সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিশ্বরাজনীতির ধারা বলছে উনিশের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত


                                                                                

       গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত নির্বাচনের ফলাফল বলছে পঞ্চম বারের জন্য ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু। সম্প্রতি স্থানীয় নির্বাচনে বেশ কিছু জায়গায় খারাপ ফলও করে তাঁর দল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, আদৌ এ বার তিনি ফিরতে পারবেন কি না। শেষ পর্যন্ত যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কট্টর দক্ষিণপন্থী বলে চিন্হিত বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর প্রত্যাবর্তনই দেখ ইজরায়েল।বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে গত এক দশক ধরে দক্ষিণপন্থার দিকে বিশ্ব রাজনীতির মোড় নেবার ঘটনা ঘটছে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ব্রেক্সিট ভোটে দক্ষিণপন্থী সমাবেশে, মার্কিন শাসকশ্রেণির সবচেয়ে দক্ষিণপন্থ নেতা হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি পদে জয়লাভে।ট্রাম্পের জয়ের পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদী দক্ষিণপন্থী বলে চিন্হিত দলগুলি জেগে উঠেছে। নির্বাচনে সাফল্য পা‍‌চ্ছে। সরকার গঠন করছে। যেখানে জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসতে পারছে না, সেখানে তাদের জনসমর্থন বাড়ছে। কোথাও কোথাও সমর্থন বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, হল্যান্ড, সুইডেন, ইউ কে— এসব দেশে ক্রমশই বাড়ছে দক্ষিণপন্থার পক্ষে, জাতীয়তাবাদের পক্ষে জনসমর্থন।২০১৪ সালে দীর্ঘ ৩০ বছর পর একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন বিশ্বরাজনীতির এই ধারারই প্রতিফলন। বিশ্বরাজনীতির এই ধারা বলছে, ২০১৯এর নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যাবর্তন যে ঘটছে এব্যাপারে তেমন কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।পরাজিত হওয়ার সম্ভবনা যুক্ত কোন রাষ্ট্রপ্রধান কে কেউ পুরস্কৃত করে না। নির্বাচনের মুখে রাশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমীর শাহীর তরফে নরেন্দ্র মোদীকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান প্রদানের ঘটনা যে এই ধরণের ভবিষ্যত বাণীর ফসল এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
দেশে দেশে জাতীয়তাবাদের এই উত্থানের ভিন্ন ভিন্ন কারণ ও প্রেক্ষাপট অবশ্যই আছে। ভারতের ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদের এই উত্থানের কিছু কিছু দিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষন করা প্রয়োজন।
ডিজিটাল দুনিয়ায় হ্যাকিংএকটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। হ্যাকাররা মূলত কোন সিকিউরিটি সিষ্টেমের ত্রুটি গুলি বের করে দ্রুত ঐ ত্রুটি কে নিজের কাজে লাগায়।বিভিন্ন ভাইরাস ছড়িয়ে ঐ সিষ্টেমকে নষ্ট করে দেয়।ঐ সিষ্টেমের অধীনে যে সমস্ত সাবসিষ্টেম রয়েছে সে গুলিতেও ঢুকে মূল ব্যাবস্থাটিকে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রয়াস করে।এই হ্যকিংএর ধারণার উদ্ভাবক কে এটা গবেষণার বিষয় হতে পারে ।তবে কম্পিউটারের জন্মের অনেক আগেই বিশ্বের সুপার পাওয়ার গুলি ওদের নজরে আসা কোন দেশ বা সমাজ কে বাগে আনার জন্য যে পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করতো সেটি আধুনিক যুগের হ্যাকারদের সাথে হুবহু মিলে যায়।কোন দেশ বা সমাজ কে বাগে আনার কৌশল হিসেবে প্রথমে সেই দেশ বা সমাজের দারিদ্র, বেকারি, ছুয়াছুতের মতো দুর্বলতা গুলিকে কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট সমাজের কিছু মানুষ কে মগজ ধোলাই করে অর্থ, যশ, মান, প্রতিপত্তির, ফাঁদে ফেলে ওদের দিয়েই বিচ্ছিন্নতাবদী কিংবা সাম্যবাদী আন্দোলন সংগঠিত করে সেই স্থানের নিজস্ব ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাবস্থা গুলিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।এর পর আকর্ষনিয় মোড়কে জড়ানো কোন একটি 'ইজম' চাপিয়ে দিয়ে সেই সমাজকে সম্পুর্ণ ভাবে নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে এসে স্বার্থ সিদ্ধি করা হয়।ডিজিটাল হ্যাকিং সাম্প্রতিক সময়ের সমস্যা হলেও ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক হ্যাকিং এর সমস্যা বহু পুরুনো।
শুরুটা বোধহয় ব্রিটেনই করে ছিল।তখন বুর্জোয়া ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন বিশ্বের নম্বর ওয়ান মহাশক্তি।নিজের জন্মভুমি জার্মান থেকে বিতাড়িত মার্কস সাহেবকে নিজেদের দেশে আশ্রয় দিয়ে এই ব্রিটেনই বিশ্বজুরে বুর্জোয়া ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদী ব্যাবস্থা বিনাশের মহামন্ত্র মার্কসবাদ প্রচার প্রসারের আয়োজন করে ছিল।ফলে ১৮৪৮ সালে প্রকাশিত কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলসের লেখা মহাগ্রন্থ 'কমুউনিষ্ঠ মেনিফেষ্টো' হয়ে উঠে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক বিক্রিত বই।এই বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় এশিয়া লাতিন আমেরিকা সহ বিশ্বের সমস্যা জর্জরিত দেশ গুলিতে।নিজেদের বানিজ্যিক স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্য নিয়েই ব্রিটেন এই কাজে সহযোগিতা করেছিল।কারণ এই মতবাদের প্রভাবে কোন দেশের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠমো কে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার লক্ষ্যে 'বিপ্লব' নামক গৃহয়ুদ্ধ যত জমজমাট হবে ব্রিটেনের অস্ত্রের কারবারও তত ফুলেফেপে উঠবে।ইতিহাস বলছে ব্রিটেন মার্কস সাহেবের সৃষ্টিকে সফল ভাবে হ্যাকিংএর কাজে লাগালেও নিজেদের দেশের মাটিতে এর একটি বীজও পড়তে দেয়নি। বর্তমানে ব্রিটেন সহ ইউরোপিয়ান মহাশক্তি গুলির সেই সাম্রাজ্য না থাকলেও এক সময় ওদের উপনিবেশ থাকা দেশ গুলিতে প্রভাব বজায় রাখার জন্য সেই হ্যাকিং পলিসি এখনো অপরিবর্তিতই রেখে দিয়েছে। বিশ্বজুরে কমিউনিষ্ঠ পার্টি গুলি এখন বিলুপ্তির পথে । সাম্রাজ্যবাদী হ্যাকাররা এখন খ্রীষ্টান মিশনারী ,বিভিন্ন জেহাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং ভারতের কংগ্রেসের মতো তথাকথিত উদারবাদী দল গুলিকে ব্যাবহার করছে। ফলে মানুষ ফুসে উঠছে এই সমস্ত 'উদারবাদী' দল গুলির বিরুদ্ধে।তারই প্রতিফলন ঘটছে নির্বাচন গুলিতে।
প্রথমে একটি ছোট দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যেতে পারে। গত ১২ আগষ্ট ২০১৮ পাঞ্জাবের স্বাধীনতার জন্য গণভোটের দাবিতে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে বিপুল জনসমাবেশ হয়েছে ।২০২০ তে ওই গণভোটের দাবি জানিয়েছে খালিস্থানি 'শিখস ফর জাস্টিস 'সংগঠন।ওই সমাবেশে অংশ নেন বেশ কিছু কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাও।বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর ,এই সংগঠন এবং আন্দোলনে প্রত্যক্ষ সহায়তা করছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। নয়াদিল্লি বারবার লিখিত এবং মৌখিক অনুরোধ করা সত্বেও টেরেসা মে সরকার নিষিদ্ধ করেনি সরাসরি ভারত বিরোধী এই সমাবেশটিকে।আই এস আই খালিস্থানী নেতাদের উস্কানি দিয়ে কানাডা এবং ব্রিটেনে বসবাসকারী শিখ সম্প্রদায়কে ভারত-বিরোধীতার কাজে লাগাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর ,খালিস্থানি জঙ্গিরা বিদেশে আবার একজোট হওয়ার চেষ্ঠা করছে।আশির দশকের মতো তারা আবার পাঞ্জাবে অশান্তি তৈরী করতে পারে ।খালিস্থানি উগ্রপন্থীরা সংযুক্ত আরব আমির শাহিতে ঘাঁটি তৈরি করে একজোট হওয়ার চেষ্ঠা চালাচ্ছে।গোয়েন্দাদের দাবি ,আমির শাহির এক নামকরা শুটিং ক্লাবের সঙ্গে এই সমস্ত জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে।পাঞ্জাবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিকে হত্যা ও বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে হামলার জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে ওই সমস্ত জঙ্গিকে।গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএর দাবি খালিস্থানি জঙ্গিরা পাঞ্জাবে আরএসএস নেতাদের টার্গেট করেছে। গত বছর এনআইএর কয়েকজন খালিস্থানী জঙ্গি সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় ।তারা লুধিয়ানার এক সঙ্ঘ কার্যকর্তা খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এনআইএর দাবি, ওই দুজনকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল পাকিস্থান, ফ্রান্স,ইতালি,ব্রিটেন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে। ওই চার্জশিটে বলা হয় অভিযুক্ত হরমিত সিং ,গুজন্ত সিং ধিঁলো পাকিস্থান,ইতালি,ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারে।
পশ্চিমি মহাশক্তি ও চার্চ সংগঠন গুলি যে ভারতের মতো দেশ যেখানে এক সময় ওরা উপনিবেশ স্থাপন করে ছিল সেই সমস্ত দেশে বিচ্চিন্নতাবদী শক্তিগুলির মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে ওই সমস্ত দেশে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কৌশল নিয়ে চলছে এই দৃষ্টান্ত ধরণের থেকে তা স্পষ্ট বোঝা যায়।
২০০৮ সালে তহেলকা পত্রিকার সম্পাদক তরুন তেজপাল কে আমেরিকায় অবস্থিত ইন্ডিয়ান মুসলিম কাউন্সিলের বার্ষিক সাধারণ সভায় বীজ ভাষন দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরপর একটি লেখায় তরুন তেজপাল চার্চ সংগঠন, মাওবাদী গ্যাং ও ইসলামিক জেহাদী গোষ্ঠী গুলির ক্রিয়াকলাপের উপর আলোকপাত করেছিলেন ।সে সময় অর্থাৎ ২০০৮ সালে ওয়ালর্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের সাত বছর পর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে।পশ্চিম এশিয়ার জেহাদি দেশগুলির সাথে যুদ্ধরত আমেরিকা ইসলামের এক নম্বর শত্রু বলে চিহ্নিত।এই পরিস্থিতিতেও আমেরিকায় ভারতে অস্থিরতা তৈরীর লক্ষ্যে বামপন্থী ও জেহাদী তৈরীর কর্মসূচীতে এতটুকু ঢিলেমি আসেনি। ভারত বিরোধী জেহাদি সমর্থক আমেরিকা নিবাসী ও স্কলারশিপের নামে আমেরিকান অর্থে লালিত পালিত বামপন্থী অঙ্গনা চাটার্জী কে ইন্ডিয়ান মুসলিম কাউন্সিলের মাধ্যমে টিপু সুলতান পুরস্কার প্রদানের ঘটনা এই বক্ত্যবের সপক্ষে বড়ো প্রমান। এই অনুষ্ঠানে গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে মিথ্যাচার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের অপরাধে সুপ্রিম কোর্টে সাজা প্রাপ্ত ও ২৬/১১ মুম্বই হামলায় পুলিশ নির্দোষ মুসলিম যুবকদের হেনস্থা করছে বলে পাকিস্থানী সন্ত্রাসবাদীদের পাশে দাড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত তিস্তা শীতলাবাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার রেডিকেল মুসলিম গ্রুপ ও ভারত বিরোধী আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্যরা । মোট কথা আমেরিকা ও ইউরোপের এমন অনেক সংস্থা আছে যারা বছর ভর কোন না কোন ভারত বিরোধী ক্রিয়াকলাপ চালাতেই থাকে।
ভারতকে বিশ্বের কাছে হেয় হতে হয় আমেরিকা ও ইউরোপে এ রকম ঘটনা নিরন্তর ঘটছে।একটু লক্ষ করলেই বোঝা যাবে শুধু ভারতেই নয় পৃথিবীর যে ১২৫-১৫০ টি দেশে ইউরোপীয় উপনিবেশ ছিল সেই সমস্ত দেশের প্রত্যেকটিতেই এরকম ঘটনা ঘটছে । এই সমস্ত ঘটনার প্রত্যেকটির পেছনেই রয়েছে ' ডিভাইড, রুল এন্ড লুটের' সেই পুরোনো নীতি যার উপর ভিত্তি করে এক সময় ঔপনিবেশিক শাসকেরা নিজেদের অধিপত্য বজায় রাখতো।সেই একই নীতি অবলম্বন করে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরও ঐ সমস্ত দেশগুলি থেকে প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ লুট ও অর্থনৈতিক শোষনের ধারা এখনো অব্যাহত। এই দেশ গুলি কিন্তু আজ পর্যন্ত সংগঠিত ভাবে এই ষড়য়ন্ত্রের মোকাবিলা করতে পারে নি। কারণ এই দেশ গুলিও কে বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে লড়িয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করে রাখা হয়েছে। যেমন,মুসলিম লীগ কে সমানে রেখে ইসলামিক শক্তিকে প্রশ্রয় ও মদত দিয়ে দেশভাগ করানো এবং ভাগ হয়ে যাওয়ার পর ভারত ও পাকিস্থানকে নিজেদের মধ্যে নিরন্তর লড়াই লাগিয়ে রাখার জন্য কাশ্মীর ইস্যু তৈরী করে দেওয়া হয়েছে।ঐতিহাসিক ঘটনাক্রম ভালোভাবে বিশ্লেষন করলে স্পষ্ট হবে যে স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল হিসেবে লর্ড মাউন্টব্যাটেন সরকারের সর্বোচ্চ পদে বসে থেকে অত্যন্ত নিপুন ভাবে কাশ্মীর নামক অগ্নিবলয় তৈরী করে দিয়ে গেছেন। এক্ষেত্রেও কর্মপরিকল্পনা লর্ড মাউন্টব্যাটেনের হলেও কর্ম সম্পাদন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর হাত দিয়েই হয়েছে।
২০০১ সালে ডার্বানে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের হিউম্যান রাইটস কনফারেন্স এর বিষয় বস্তু ছিল রেসিজম, রেসিয়াল ডিস্ক্রিমিনেশন, জোনোফোবিয়া এন্ড রিলেটেড ইনটলারেন্স। এই সম্মেলনে ভারতকে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে তুলে ধরার ষড়য়ন্ত্র রচিত হয়ে ছিল।এই ডার্বান পরিষদে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে দলিত ও দ্রাবিড় ইস্যু তুলে ধরা হয়েছিল।ভারত সরকারের আপত্তি সত্বেও ভারত সম্পর্কে এই ধরণের বিষয় বছরের পর বছর ধরে অান্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা হচ্ছে। এই ধরণের সংগঠন এখনো বিশেষ বিশেষ দেশের গায়ে কলঙ্ক লেপনের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই ধরণের বিষয় উত্থাপন করে থাকে। ২০০১ সালে এই ধরণের বিষয় উত্থাপনের আরেকটি প্রেক্ষাপট হলো এই সময় কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার ক্ষমতাসীন।তখন কংগ্রেসের লুপ্তপ্রায় অবস্থা।নতুন সরকার যাতে নতুন ভাবনা নিয়ে এগোতে না পারে সেজন্যই ভারত সম্পর্কে এই ধরণের হেট প্রোপাগান্ডার আয়োজন। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আবার সেই অসহিষ্ণুতার ইস্যু কে খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিষয়টি এমন ভাবে তুলে ধরা হলো যে পুরস্কার ত্যাগের হিড়িক পড়ে গেল।
ডার্বান সম্মেলনকে কে সামনে রেখে দলিত ও দ্রাবিড় বিষয় দুটো আন্তর্জাতিক স্তরে এমন ভাবে তুলে ধরার প্রয়াস করা হয় যেন অসহিষ্ণুতা নিপিড়নের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দেশের তরফে ভারতে নানা রকম নিষেধাজ্ঞার জারি করতে শুরু করে।দ্রাবিড় ইস্যু কে তুলে ধরতে তিনটি সংগঠনকে কাজে লাগানো হয়ে ছিল যার মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ সামিল হয়েছিল।দলিত ইস্যু তুলে ধরার জন্য লুথেরান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন জেনেভা,ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অফ চার্চেজ,আমেরিকার ইভানজেলিক্যাল লুথেরান চার্চকে সমস্ত রকম প্রস্তুতি করতে বলা হয়েছিল। অনুসন্ধান করে দেখা গেছে ২০০১ এর ডার্বান সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ১৯৯৮ সালে দলিত সলিডারিটি নেটওয়ার্ক গঠনের মধ্য দিয়ে। এই নেটওয়ার্কের প্রয়াসে ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশনাল দলিত সলিডারিটি নেটওয়ার্ক গঠিত হয়।যার প্রধান কার্যালয় স্থাপিত হয় ডেনমার্কের রাজধানী কোপেন হেগেনে।ওই সময় ২০০০ সালে তামিলনাড়ুতে দ্রাবিড় ইস্যু নিয়ে 'দ্রাবির ধর্ম জাতিভেদ নষ্ট করতে পারে' শীর্ষক সাধারণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্রাবিড়ধর্ম হিন্দুধর্ম থেকে পৃথক এই বিষয়টি তুলে ধরাই এই ধরণের আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য ।পরের বছর ডার্বানে ইউনাইটেড নেশনে এর তত্ত্বাবধানে আয়োজিত 'দেশ বিদেশে জাতি বিদ্বেষ জনিত অত্যাচার ' শীর্ষক আন্তর্জাতিক স্তরের আলোচনা সভায় 'ভারতই বিশ্বে জাতি বিদ্বেষের জননী' এই বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস করা হয়।২০০৪ সালে প্রকাশিত এক পুস্তিকায় দাবি করা হয় ভারত দ্রাবিড়-খ্রিষ্টান দেশ এবং খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরাই সংস্কৃত ভাষার সৃষ্টিকর্তা।এর পরের বছর এক প্রস্তাব আনা হয় যাতে বলা হয় দ্রাবিড় ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা ভারতে এক স্বতন্ত্র দেশের মানুষ হিসেবে বাস করে এবং এই মানুষদের নিয়ে স্বতন্ত্র গণরাজ্য স্থাপনের জন্য সমস্ত বিশ্বজুরে বিদ্রোহী আন্দোলন শুরু করা প্রয়োজন। এর জন্য বিশ্বের ৫০টিরও বেশি স্থানে বিভিন্ন সংস্থা তৈরী করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য প্রয়োজনে চরমপন্থার আশ্রয় নিতে হবে ।এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে এলটিটিইর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ আক্রমনের যোজনা বানানো হয়।শুরু হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সমর্থন জুটানোর প্রয়াস। এই লড়াইয়ে কম করে এক লক্ষের মতো মানুষের মৃত্যু হয়।২০০৬ সালে পোপের ভাষনেও এই বিষয়টি উঠে আসে ।
ইউরোপিয়ান মহাশক্তি গুলি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সমগ্র বিশ্বকে পদানত করে শাসন শোষন করেছে ।এখন সেই সাম্রাজ্য নেই তবুও ঘুর পথে হলেও সেই শাসন শোষনের ধারা বজায় রাখতে চাইছে। প্রশ্ন হচ্ছে মহাশক্তিগুলির এই সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার উৎস কোথায়?এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখতে হবে।বিজ্ঞান যত উন্নত হোক না কেন বিশ্বের মানব সভ্যতার ইতিহাস কিন্তু এখনো সেই রক্ষণশীল 'বংশতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের ' উপর নির্ভরশীল।এই সিদ্ধান্তের মূল কথা হল বর্তমান বিশ্বের বিস্তার জেনেসিসের নোহার গল্প অনুসারে তুর্কিস্থানের অরাবত পর্বত থেকে শুরু হয়েছে।বিশ্বের আশি শতাংশ বিদ্যালয়ে এই ইতিহাসই পড়ানো হচ্ছে।ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।যদিও তুর্কিস্থান ইউরোপের সীমান্ত লাগোয়া এশিয়াতে অবস্থিত ।তবুও ইউরোপের ইতিহাস জেনেসিস,বাইবেল,মোজেসএর ইতিহাসের উপর নির্ভরশীল। বিগত দেড়শো বছর ধরে সমগ্র বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় জগৎ ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয গুলির প্রভাবে প্রভাবিত।স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বের ইতিহাস ইউরোপের ইতিহাসের মূলগত ধারণা থেকে মুক্ত হতে পারে নি।যতক্ষণ পর্যন্ত না এই মূলগত ধারণা গুলিকে চ্যালেঞ্জ করা যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোন দেশের পক্ষেই নিজেদের প্রকৃত ইতিহাস অনুসন্ধান করা সম্ভব নয়।
বিগত চারশো-পাঁচশো বছর ধরে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ এলাকায় ইউরোপিয়ান আক্রমনকারীরা শাসনের নামে লুটপাট চালিয়েছে। প্রথম ২০০-৩০০ বছর লুটপাট,অত্যাচার চালানোর পর এই অন্যায়কে যুক্তি সঙ্গত করার জন্য ইতিহাস পরিবর্তনের কাজে হাত দিয়েছে।বিশ্বের ইতিহাস যে পুস্তক থেকে শুরু বলে দাবি করা হচ্ছে সেই জেনেসিস এর নোহার গল্প ইউরোপের মানুষদের বিশ্বজুরে লুটপাট করার নৈতিক অধিকার দিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ঔপনিবেশিক শাসকদের দ্বারা লিখিত এই লুটের ইতিহাস পরিবর্তনের কাজে হাত দিয়েছে।কিন্তু যে সমস্ত দেশে এখনো ইউরোপের কর্তৃত্ব বহাল রয়েছে বা যে সমস্ত দেশ এখনো ঔপনিবেশিক মাইন্ডসেট থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি সেই সমস্ত দেশ এখনো জেনেসিস ভিত্তিক ইতিহাস পরিবর্তন করে নিজস্ব ইতিহাস লেখার কথা ভাবতেই পারছে না।যেমন স্বাধীনতার সাত দশক পরও ভারত নিজস্ব ইতিহাস লেখার কথা ভেবে উঠতে পারছে না।'আর্যরা বাইরে থেকে এসেছে,দক্ষিণ ভারতের অনার্যরা আফ্রিকা থেকে এসেছে ' এই ঐতিহাসিক তত্ত্বের উৎসও জেনেসিসের সেই গল্প।সমগ্র বিশ্বই আজ ইতিহাস থেকে জেনেসিসের গল্প ছুড়ে ফেলে দিতে উদ্যোগি হয়েছে।কিন্তু সংগঠিত ভাবে এই প্রয়াস না হলে সাফল্য আসার সম্ভবনা কম।কারণ ভারত সহ বিশ্বের এক হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় বিগত ১৫০-২০০ বছর ধরে ঐ ইতিহাসকে কেন্দ্রে রেখেই নানা সংশোধন সংযোজন করেছে।
আর্য সভ্যতা ভারতেই সমৃদ্ধ হয়েছে , ভারতীয় ভাষাগুলির সৃজন ভারতেই হয়েছে এবং এতে সংস্কৃতের গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রয়েছে এটাই ভারতীয় সিদ্ধান্ত। ড: বাবাসাহেব আম্বেদকরও সংস্কৃত-সহ সমস্ত ভারতীয় ভাষার উৎপত্তি জেনেসিসের গল্পের টাওয়ার অফ বাবে( Tower of bable) থেকে হয়েছে এবং আর্যরা বাইরে থেকে এসেছে এই তত্ত্বের তীব্র বিরোধীতা করেছেন।স্বামী বিবেকানন্দের মতো ব্যক্তিত্বও তীব্র ভাবে এই তত্ত্বের বিরোধীতা করেছেন। কিন্ত বিগত সাত দশক ধরে ভারতের রাজনৈতিক দল গুলি নিজেদের রাজনৈতিক প্রয়োজনে স্বামীজী ও ড: আম্বেদকরকে ব্যাবহার করলেও ইতিহাস পুনর্লিখনে এই মনীষীদের ভাবনা কে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে নি।
বাইবেল ও জেনেসিস কে ভিত্তি করে কিভাবে সমগ্র বিশ্বকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে সেটি বুঝতে হলে সংক্ষেপে নোয়ার গল্পটি দেখে নেওয়া যেতে পারে।
একবার এক ভয়ঙ্কর বন্যা হয়ে ছিল।ঐ বন্যায় কেবল মাত্র নোয়া নামে একজন ব্যাক্তিই বেঁচেছিল।যার অর্থ সমগ্র বিশ্বের মানবজাতী নোয়ার বংশধর। নোয়ার তিন পুত্র ছিল।সাম, হাম ও জেফেথ।একবার হাম ওর পিতা নোয়াকে নেশা করে উলঙ্গ হয়ে পরে থাকতে দেখে হেসে ফেলে ।কিন্তু সাম ওর পিতাকে লজ্জা নিবারণের বস্ত্র দিয়ে ঢেকে দেয়।এতে নোয়া সামের ব্যাবহারে খুশি হয়ে হামকে অভিশাপ দেয় যে ওর গায়ের রঙ কালো বর্ণের হবে এবং দক্ষিণ দিকে গিয়ে বসবাস করবে । হামের পুত্ররা চিরকাল সামের পুত্রদের সেবা করবে।এই গল্পের পরিণাম এটা হয়েছে যে বিশ্ব জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি ভাগ আজ সেমেটিক,হেমেটিক এবং জেফেথেটিক নামে তিনটি অংশে বিভক্ত।ভারতে আর্যদের সামের বংশধর হিসেবে সেমেটিক, আফ্রিকার পথ ধরে দক্ষিণ ভারতে আসা অনার্যদের হামের বংজাত হেমেটিক বলে গণ্য করা হয়।ভারতে যাদের অনার্য, তামিল, দ্রাবিড় বলা হয় তদের হেমেটিক বলে চিহ্নিত করা হয়। ভারতের অন্য কোথাও সেমেটিক হেমেটিক বিভাজনের হদিশ পাওয়া না গেলেও তামিলনাড়ুতে মিশনারীরা দ্রাবিড়,তামিল ইস্যুতে বিভাজন রেখা সেমেটিক হেমেটিক পর্যন্ত প্রকট করে তুলেছে।
ভারতে সেমেটিক হেমেটিক থিরোরী গ্রহন যোগ্য করে তুলতে আর্য নামক একটি কাল্পনিক দলকে বাইরে থেকে প্রবেশ করাতে হয়েছে।শুধু ভারত নয় বিশ্বের অনেক দেশেই সেমেটিক হেমেটিক থিরোরী গ্রহন যোগ্য করে তুলতে কোন না কোন কাল্পনিক দলকে সেই দেশে প্রবেশ করাতে হয়েছে।যেমন আফ্রিকায় হেমেটিক ,দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় কিছু সেমেটিক কিছু হেমেটিকের বাইরে থেকে প্রবেশ করিয়ে ইতিহাস রচিত হয়েছে । তবে আধুনিক ' Y-ক্রমোজম সিদ্ধান্ত' আর্য-অনার্য, দক্ষিণ ভারতীয়-উত্তর ভারতীয় বিভাজনের মূলে আঘাত হেনে প্রমান করেছে যে এদের মধ্যে জিনগত কোন পার্থক্যই নেই।অর্থাৎ সমস্ত ভারতীয় একই পরস্পরা থেকেই বিস্তার লাভ করেছে।
আক্রমনকারীদের আক্রমনের ধরন নিয়েও সচেতন হওয়া জরুরী।সেবার আড়ালে ,শিক্ষা বিস্তারের আড়ালে, মানবিকতার আড়ালে কি ভাবে কোন দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা যায় সেটা মাদার টেরেসার মিশনারিজ অফ চ্যারিটি ,লুথেরান পন্থীদের ক্রিয়াকলাপের উপর নজর রাখলে স্পষ্ট হবে। ফলে নির্বাচন এলে ভারতের শত্রুরা নানা ভাবে যে জনমতকে প্রভাবিত করার প্রয়াস করে এটা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত।এবারের নির্বাচনে তথাকথিত উদারপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ দল গুলির দিকেই এই ভারতবিরোধী অপশক্তি গুলিরই সমর্থন থাকবে এটাই স্বাভাবিক।শুধু খ্রিষ্টান মিশনারিরা নয় জেহাদিদেরও আক্রমনের নানা কৌশল সম্পর্কে সচেতন থাকার প্রয়োজন আছে।স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর থেকে ভারতে কোন দিনই এই ধরণের অপশক্তির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই হয় নি ।লড়াইয়ের পথে প্রধান কাঁটা হয়ে দাড়িয়ে কংগ্রেসের মতো তথাকথিত সেকুলার উদারবাদী দলগুলি।ভারতের মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির মতো জাতীয়তাবাদী দলের সরকার কে যে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে দেখছে ২০১৪ এর নির্বাচনে তা প্রমান হয়ে গেছে। উনিশের নির্বাচনের ফলাফলে সেই প্রমানের পুনরাবৃত্তি হবে মাত্র।#
                                       সাধন কুমার পাল




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...