সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

' ক্যাব' নিয়ে মানবতার শত্রুদের সাথে এক লাইনে বিরোধীরা



                                                
সাধন কুমার পাল:-
বিজেপি বিরোধীতা করতে গিয়ে তথা কথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল গুলি কে কখনো ভারতের শত্রু পাকিস্থান আবার কখনো জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকরে টুকরে গ্যাং এর পাশে দাড়াতেও দেখা গেছে।এবার তো বিজেপি বিরোধীতার নামে ক্যাবের বিরোধীতা করতে গিয়ে এই দলগুলি কে সরাসরি মানবতা বিরোধী অবস্থান নিতে হচ্ছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের(ক্যাব) মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদান করে দেশভাগের সময় বিশ্বের বৃহত্তম এবং জঘন্যতম গণহত্যার শিকার ছিন্নমূল হিন্দুদের ক্ষতে সামন্যতম প্রলেপ দিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার যখন বিগত সাত দশক ধরে চলে আসা মানবিকতার প্রতি এক ঘোরতর অন্যায় অবিচারের অবসান করতে উদ্যোগী হয়েছে সে সময় সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে তুচ্ছ বিরোধী রাজনীতির নামে রুখে দাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস,কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিভিন্ন দল। মানবিক চেতনা সম্পন্ন ভারতীয় ভোটাররা ভোটের বাক্সে এই দল গুলিকে যোগ্য জবাব দেবে কিনা তা ভবিষ্যত বলবে।তবে ক্যাব নিয়ে বিরোধীদের অবস্থান ইতিহাসের পাতায় মানবতা বিরোধী জঘন্য পদক্ষেপ হিসেবে যে চিহ্নিত হয়ে থাকবে এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। ইতিহাসের পাতায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এমন বহু দৃষ্টান্ত যা থেকে প্রমাণ করা যাবে ক্যাব নিয়ে বিরোধীদের অবস্থান উদ্বাস্তু হিন্দুদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয় ।এখানে তারই কয়েকটি উল্লেখ করা হল
রাজ্যসভার নথি বলছে ২০০৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে : মনমোহন সিং বলেছিলেন,' দেশভাগের পর বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে সে দেশের সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছে,পরিস্থিতি যদি এই হতভাগ্য মানুষ গুলিকে আশ্রয় চাইতে বাধ্য করে তাহলে নিয়ম কানুন শিথিল করে এদের কে নাগরিকত্ব প্রদান করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য ।'
১৬ জুলাই ১৯৪৭ ,দিল্লিতে আয়োজিত প্রার্থনা সভায় গান্ধীজী যা বলে ছিলেন তার সারমর্ম হল, পাকিস্থানে যদি কেউ থাকতে না পারে আমরা তাদের ভাতৃভাবে এমন ভাবে আলিঙ্গন করে নেব এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত সুযোগ সুবিধে দেব যাতে তারা অনুভব করে না পারে যে তারা কোন বিদেশ ভুমিতে আছে।
১৯৪৭ এর ১৪ আগষ্ট মধ্যরাত্রে সংবিধান সভার প্রথম ভাষনে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহারলাল নেহেরু বলে ছিলেন , 'We think also of our brothers and sisters who have been cut off from us by political boundaries and who unhappily cannot share at present in the freedom that has come. They are of us and will remain of us whatever may happen, and we shall be sharers in their good and ill fortune alike..... ' অর্থাৎ 'রাজনৈতিক সীমানা দ্বারা যে ভাইবোনরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং যারা দু:খজনক ভাবে অর্জিত স্বাধীনতায় অংশ নিতে পারছে না আমাদের তাদের কথাও ভাবতে হবে। তারা আমাদেরই এবং যা কিছু ঘটুক না কেন তারা আমাদেরই থেকে যাবে এবং আমরা তাদের সৌভাগ্য এবং দুর্ভাগ্যের সমান অংশীদার হব।'
১৯৫১ সালের ৩০ মার্চ সংসদে উদ্বাস্তুদের পূর্নবাসন নিয়ে আলোচনা চলছিল।উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সংসদের সাব কমিটির সদস্য হিসেবে সুচেতা কৃপালিনি দেশের পূর্ব সীমান্তে বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির পরিদর্শন করে তিনি প্রত্যক্ষ ভাবে বুঝতে পারেণ যে উদ্বাস্তু শিবির গুলিতে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে উদ্বাস্তুরা বাধ্য হচ্ছে পাকিস্থানে ফিরে যেতে।তিনি বলেন ,'সরকার শতমুখে তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্ঠা করছে যে উদ্বাস্তুরা পাকিস্থানে ফিরে যাচ্ছে ।কিন্তু আমি জানি তারা কেন ফিরে যাচ্ছে - তারা ভালোবেসে পাকিস্থানি নাগরিকত্ব গ্রহনের জন্য ফিরে যাচ্ছে এমন নয়। উদ্বাস্তু শিবির গুলির ভয়াবহ পরিস্থিতি জনিত হতাশা থেকে মুসলমান হয়েই তারা সেখানে বসবাস করবে এটা নিশ্চয় করেই তারা পাকিস্থানে ফিরে যাচ্ছে।' সুচেতা কৃপালিন সে দিনের আবেগ ভরা ভাষনে বলেন, এই উদ্বাস্তুদের কখনই বিদেশি হিসেবে দেখা উচিত নয়।এদের এখানের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে স্থানীয় জনসাধারণ ও অর্থনীতির সাথে একাত্ম করার কথা ভাবতে হবে।(Parliamentary Debates Volume IX ).

CPI(M) writes to PM on Citizenship Act
NEW DELHI:, MAY 25, 2012 00:34 IST
The Communist Party of India (Marxist) has asked the government to amend the Citizenship Act, to provide Indian citizenship to a large number of refugees from Bangladesh, both before and after its formation. It is said there had been a consensus in Parliament when the National Democratic Alliance was in power at the Centre.
In a letter to Prime Minister Manmohan Singh, CPI(M) General Secretary, Prakash Karat, has drawn attention towards “the citizenship problems of the large number of refugees from erstwhile East Bengal, and then even after the formation of Bangladesh, who had to flee their country in particular historic
circumstances on which they had no control”.
He said their situation was “different from those who have come to India due to economic reasons”.

উপরের চিঠি থেকে পরিস্কার যে শুধু কংগ্রেস নয় এক সময় সিপিএমও উদ্বাস্তু হিন্দুদের নাগরিকত্বের দাবী জানিয়ে ছিল।প্রকাশ কারাতও অর্থনৈতিক কারণে যারা ভারতে এসেছেন তাদের থেকে উদ্বাস্তরা যে পৃথক তা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। কিন্ত এখন ওরা শুধু মাত্র বিজেপি বিরোধীতা করার জন্যই এই বিলের বিরোধীতা করছে।ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না একদিন না একদিন ওদের উদ্বাস্তু হিন্দুদের সামনে দাড়াতে হবে এবং সেদিন জবাবও দিতে হবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...