'চৌকিদার চোর হ্যায়' স্লোগানকে সম্বল করে রাহুল গান্ধী উনিশের নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়ে ছিলেন।১৯৮৯ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছিল বোফোর্স ঘুষ কেলেঙ্কারি।স্লোগান উঠেছিল 'অলিগলি মে শোর হ্যায় রাজিব গান্ধী চোর হ্যায়'।দেখতে দেখতে দেশের আনাচে কানাচে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল এই স্লোগান।শোচনীয় পরাজয় হয়েছিল কংগ্রেসের। রাজীব পুত্র রাহুল সেই ১৯৮৯ এর ফর্মূলা প্রয়োগ করতে চেয়ে ছিলেন ২০১৯-এর লোক সভা নির্বাচনে। ফ্রান্স থেকে রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার চুক্তিতে রাহুল গান্ধী ও তার দল কংগ্রেস কোন তথ্য প্রমান ছাড়াই দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন।স্লোগান তুললেন 'চৌকিদার চোর হ্যায়',' 'নরেন্দ্র মোদী চোর হ্যায়'। স্লোগানটিকে বিশ্বাস যোগ্য করে তুলতে রাহুল গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য কে অপব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন।
বিজেপি
নেত্রী মীনাক্ষী লেখির  আদালত
অবমাননার অভিযোগের ভিত্তিতে
সুপ্রিম কোর্ট নোটিশ পাঠায়।নোটিশ
পেয়ে  প্রথমে দু:খ
প্রকাশ করলে আদালত আবার নোটিশ
পাঠায় যার জবাবে রাহুল গান্ধী
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে
'চৌকিদার
চোর হ্যায়'
স্লোগান
তোলার জন্য সর্বোচ্চ আাদালতে
 নিশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
করেন।রাজনীতির ভাষায় বলেতে
গেলে বলতে হবে চৌকিদার চোর
হ্যায় স্লোগান তুলে  সর্বোচ্চ
আাদালতে রাহুল গান্ধী  থাপ্পড়
খেলেন।নির্বাচনের মাঝে এরকম
ঘটনা জেরে জনতার আদালতেও
থাপ্পর জুটল কিনা তা জানার
জন্য নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত
অপেক্ষা করতে হবে।   দেশি বিদেশি
মিডিয়া চোখ রাখলে স্পষ্ট বোঝা
যায় রাফাল যুদ্ধ বিমান ভারতে
এলে যে সমস্ত দেশের রাতের ঘুম
উড়ে যাবে এবারের লোক সভা
নির্বাচনে সেই সমস্ত দেশ
কংগ্রেসকে নানা ভাবে সহায়তা
করছে। সে জন্য প্রশ্ন হচ্ছে
কোন প্রমাণ ছাড়াই দেশের
নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ
স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে রাহুল
গান্ধীরা যে ভাবে তেড়েফুড়ে
নামলেন তা কোন গভীর ষড়য়ন্ত্রের
অঙ্গ নয় তো?
বাবা
রামদেবও অভিযোগ করেছেন মোদীকে
হারাতে খ্রীস্টান ও মুসলিম
দেশগুলি থেকে হচ্ছে হাজার
কোটি টাকার ফান্ডিং।  
এর
মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা
যায় চিন নাকি রাফাল চুক্তি
বাতিলের শর্তে ২০১৯ এর লোকসভা
নির্বাচনে লড়াই করার জন্য
কংগ্রেসকে ২২ হাজার কোটি টাকার
ফান্ড দিয়েছে।এই খবরের যথার্থতা
যাচাই না করেই বলা য়ায় চিনের
তরফে এই ধরণের প্রয়াস হওয়াটাই
স্বাভাবিক। কারণ যুদ্ধ ক্ষেত্রে
ভারত শক্তিশালী হোক এটা চিন
এবং পাকিস্থান কোন ভাবেই চাইবে
না।এ দিকে আবার ২০১৯ নির্বাচনে
 ভারতীয় মুসলমানরা যাতে ভোট
দিয়ে কংগ্রেস কে জেতায় সেই
ধরণের আবেদনও নানা ভাবে
পাকিস্থানের তরফ থেকে আসতে
শুরু করেছে।রাফাল নিয়ে রাহুল
গান্ধীর টুইট পাকিস্থানের
মন্ত্রীরা রি-টুইট
করছে। প্রশ্ন উঠতে পারে কোন
ছোট খাট আঞ্চলিক দল নয় শতাব্দী
প্রাচীন দল কংগ্রেস কে সামনে
রেখে  দেশের শত্রুরা এভাবে
সক্রিয় হতে পারে এটা কি
বিশ্বাসযোগ্য?
অতি
সম্প্রতি ভিমা-কোরেগাঁও
ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে এই
ঘটনার ষড়যন্ত্রীদের কাছ থেকে
যে সাতটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে
তাতেও  সহযোগী হিসেবে একাধিকবার
কংগ্রেস দলের নাম উল্লেখ
রয়েছে?এই
সমস্ত চিঠির প্রতিটি লাইনে
রয়েছে ভারতে চরম বিশৃঙ্খলা
তৈরী করে মোদী সরকারকে উৎখাতের
পরিকল্পনা। এই ষড়যন্ত্রীদের
মধ্যে রয়েছে পশ্চিমি মহাশক্তি
গুলির প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায়
পরিচালিত চার্চ সংগঠন,মাওবাদী
গ্যাং ও জেহাদী গোষ্ঠী।বর্তমানে
বিশ্বের কোন দেশের পক্ষেই
কোন দেশে প্রত্যক্ষ ভাবে
ঔপনিবেশিক শাসন কয়েম করা সম্ভব
নয়।সাদ্দাম হোসেনের অপসারণের
পর মার্কিনিদের বকলমে ইরাকিরাই
 এখন ঐ দেশ শাসন করছে।আফগানিস্থানেরও
একই পরিস্থিতি।সময়ের সাথে
সাম্রাজ্যবাদের স্বরুপ ও
প্রকৃতি দুটোই বলেছে।ভারত
সহ বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশ
যারা এক সময় কোন না কোন ভাবে
ঔপনিবেশিক শাসকদের পায়ের
তলায় পিষ্ঠ হয়েছে বিশ্বের
শক্তিধর দেশগুলি এই দেশ গুলিতে
ইরাক বা আফগানিস্থানের মতো
 সরকার প্রতিষ্ঠিত করে ঐ সমস্ত
দেশ কে পরোক্ষ নিয়ন্ত্রনে
এনে সম্পদ লুন্ঠন ও শক্তিবৃদ্ধির
উদ্দেশ্যে নিরন্তর 
ক্রিয়াশীল।স্বাধীনোত্তর
ভারতেও এমন একটি ভয়ঙ্কর 
রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে
যে ক্ষমতায় আসার জন্য এখানে
 ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী
 শক্তি এমন কি শত্রুদেশের  
সমর্থন ও সাহায্য নেওয়াও দোষের
নয়।সংঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক 
স্বার্থপ্রসুত প্রশ্রয় ও
পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই  বর্তমান
ভারতে পশ্চিমি মহাশক্তি ও
চিনা  এজেন্ট হিসেবে ক্রিয়াশীল
এদেশের চার্চ সংগঠন,
মাওবাদী
, জেহাদি
ও বিভিন্ন আঞ্চলিক  বিচ্ছিন্নতাবাদী
শক্তি গুলির এতটা বাড়বাড়ন্ত।
স্বাধীনতার
পর থেকে  চলে আসা তোষন রাজনীতির
ধারা ছিন্ন করে ২০১৪ সালে
বিজেপি বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা
নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় অধিষ্ঠত
হওয়ার ঘটনা স্বাধীনোত্তর
ভারতে  ক্ষমতার অলিন্দে কলকাঠি
নাড়তে অভ্যস্ত পশ্চিমি মহাশক্তি
ও চিনা এজেন্টদের কাছে এক
বিরাট ধাক্কা।সেজন্যই ২০১৪
সালের ১৬ মে লোকসভা নির্বাচনের
ফলাফল ঘোষনার পর ,
১৮
মে  সানডে গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয়তে
লেখা হয়ে ছিল 'Today
,18 May 2014,may well go down in history   as the day  when  Britain
finally left India. Narendra Modi's victory in  the elections makes
the end of a long era in which the structures of power did not differ
greatly from those through which Britain ruled the subcontinent.
India under the Congress party was in many ways a continuation of the
British Raj by other means.' স্বাভাবিক
ভাবেই ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন
কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের
মতো দল গুলির সাথে  সাথে পশ্চিমি
মহাশক্তি ও চিনা  এজেন্টদের
ঘুরে দাড়ানোর লড়াই। এই লড়াইয়ের
একটি ছোট্ট নকশা বহনকারী সাতটি
চিঠির বিষয় বস্তু সম্পর্কে
অবহিত হওয়ার আগে একবার চোখ
রাখা যেতে পারে আজকের দিনে
প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠা সংবিধান
কার্যকরি হওয়ার সময় সংবিধান
সভায় ড:
বি
আর আম্বেদকর প্রদত্ত ভাষনে
উচ্চারিত  কিছু  আশঙ্কা,
উদ্ধেগ
ভরা সাবধান বাণীতে।  
ড:
আম্বেদকর
বলে ছিলেন,
' এ
রকম নয় যে ভারত এর আগে কোন দিন
স্বাধীন ছিল না।এর থেকেও
গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো কয়েক
শতাব্দী আগে ভারত স্বাধীনতা
হারিয়েছে।এই জন্য ভাবনা হয়
যে আবার যদি এ রকম হয় তা হলে
কি হবে।এই দেশেরই কিছু মানুষ
বিদেশিদের সাথে হাত মিলিয়েছে,
এই
জন্যই দেশ স্বতন্ত্রতা
হারিয়েছে।এই জন্যই চিন্তা
হয় যে  আবার সেই ইতিহাসের
পুনরাবৃত্তি হবে না তো?
কয়েক
শতাব্দী ধরে এই দেশের সাথে
লড়াই চালিয়ে যাওয়া শত্রুরা
এবং দেশের মধ্যে ক্ষুদ্রস্বার্থ
সামনে রেখে কার্যরত রাজনৈতিক
দল এক হয়ে যদি দেশের স্বার্থ
বলি দিতে উদ্যোগি হয় তা হলে
কি হবে?এই
ধরণের চিন্তাই আমাকে অস্থির
করে দেয়। যদি এরকম হতে শুরু
করে তাহলে যারা এই দেশের জন্য
গর্ব বোধ করেণ যতক্ষণ তাদের
ধমনীতে একবিন্দু রক্ত থাকবে
ততক্ষণ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।'
বর্তমান
ভারতে  এমন অনেক মানুষ বাস
করেন  যারা এই দেশকে হিংসা
অস্থিরতার জ্বলতে দেখে,টুকরো
টুকরো হতে দেখে,
ভয়ঙ্কর
জাতি হিংসায় অশান্ত হতে দেখে
কিংবা ভবিষ্যাতে দেশের এমন
একটি ভয়ঙ্কর ছবির কথা কল্পনা
করে আনন্দে উচ্ছসিত উঠেন।এরা
ভারতকে শত্রুদেশ ভাবেন,
এ
দেশের দেশ প্রেমিক মানুষ
,নির্বাচিত
জন প্রতিনিধি,
দেশের
সেনা ও প্রশাসনের সাথে যুক্ত
মানুষদের শত্রু ভাবেন। এরা
আবার কোন সাধারণ মানুষ নন
।এদের মধ্যে অনেকেই  সমাজকর্মী,দলিত
নেতা ,নির্বাচিত
জনপ্রতিনিধি,কবি,সাহিত্যিক
,
বুদ্ধিজীবী
,মানবাধীকার
কর্মী এরকম নানা পরিচয়ে
পরিচিত।এরা আরবান নকশাল। এই
ধরণের ছদ্মবেশের আড়ালে থেকেই
 আরবান নকশাল অর্থাৎ শহুরে
নকশালরা ধ্বংসাত্মক ক্রিয়াকলাপে
সক্রিয় থাকে।এদের সিংহভাগেরই
আদর্শগত  শিক্ষা দীক্ষা পশ্চিমের
বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে সাউথ
এশিয়া স্টাডিজের আড়ালে চলতে
থাকা অ্যান্টিইন্ডিয়া ল্যাবরেটরি
গুলিতে।
এরা
যে '
ইতিহাসের
শুষ্ক পৃষ্টা থেকে বিস্ফোরক
তৈরী '
করতে
পারে তার দৃষ্টান্ত গত  ৩১
ডিসেম্বর ২০১৭ ঘটে য়াওয়া
ভীমা-কোরেগাঁও
এর  হিংসার ঘটনা।২০০ বছর আগের
এক যুদ্ধ জয়ের বিজয় দিবস
পালন করতে ঐ দিন দলিত সংগঠনের
ব্যানারে পুণেতে এক বিশাল
জমায়েত হয়েছিল। ভীমা কোরেগাঁও
যুদ্ধ নামে পরিচিত ওই যুদ্ধে
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির
সেনাবাহিনী পুণের ব্রাহ্মণ
পেশোয়া রাজাদের পরাজিত
করেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির
বাহিনীতে বেশীরভাগ সদস্যই
ছিলেন 'মাহার'
নামক
দলিত শ্রেণীর মানুষ।ব্রাহ্মণ
রাজাদের বিরুদ্ধে সেই যুদ্ধ
জয়কে দলিত সংগঠনগুলি এখন
পালন করতে চাইছে হিন্দুত্ববাদী
আর এস এস-এর
মতাদর্শের বিরুদ্ধে জয়
হিসাবে।ওই সমাবেশে গুজরাতের
দলিত নেতা জিগনেশ মেওয়ানী,
জওহরলাল
নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র নেতা উমর খালিদ-সহ
জাতীয় স্তরের দলিত নেতা-নেত্রীরা
হাজির ছিলেন।আমার মনে হয় ২০০
বছর আগে ঘটে যাওয়া পরাধীন
ভারতে ঔপনিবেশিক শাসকের জয়কে
দলিত শ্রেণীর জয় হিসেবে দেখিয়ে
তার বিজয় দিবস পালনের নামে 
দাঙ্গা লাগানোর ঘটনাকে ভারত
বিরোধী গবেষনাগার গুলির'
ইতিহাসের
শুস্ক পাতা থেকে বোমা তৈরীর
দৃষ্টান্ত'
না
বলে উপায় নেই।  
ভীমা-কোরেগাঁও
ঘটনার তদন্তে নেমে মহারাষ্ট্র
পুলিশ সাতটি চিঠি উদ্ধার
করেছে।ভারত বিদ্বেষের বারুদ
ভরা এই সমস্ত চিঠিতে এমন কিছু
ব্যাক্তির নাম উল্লেখ আছে
যারা টিভি চ্যানেলে বসেন ,
বিতর্কে
অংশ নেন,
 অভিযোগ
করেন এই দেশে গনতন্ত্র নেই।
এই দেশের সমস্ত ব্যাবস্থার
প্রতি ঘৃণা ভাব পোষন করেন।পুনের
ভীমা কোরেগাঁও-এ
ইয়ালগার পরিষদেের জাতিদাঙ্গা,অগ্নি
সংযোগের ,
সরকারি
সম্পত্তি ধ্বংস যজ্ঞের কর্মসূচির
দুই দিন পর অর্থাৎ  ২ জানুয়ারি
২০১৮ তারিখে কমরেড 'এম'
নামক
এক ব্যাক্তি কমরেড 'রোণা'
কে
লেখা  চিঠিতে কমরেড ওমর ও কমরেড
জিগনেশ কে এই আন্দোলনের ইয়ং
ফাইটার বলে উল্লেখ করে এই
আন্দোলনে দলিত নেতা  কমরেড
প্রকাশ আম্বেদকরের  জোরালো
সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।
বলা হয়েছে  ভবিষ্যতে এদের
সহায়তায় আরো বেশ কিছু দলিত
আন্দোলন সফল করতে  হবে।এই
চিঠিতে বলা হয়েছে ভীমা কোরেগাঁও
আন্দোলন অত্যন্ত সফল হয়েছে।এই
 আন্দোলনে   যুবকের মৃত্যুর
ঘটনাটি একটি বড় ইস্যু বানাতে
হবে ,
 এই
মৃত্যুর ইস্যু দিয়ে  প্রোপগ্যান্ডা
ম্যাটেলিয়্যাল বানাতে হবে
, সেই
সাথে এই মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে
আরো বড় কোন আন্দোলন উস্কে
দেওয়ার কাজ করতে হবে।চিঠিতে
'হাইয়ার
 কমিটি'
নামে
এক কমিটির কথা উল্লেখ করে বলা
হয়েছে যে  এই সমস্ত আন্দোলন
উস্কে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়
 অর্থও ঐ কমিটি থেকে এসে গেছে
।এই ব্যাপারে লন্ডনে থাকা
বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে
নিতে বলা হয়েছে।
এই
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে সিপিআই
মাওবাদী থেকে আসা আমাদের কিছু
 সিনিয়ার আরবান কমরেড  কংগ্রেসের
কিছু বন্ধুর সাথে কথা বলেছে
যারা তাদের কে এই দলিত আন্দোলন
কে আরো আক্রমনাত্মক ভাবে
চালিয়ে যাওয়ার  পরামর্শ দিয়েছে।
এর জন্য প্রয়োজনীয়  আইনি ও
আর্থিক সহযোগিতা জিগ্নেশের
মাধ্যমে পৌছানোর আশ্বাস
দিয়েছেন।এতে আরো বলা হয়েছে
যে বিজেপি সরকারে আসার পর এই
প্রথম কোন আন্দোলন নিয়ে এতটা
চাপে পড়েছে ।এই চিঠিতে আর এস
এস ও বিজেপির বিরুদ্ধে দলিত
ক্ষোভকে উস্কে দিতে  ভবিষ্যতে
এই ধরনের আন্দোলনের আগুন  একই
সাথে অন্য রাজ্যেও ছড়িয়ে
দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যাতে
২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদীকে
ক্ষমতাচ্যুত করা যায়।গুজরাট
নির্বাচনে এই ধরণের পরিকল্পনার
সুফল পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ
করা হয়েছে।
মাওবাদীরা
প্রকাশ্যে নিজেদের ধর্ম ও
জাতপাতের উর্ধ্বে উদার
মানবতাবাদী বলে জাহির করে
রাজনীতিকে এসবের উর্ধ্বে
রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।কিন্তু
বাস্তবে কিছু বিদেশি শক্তির
সাহায্য নিয়ে এই দেশকে জাতপাতের
আগুনে ঝলসে নিজেদের আধিপত্য
বিস্তারই মাওবাদিদের মূল
লক্ষ্য। এই চিঠি থেকে এটা
স্পষ্ট হয়ে উঠেছে  দেশে জাতপাতের
নামে ঘটে যাওয়া হিংসাত্মক 
কিংবা মব লিঞ্চিং এর ঘটনা গুলি
 পেছনে কারা রয়েছে।এই চিঠিতে
উল্লেখ করা হয়েছে যে জেলবন্দি
সিনিয়ার কয়েজন মাওবাদি নেতা
কে  মুক্ত করানোর জন্য কংগ্রেস
নেতারা আইনি সহযোগিতার আশ্বাস
দিয়েছে।এই চিঠিতে দলিত
সেন্টিমেন্ট কে উস্কে দিয়ে
  বিজেপি ও আরএসএস মোকাবিলার
কথাও বলা হয়েছে।
আরেকটি
চিঠি যার লেখক  কমরেড প্রকাশ
কমরেড রোণা কে লিখেছেন যে  
ভীমা-কোরেগাঁও
আন্দোলন ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে
যাচ্ছে।বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে
থাকা কমরেডদের সংগঠিত করে
আরএসএস বিজেপি শাসিত রাজ্য
গুলিতে এই আন্দোলন এমন জোরদার
করতে হবে যে ২০১৯এর লোক সভায়
মোদী যেন ক্ষমতায আসতে না
পারে। 
এখানে
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের   জুন
মাসে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদীকে হত্যার ষড়য়ন্ত্রের
উল্লেখ থাকা পত্র সামনে আসে।
দিল্লির সমাজসেবী রোনা উইলসনের
ঘর থেকে ১৮ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে
লেখা  এই  চিঠি উদ্ধার হয়েছে।
৮ কোটি টাকায় এম-৪
রাইফেল ও চার লাখ রাউন্ড গুলি
কেনা এবং রাজীব গান্ধীর মতো
ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।
উদ্ধার হওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে,
‘কমরেড
প্রকাশ,
লাল
সেলাম…হিন্দু ফ্যাসিস্টকে
হারানোই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য
ও আশঙ্কা। গোপন সেল ও অন্যান্য
সংগঠনের নেতারাও এই বিষয়টি
নিয়ে চিন্তিত।দেশজুড়ে
সমমনোভাবাপন্ন দল,
রাজনৈতিক
দল,
সংখ্যালঘু
প্রতিনিধিদের একত্রে আনার
চেষ্টা করছি আমরা। আদিবাসীদের
জীবন বিপন্ন করছে মোদির
নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্টরা।বিহার
ও পশ্চিমবঙ্গে হারলেও ১৫টিরও
বেশি রাজ্যে সরকার গঠনে সমর্থ
হয়েছেন মোদি। এই গতিতে চলতে
থাকলে সব দিক থেকে বেকায়দায়
পড়বে দল। মোদি জমানা শেষ করার
জন্য পোক্ত পদক্ষেপের প্রস্তাব
দিয়েছেন কর্নেল কিষান ও অন্যান্য
প্রবীণ কমরেডরা।’এই চিঠিতেও
প্রেরক নিজের কোড নাম হিসেবে
'আর'
অক্ষরটি
ব্যাবহার করেছিল।  
একটি
চিঠি কম:
প্রকাশ
কম:
সুরেন্দ্র
কে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে
লিখেছেন।এই চিঠিতে যুবক
ক্যাডার ভর্ত্তির কথা বলা
হয়েছে। এই চিঠিতে কম প্রকাশ
কম সুরেন্দ্র কে তার,নাইট্রেট
পাওডার ও অন্যান্য জিনিস
বিজাপুরের মাইনিং কন্ডাক্টারের
কাছে থেকে সংগ্রহ করার নির্দেশ
দিচ্ছে।কমরেড অরুণ  নামে এক
ব্যাক্তির প্রশংসা করে বলা
হয়েছে যে  এই  ব্যাক্তির জন্যই
 বড় সংখ্যায় রিসার্চ স্কলারদের
আন্দোলনে সামিল করা সম্ভব
হয়েছে।ওকে এই আন্দোলন মুম্বই
পুনে আমেদাবাদ ও কোঙ্কন প্রান্তে
বিস্তার করতে বলা হয়েছে।পরে
লেখা হয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র সংগঠন ডুসু ,
জেএন
ইউ এর ছাত্র সংগঠন জেএন ইউ এস
ইউ ,এ
পি এস ই ,এ
আই এস এফ ,
এনএসইউ
আই এই ছাত্র সংগঠন গুলিকে কাজে
লাগিয়ে সমস্ত দেশে ছাত্র
আন্দোলন তৈরীর কথা বলা হয়েছে।দেশ
জুরে ছাত্রদের দিয়ে জোরদার
আন্দোলন করাতে হবে কারণ
রাষ্ট্রশক্তি সে ভাবে ছাত্রদের
মোকাবিলা করতে পারবে না।এখানে
বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাচে
ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার কথা
বলা হয়েছে।কংগ্রেস নেতারা
এই ধরনের কর্মসূচীতে খুবই
আগ্রহী।কংগ্রেস নেতারা এই
ধরণের আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয়
অর্থ যোগানের আশ্বাসও দিয়েছে।এর
থেকেই স্পষ্ট পরিকল্পনা করেই
দেশ জুরে বিভিন্ন কলেজ ও
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অসন্তোষের
নামে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে ।
জেএনইউ ,
যাদবপুর,বেনারস
,দিল্লি
,হায়দ্রাবাদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বিক্ষোভের নামে অশান্তি ছড়ানো
হয়ে ছিল  বাস্তবে সেগুলিও ছিল
 সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফসল
।
৫
অক্টোবর ২০১৭ তারিখে  একটি
চিঠি বিজয়ন নামে এক ব্যক্তি
কে 'এসএস
'সাংঙ্কেতিক
নাম ব্যাবহার করে একজন লিখেছে
যাতে খৃষ্টান মিশনারীদের
কাজের প্রশংশা করে বলা হয়েছে
যে ওদের কাজের জন্য গত পাঁচ
বছরে কম করে  ২৫ শতাংশ আদিবাসী
ধর্মান্তরণ হয়ে যিশুর অনুগামী
হয়েছে।এই চিঠিতে রাজ্য সরকার
দ্বারা ধর্মান্তর বিরোধী আইন
নিয়ে চিন্তা ব্যাক্ত করা
হয়েছে।এমন কি এই আইন বাতিলের
জন্য ঝাড়খন্ডের বিজেপির বরিষ্ঠ
নেতাদের কিডন্যাপ করার কথাও
বলা হয়েছে। বলা হয়েছে খৃষ্টান
মিশনারীদের ক্রিয়াকলাপ আদিবাসী
সমাজের মানুষের গনতান্দ্রিক
অধিকার রক্ষার  ক্ষেত্রে
অত্যন্ত লাভদায়ক এই জন্যই
বিগত পাঁচ বছরে ২৫ শতাংশ আদিবাসি
মানুষ খৃীষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত
হয়ে গেছে।   
একটি
চিঠিতে বলা হয়েছে বিভিন্ন
সময়  গেরিলা যুদ্ধ ও আইনি
লড়াইয়ের  জন্য কমরেড ভরভরা
রাও কিছু ফান্ডের ব্যাবস্থা
করেছে। একটি চিঠিতে কম মিলিন্দ
নামে এক ব্যক্তি বলছেন  যে
কমরেড ভরভরা রাও ও আইনি
সাহায্যকারী কম সুরেন্দ্রের
 মার্গদর্শনে দেশের বিভিন্ন
স্থানে সংগঠিত হামলায় বেশ
প্রচার প্রসিদ্ধি হয়েছে। এই
সমস্ত হামলার জন্য প্রয়োজনীয়
ফান্ডের ব্যাবস্থাও যে কমরেড
ভরভরা রাও করেছেন এবং ভবিষ্যতেও
করবেন।মহারাষ্ট্র পুলিশের
 এডিজি পরমবীর সিং মুম্বই এ
প্রেস কন্ফারেন্স করে একটি
চিঠি পড়ে শুনিয়েছেন ।এই চিঠি
কম সুধা (ভরদ্বাজ)
কম
প্রকাশকে লিখেছেন। প্রথমেই
বলা হয়েছে জব্বল পুর লিগ্যাল
এইড তথা ছত্রিশগড় সলিডারিটির
নেওয়ার্কের সংগঠনাত্মক কাজ
অত্যন্ত ভালো ভাবে চলছে।পরে
বলা হয়েছে কাশ্মীরের
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে
কমরেড অঙ্কিত ও কম গৌতম  নওলখা
এবং শত্রুদের দ্বারা মানবাধীকার
হনন সম্পকিত ভিডিও সোশ্যাল
মিডিয়া ও মিডিয়া হাউস গুলির
মাধ্যমে প্রচারের ব্যাবস্থা
করতে হবে এবং পেলেট গান নিয়ে
সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলায়
লিগ্যাল এইড এর ব্যাবস্থা
করতে হবে এর জন্য কমরেড প্রশান্তের
সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এই আরবান নকশালদের অনেকেই
গ্রেপ্তার ও গৃহবন্দি হলেও
এদের উপযুক্ত শাস্তি হবে কিনা
সে আশঙ্কা থেকেই যায়।কারণ
এদের হয়ে লড়াই করছে কংগ্রেসের
প্রথম সারির নেতা হিসেবে
পরিচিত  অভিষেক মনু সিংভি ও
কপিস সিব্বালদের মতো সুপ্রিম
কোর্টের দুঁদে আইজীবীরা। এই
আইনজীবিোীরা কোন মামলায়  একবার
কোর্টে দাঁড়ালে ২০ থেকে ২৫
লক্ষ টাকা নেন।এতটাকা এই
সর্বহারা দলিত বুদ্ধিজীবি
লেখক কবিদের কে জোগাচ্ছেন না
কংগ্রেসের আইন জীবিরা বিনামূল্যে
আইনি সহায়তা দিচ্ছেন এই বিষয়টিও
তদন্তের আওতায় আসা প্রয়োজন।#
সাধন কুমার পাল
সাধন কুমার পাল

Nice anslysis
উত্তরমুছুনVery informative and this kind of articles should come in front of people of India.
উত্তরমুছুন