজের
নিন্দা সবাই করছে।সবাই চায়
দুস্কৃতিদের শাস্তি হোক।কিন্তু
বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভাঙা
নিয়ে 'সংস্কৃতিপ্রেমী'
মুখ্যমন্ত্রীর
চোখে এখন ঘুম নেই।বলে চলেছেন
বিজেপি  বিদ্যাসাগরের মুর্তি
ভেঙেছে।সুতরাং সব ভোট মুর্তির
রক্ষক তৃণমূল কংগ্রেসকে
বিজেপিকে একটিও নয়।মুর্তি
ভাঙা নিয়ে নেত্রীর বাজার গরম
করার ধরণ দেখে অনেকেই বলছে
ভাগ্যিস দুস্কৃতিদের মাথায়
 মুর্তি ভাঙার আইডিয়াটা এসেছিল
না হলে শেষ সময়ে ভোটের বাজারটা
এতটা গরম হতোই না।কিন্তু
সংবিধানের ৩২৪ ধারা প্রয়োগ
করে নির্বাচন কমিশন প্রচারের
সময় কমিয়ে এনে পরিবেশটা ঠান্ডা
করে দিল।স্বাধীন ভারতে প্রথমবার
এমন ঘটনা ঘটল।আইন শৃঙ্খলার
বিচারে কমিশন পশ্চিমবঙ্গ কে
জম্মু কাশ্মীরের  পিছনের
সারিতে ঠেলে দিলো।পশ্চিমবঙ্গের
বর্তমান অবস্থা দেখলে এটাই
মনে হয়ে বেঁচে
থাকলে ঈশ্বরচন্দ্র
বিদ্যাসাগর
হয়তো
নিজেই নিজের মুর্তিটা সরিয়ে
নিতেন।
  
প্রশাসনিক
মেশিনারী
ব্যবহার করে খোদ রাজ্য সরকারের
বিরুদ্ধে হিংসায় মদত দান,
ভয়
ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরীর অভিযোগ
উঠছে।বলাই বাহুল্য রাজ্যটির
নাম তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত
পশ্চিমবঙ্গ।বিশেষ পর্যবেক্ষক
অজয় ভি নায়েকের মতে ১০/১৫
বছর আগে বিহারে এরকম পরিস্থিতি
ছিল ।তখন ঐ রাজ্যেও নির্বাচনের
সময় সবাই কেন্দ্রীয় বাহিনী
মোতায়েনের দাবি
তুলতো।শুধু মাত্র নির্বাচন
ভিত্তিক বিশ্লেষণ
করলে বিশেষ পর্যবেক্ষকের
বক্তব্যে কোন ভুল নেই । তবে
সামগ্রিক পরিস্থিতি
বিশ্লেষণ
করলে
বলতে হবে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান
অবস্থা সুরাবর্দী শাসিত ৪৬
সালের অবিভক্ত বাংলার  মতো।অথবা
আটের দশকের ফারুক আবদুল্লা
শাসিত কাশ্মীরের মতো।সে সময়
ফারুক আবদুল্লার মদতে জম্মু
কাশ্মীর সরকার এমন ভয় ও আতঙ্কের
পরিবেশ তৈরী করেছিল যে  ভুমিপুত্র
কাশ্মীরী পন্ডিতদের ভিটে
ছাড়া হতে হয়েছে,
নৃশংস
ভাবে
খুন হতে হয়েছে,
মা
বোনদের ধর্ষিতা হতে হয়েছে।
  
এরকম
মনে হতে পারে নির্বাচন একটি
রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ,এই
সময়  অনেক ঘটনাই ঘটে ।এই সমস্ত
ঘটনাকে দেশভাগের  বা কাশ্মীর
পরিস্থিতির সাথে তুলনা করা
 কি বাড়াবাড়ি নয়?ঠান্ডা
ঘরে বসে যারা লেখালিখি করেণ
তাদের কাছে এই ধরণের তুলনা
বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে।কিন্তু
বাস্তবের মাটিতে নেমে এলে
দেখা যাবে ইসলামিক কট্টরপন্থীরা
এবার কোন ইসলামিক সংগঠন বা
মুসলিম লিগের পতাকা নয় মূলস্রোতের
রাজনৈতিক দলের পতাকা নিয়ে
মুসলমানদের সংঘবদ্ধ ভোটদানের
জন্য সক্রিয় ভাবে প্রচার করেছে
আবার যেখানে ক্ষমতায় কুলিয়েছে
সেখানেই হিন্দুদের ভোট দানে
বাধা দিয়েছে।
    
  দেশ
ভাগের সময়  সিলেট জেলার ভাগ্য
নির্ধারণের জন্য যে নির্বাচন
হয়ে ছিল তাতেও ঠিক এই ধরণের
সাম্প্রদায়িক তান্ডব চোখে
পড়েছিল।সে সময় হিন্দু সংখ্যা
গরিষ্ঠ প্রদেশ গুলিতে কোন
মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ জেলা
থাকলে তার ভাগ্য নির্ধারণের
জন্য গণ ভোটের দাবি উঠেনি।
একমাত্র ব্যাতিক্রম সিলেট
জেলা। জিন্না পন্থীরা দাবি
তুললেন সিলেটের ভাগ্য নির্ধারণে
গণভোট নিতে হবে। অসমের তৎকালীন
কংগ্রেস নেতৃত্ব সেই দাবি
মেনে নিলেন।ঠিক হয় ১৯৪৭ সালের
৬ও ৭ জুলাই গণ ভোট হবে।এই ভোটকে
কেন্দ্র করে মুসলিম লীগের
গুন্ডারা দাঙ্গা বাধিযে এমন
ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি
করল যে ভারতের পক্ষের ভোটদাতারা
পোলিং স্টেশনেই পৌছুতেই পারলেন
না।ভোটের দুই দিন সমগ্র সিলেট
জুরে মুসলিম গুন্ডারা অবাধ
রাজত্ব চালালেও কংগ্রেস নেতা
গোপীনাথ বরদলুই  নেতৃত্বাধীন
প্রদেশিক সরকারের প্রশাসন
ছিল নির্বাক দর্শক।  সিলেটের
দুই লক্ষ চা শ্রমিক যারা অসম
বিধান পরিষদের নির্বাচনে ভোট
দিয়েছে মুসলিম লীগের পক্ষ
থেকে তাদের তাদের ভোট দান থেকে
বঞ্চিত রাখার দাবীও মেনে নেওয়া
হল।এক্ষেত্রে মুসলিম লীগের
যুক্তি ছিল যে  চা শ্রমিকরা
ভাসমান
নাগরিক সিলেটের ভাগ্য নির্ধারণে
তাদের ভুমিকা থাকতে পারে
না।সেদিনের সেই প্রহসনের
গণভোটে ৫৫,৫৭৮
ভোটের ব্যাবধানে সিলেট
পাকিস্তানে
চলে গেল।সিলেটের পাশ্ববর্তী
জেলা মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ
 কাছারে তখন মুসলিম গুন্ডাদের
বলতে শোনা যেত 'সিলেট
নিলাম গণভোটে,
কাছার
নিমু লাঠির চোটে।'
বলা
যায় এবারের লোক সভায় একটি মহড়া
হয়ে গেল ।এই মহড়া সফল হয়ে গেলে
নিশ্চিত ভাবে বলা যা আগামী
দিনে পশ্চিমবঙ্গকে ভয়াবহ
পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে
হবে। 
    
     প্রথম
দুই পর্বের নির্বাচনে প্রত্যক্ষ
ভাবে জনজাগরণের কাজ  ও ভোটকর্মী
 হিসেবে যুক্ত থাকার সুবাদে
যে সমস্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে
আমার মনে হয়েছে যে এই নির্বাচন
উপলক্ষে উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি
 শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য নয়
সমস্ত দেশের জন্যই এক
অশনিসংঙ্কেত।এবার  ভোটের
দামামা বেজে উঠার সাথে সাথেই
এবার   হিন্দু মুসলিম মেরুকরণের
চিত্র স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে
। কোচবিহার ,
জলপাইগুড়ি,আলিপুরদুয়ার
,
দার্জিলিং,রায়গঞ্জ,উত্তর
ও দক্ষিণ মালদা  লোকসভা আসন
গুলির  প্রচার পর্বে যে বিষয়টি
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে তা
হল কিছু ব্যতিক্রম বাদে  হিন্দু
জনবসতি  গুলি সেজে উঠে ছিল
বিজেপির ফ্ল্যাগ ফেস্টুনে
ও মুসলিম মহল্লাগুলি তৃণমূলের।নমাজ
সেরে  মসজিদ থেকে বেড়িয়ে হোক
কিংবা তৃণমূলের পতাকা হাতে
নিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক প্রচারে
হোক'
মুসলিমদের
অস্তিত্ব রক্ষার্থে  বিজেপিকে
একটি ভোট নয় ,কোন
ধর্মপ্রাণ মুসলিম বিজেপিকে
ভোট দিতে পারে না ,
এক
শ্রেণির মুসলিম সর্বশক্তি
দিয়ে এই ধরণের প্রচার চালিয়েছে।
পাড়ায় পাড়ায়  গিয়ে হিন্দু
ভোটারদের শাসানো হয়েছে তারা
যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়।শাসানি
অগ্রাহ্য করে যে সমস্ত এলাকায়
হিন্দুরা ভোট দিতে গেছে সেখানে
বোমা পড়েছে  গুলি চলেছে।সংবাদ
মাধ্যমের দৌলতে এরকম দু চারটে
 ঘটনা সর্বসমক্ষে এসেছে।যেমন
প্রথম দফায় কোচবিহার লোকসভার
শীতলখুচি,
দিনহাটার
বিধানসভা এলাকায় অনেক বুথে
 হিন্দুরা  ভোট দিতে যেতে সাহস
পায়নি। একদিকে নির্বাচন কমিশন
বুথ রক্ষা চ্যলেঞ্জ হিসেবে
নিয়েছে অন্য দিকে  তৃণমূল
কংগ্রেসের পতাকা হাতে নিয়ে
মুসলিম দুস্কৃতীরা এলাকা দখল
করতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে।লোকসভা
নির্বাচনের আগে আমজনতা অনেক
আশা করেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী
আসবে,
প্রত্যেকটি
এলাকায রুট মার্চ করে মানুষের
আস্থা ফেরাবে ।কিন্তু বাস্তবে
দেখা গেল রুট মার্চ তো দুরের
কথা ভোটের দিনও প্রত্যেকটি
বুথেও কেন্দ্রীয় বাহিনী
মোতায়েন হলো না।তবে যেখানই
সুযোগ পেয়েছে মানুষ লাইনে
দাড়িয়ে সেখানেই ভোট দিয়েছে।
    
       সমগ্র
ভারতেই লোকসভা নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।নির্বাচনী
হিংসা ,
বুথদখল
,ছাপ্পাভোট
ও অনিয়মের অভিযোগে ইতি মধ্যেই
 পশ্চিমবঙ্গ ব্যতিক্রমি রাজ্য
হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।পঞ্চায়েত
নির্বাচনের সময় অবাধ এবং
নিরবিচ্ছিন্ন ছাপ্পা প্রদানের
জন্য তৃণমূলী লুম্ফেন ও  বুথের
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা
উর্দিপড়া পুলিশের  যৌথ বাহিনী
এমন  তান্ডব চালিয়েছে যে  আম
জনতা বুথ
মুখো হতে পারেনি। স্থানীয়রা
প্রতিরোধ
গড়ে কোথাও ভোট করালেও গণণা
কেন্দ্রে ছাপ্পা চালিয়ে ফলাফল
পাল্টে দেওয়া হয়েছে।যারাই
এই অনাচারের প্রতিবাদ করেছে
তাদের মিথ্যে মামলায় ফাসনো
থেকে শুরু করে নানা ভাবে হেনস্থা
করা হযেছে।ছাপ্পার প্রতিবাদ
করায় রাজ কুমার রায় নামে এক
প্রিসাইডিং অফিসারকে প্রাণ
দিতে হয়েছে।ফলে এবার লোকসভা
নির্বাচন ঘোষনা হওয়ার সাথে
সাথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবীতে
উত্তাল হয়েছে সমস্ত রাজ্য।লোকসভা
নির্বাচনে ভোটকর্মী প্রশিক্ষণ
কেন্দ্রগুলিতে শিক্ষক অধ্যাপক
সরকারী কর্মচারীরা বুথের
নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর
দাবিতে সোচ্চর হয়েছে।আওয়াজ
উঠেছে কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার
চাইনা হতে রাজকুমার,ওই
ওয়ান্ট সেন্ট্রাল ফোর্স।অনেক
জায়গায় ভোটকর্মীরা অবস্থান
আন্দোলন ,পথঅবরোধ
,গণস্বাক্ষর
সংগ্রহের মতো আন্দোলনেও সামিল
হয়েছে।প্রতিবাদের ভাষায় ফুটে
উঠে ছিল রাজ্য প্রশাসন,
রাজ্য
পুলিশের তীব্র উপর অনাস্থার
ছাপ।
    
 গত
১৮ এপ্রিল  দ্বিতীয় দফা ভোটে
রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের
বেশ কিছু বুথে রাজ্য পুলিশ
দিয়ে ভোট নয় বলে গ্রামবাসীরা
ভোট কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদের
বুথে প্রবেশ করতে দেয় নি।অবশেষে
গ্রাবাসীদের দাবী মেনে 
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের
করিয়েই ভোট করাতে হয়েছে।দ্বিতীয়
দফায় দার্জিলিং লোকসভার চোপড়ার
কোটগাছ ,দিঘি
কলোনী বুথ এলাকায় বোমাবাজী,শুন্যে
গুলিচালনা ,ভোট
দিতে ব্যার্থ ভোটার দের পথ
অবরোধ ঘটনা,রায়গঞ্জ
লোকসভা কেন্দ্রের ইসলামপুর
বিধানসভার  কয়েকটি বুথে ভোটারদের
ভোট দানে বাধাদান কে ঘিরে তৈরী
হওয়া উত্তেজনার দৃশ্য মানুষ
দেখেছে।রায়গঞ্জ কেন্দ্রের
ইসলামপুর বিধান সভা ক্ষেত্রের
আগডিমটিখন্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের
২৪টি বুথেই এদিন আবাধ ছাপ্পা
চালিয়েছে শাসক তৃণমূল। অনেকের
মতে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়
রিগিং ছাপ্পার দৃশ্য যতটা
ধরা পড়েছে বা প্রিন্ট মিডিয়ার
প্রতিবেদনে যতটা রিপোর্টিং
হয়েছে সেটা হিমশৈলের চুড়া
মাত্র।১১ এপ্রিল  প্রথম দফাতেও
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের
শীতলখুচী ,সিতাই
ও দিনহাটা বিধানসভা সভায় অনেক
বুথেই রিগিং ছাপ্পার ঘটনা
ঘটেছে।প্রথমদফায  ভোট কর্মীদের
আলাপচারিতায়  রিগিং ছাপ্পার
যত ঘটনা শোনা গেছে সংবাদ মাধ্যমে
তার সিকি ভাগও আসেনি।  
    
প্রশ্ন
হচ্ছে এরাজ্যে পঞ্চায়েত
নির্বাচনের এতটা তিক্ত অভিজ্ঞতা
থাকা সত্বেও লোকসভা নির্বাচনে
সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি
হল কেন?কেনই
বা বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষেক
বললেন কোন রাজ্যের প্রতিটি
বুথ সেন্সেটিভ হতে পারে না।বুথ
সেন্সেটিভিটি নিয়ে এমন তালিকা
করা তৈরী হল যে প্রথম দফায ষাট
শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী
আর চল্লিশ শতাংশ বুথে রাজ্য
পুলিশ। প্রথম দুই দফা ভোটের
অভিজ্ঞতা থেকে আমজনতা বলছে
পঞ্চায়েতে যে সমস্ত বুথে বেশি
গোলমাল হয়েছে অর্থাৎ যে সমস্ত
এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস 
শক্তিশালী  সে গুলিতেই রাজ্য
পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।যে
সমস্ত বুথে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন
ছিল সে গুলির অধিকাংশতেই 
করানো হয়েছে  ছাপ্পা ভোট অথবা
ইভিএমের সামনে দাড়িয়ে ভোট
করানোর ঘটনা।যে সমস্ত এলাকায়
তৃণমূল কংগ্রেস দুর্বল সেই
সমস্ত বুথে নিযুক্ত হয়েছে
কেন্দ্রীয় বাহিনী।প্রথম ও
দ্বিতীয়  পর্যায়ে
সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা করেই
বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে।এর
থেকে স্পষ্ট যে এই তালিকা
রাজ্য প্রশাসনের মদতে  তৃণমূল
কংগ্রেসের রিগিং মেশিনারীর
তত্ত্ববধানেই  তৈরী হয়েছে।প্রথম
দফায় নির্বাচনের একদিন আগে
জেলা পুলিশ সুপার কে সরানো
হয়েছে ঠিকই তবে ফোর্স ডিপ্লয়মেন্ট
তালিকার কোন পরিবর্তন হয়েছে
এমনটা কারো মনে হয় নি। প্রশ্ন
হচ্ছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা
নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত
ডিএম এসপিদের এই ধরণের ঘৃন্য
কাজের খোঁজ পেলেন না,
নাকি
সর্ষেতেই ভুত।এই সমস্ত বিষয়ই
বিষদ তদন্তের দাবি রাখে।তবে
একটি মত কিন্তু উঠে আসছে তা
হল এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন
ছাড়া মমতা নেতৃত্বাধীন
তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতায় রেখে
 কোন ভাবেই সুষ্ঠ
নির্বাচন সম্ভব নয়। 
    
       ২০১৪
সালের তুলনায় সমস্ত ভারতেই
ভোট পড়ার  হার কম।কিন্তু
ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ।তৃতীয়
দফায় সারা দেশে গড়ে ৬৪.৬৬
শতাংশ ভোট পড়েছে।এই জাতীয়
গড়কে ছাপিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ভোট
পড়ছে ৭৮.৯৮
শতাংশ।অতীতেও দেখা গেছে
ভোটপড়ার  উচ্চহার  সাধারণত
বড় ধরণের রাজনৈতিক পরিবর্তনের
সূচনা করে ।যেমন ২০১৪ সালের
লোকসভায় ভোট পড়ার উচ্চহার বড়
পরিবর্তন ঘটিয়ে ছিল। সব মিলে
বলা যায় পশ্চিমবঙ্গে এবারের
ভোটকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনা
ও ভোট পড়ার উচ্চহার  যে এরাজ্যে
বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিতবাহী
এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। #
                                        
                          সাধন
কুমার পাল

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন