সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাতীয় শিক্ষানীতি -২০২০

                                 

                                                  সাধনকুমার পাল            

34 বছর পর ভারতে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ ঘোষিত হয়েছে।স্বাভাবিকভাবেই দেশের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী তাদের অভিভাবক অভিভাবিকা ও সাধারণ মানুষের জীবনে এই নতুন শিক্ষানীতির প্রভাব পড়বে। সেইজন্য  এই শিক্ষানীতির সমস্ত বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতবর্ষে যতগুলো শিক্ষা নীতি ঘোষিত হয়েছে সেগুলির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং বিভিন্ন পরিবর্তনগুলি প্রায় একই রকম ছিল।ফলে সেগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে দেশবাসীর খুব বেশি সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবারে শিক্ষানীতিতে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ধারাটি বদলে দেওয়া হয়েছে।যে কোন দেশে কোন বড় পরিবর্তন আনতে গেলে সর্ব প্রথমে তার শিক্ষা ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে। ভারতকে নলেজ  সুপার পাওয়ার , এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত, আত্মনির্ভর ভারত, ভাইব্রেন্ট ভারত হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। ভারতের হলিস্টিক ডেভলপমেন্টের কথা বলা হয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণের উপায় হিসেবে মেকলে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রভাবমুক্ত সম্পূর্ণ ভারতীয় ভাবনার উপর ভিত্তি করে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। বর্তমান শিক্ষা চিত্রের পরিস্থিতি এমনই যে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রকে দ্বিতীয় শ্রেণীর বই পড়তে দিলে সে রিডিং পর্যন্ত পড়তে পারে না। নবম দশম শ্রেণীর পড়ুয়ারা পঞ্চম ষষ্ঠ শ্রেণীর গণিতের সামান্য সমস্যাগুলোও সমাধান করতে পারে না। সেজন্য এই শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা অবশ্যমম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। 

প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি তে ১০+২  মডেলের পরিবর্তে ৫+৩+৩+৪ মডেলের কথা বলা হয়েছে। প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছর প্রাক-প্রাথমিক ও পরের দুই বছর প্রথম শ্রেণী ও দ্বিতীয় শ্রেণি। এই পাঁচ বছর কে ফাউন্ডেশন স্টেজ বলা হয়েছে। এই পর্যায়ে বই  খাতার বোঝা না চাপিয়ে শিশুদের খেলাধুলা ও অন্যান্য সক্রিয়তা মূলক কর্মসূচির মাধ্যমে সামর্থ্যবান হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। এই পর্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় সিলেবাস বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করবে। প্রচলিত অঙ্গনওয়াড়ি ব্যবস্থা গুলোকে প্রথাগত শিক্ষার আওতায় আনা হবে। সেগুলো পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। শিক্ষার এই প্রথম ধাপ সম্পর্কে বলা হচ্ছে Universalisation of Early Child Care Education। আগে এই প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা শুধুমাত্র বেসরকারি বিদ্যালয় গুলিতেই দেওয়া হতো। সমাজের একেবারে সাধারণ মানুষের জন্য এই শিক্ষা সহজলভ্য ছিল না। এখন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আসবেন এবং সরকার তিন বছর বয়স থেকেই ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার দায়িত্ব নেবেন। বলা হয়েছে মিড ডে মিল এর সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা করা হবে ।

পরের তিন বছর অর্থাৎ তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলা হবে।এই স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান গণিত কলা সামাজিক বিজ্ঞান এই সমস্ত বিষয় পড়ানো হবে।পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পঠন-পাঠন মাতৃভাষার মাধ্যমে দেওয়া হবে।  ইংরেজি থাকলেও একটি বিষয় হিসাবে থাকবে। ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম তিনটি শ্রেণী নিয়ে এই স্তরকে মিডিল স্টেজ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।এবং এই স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম অনুসারে পড়ানো হবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের চিন বা অন্যান্য উন্নত দেশের মতো কোডিং শেখার সুযোগ করে দেওয়া হবে । এই স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার পাশাপাশি কোন ভোকেশনাল শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ব্যবস্থা থাকছে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পছন্দ মতন কোন দক্ষতা অর্জনের জন্য দশ দিন বই খাতা ছাড়া স্কুলে গিয়ে শুধু সেই কাজ শিখতে পারবে এরকম ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। যেমন কোন ছাত্র-ছাত্রীর যদি পেইন্টিং শেখার ইচ্ছে থাকে তাহলে সেই দশ দিন কোন পেন্টারের কাছে গিয়ে প্রত্যক্ষভাবে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। কারো যদি সফটওয়্যার তৈরিতে আগ্রহ থাকে তাহলে স্কুলের ব্যবস্থাপনায় সে কোন সফটওয়্যার শেখান এমন ব্যক্তির কাছে গিয়ে 10 দিন কাজ শিখে আসতে পারবে।অর্থাৎ স্কুল থেকে ছাত্র ছাত্রীরা যখন বেরিয়ে যাবে তখন কোনো না কোনো একটা বিষয়ে সে দক্ষ হয়ে বেরোবে।

এরপর নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত 4 বছরের সর্বশেষ স্কুল শিক্ষার ধাপ। এই স্তরে ছাত্র ছাত্রীদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বেশি জোর দেওয়া হবেএবং জীবনে সবচাইতে বড় লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য প্রেরণা যোগানো হবে। এখন আগের মতন সাইন্স আর্টস এই ধরনের স্ট্রিম সিস্টেম থাকছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের পছন্দ মতন বিষয় নির্বাচনের স্বাধীনতা থাকছে।অর্থাৎ কেউ চাইলে পদার্থবিদ্যার সাথে মিউজিককে একটা সাবজেক্ট হিসেবে পছন্দ করতে পারবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সেমিস্টার সিস্টেমে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই চার বছরে মোট আটটি সেমিস্টার পরীক্ষা হবে।প্রতি বছর দুটি করে সেমিস্টার হবে এবং দুটি করে সেমিস্টারের নম্বর যোগ করেই ফাইনাল মার্কশিট তৈরি করা হবে।

এখন ছাত্র-ছাত্রীদের 360 ডিগ্রি অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতির উপর নম্বর দেয়া হবে। এই পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাও নিজেদেরকে একটি নম্বরের অংক দেবে, সহপাঠী বন্ধুরা নম্বর দেবে সেই সাথে থাকছে শিক্ষকদের দেওয়া নম্বর। এখানে মূল্যায়ন হবে তার বিশ্লেষণ ক্ষমতার সৃজনশীল ক্ষমতার।অর্থাৎ নোট ভিত্তিক মুখস্থ ক্ষমতা ভিত্তিক পড়াশোনার দিন সমাপ্ত হতে চলেছে।

এখন ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কমন এ্যাপটিচ্যুড টেস্ট দিতে হবে। কোন কারণে কেউ দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর নম্বর কম থাকলে সেও কমন অ্যাপটিটিউড টেস্ট এ বসতে পারবে । কমন এ্যাপটিচ্যুড টেস্টের নম্বরের সাথে দ্বাদশ শ্রেণীর নম্বর জুড়ে দিয়ে কাঙ্খিত মানে পৌঁছালে কোন ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতে পারে। গ্রাজুয়েশনের পড়াশোনা এখন তিন বছর ও চার বছরের সময়সীমায় বিভক্ত করে দেওয়া হবে।কেউ এক বছর পড়াশোনা করে ছেড়ে দিলে সে গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট পাবে। দুই বছর পড়াশোনা করলে সে গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা পাবে।তিন বছর পড়াশোনা করলে সে গ্রাজুয়েট ডিগ্রী পাবে এবং চার বছর পড়াশোনা করলে সে গ্রাজুয়েট রিসার্চ ডিগ্রী পাবে।এর আগে কেউ ভর্তি হওয়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দিলে সে গ্রাজুয়েশনের ডিগ্রী পেত না।কিন্তু এখন সে মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিলেও নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সার্টিফিকেট তো পাবেই এমনকি তার এই শিক্ষাগত যোগ্যতা একাডেমিক ক্রেডিট ব্যাংকে জমা হয়ে থাকবে যার সাহায্যে সে পরবর্তীকালে আবার পড়াশোনার সুযোগ পাবে এবং ডিগ্রী সম্পূর্ণ করতে পারবে।স্কুলের মতন গ্রেজুয়েশন স্তরেও ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। এই পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে মাল্টি এন্ট্রি ও মাল্টি এক্সিট পদ্ধতি। অর্থাৎ নিজের ইচ্ছে মতন এন্ট্রি ও এক্সিট এর সুযোগ থাকছে।

স্কুল এবং কলেজ তাদের পড়াশোনাতেও সংস্কৃত শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হবে।সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্যান্য বিষয় পড়ানোর কথা বলা হয়েছে এই শিক্ষা ব্যবস্থায়। বেসরকারি স্কুল ও কলেজ গুলোর জন্য সরকার কিছু নিয়ম কানুন তৈরি করবে যাতে  বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া সীমার বাইরে কোনরকম টাকা পয়সা অর্থাৎ টিউশন ফি নিতে পারবে না। প্রশ্ন হচ্ছে এই শিক্ষানীতি কবে থেকে চালু হবে। প্রাথমিকভাবে এই শিক্ষানীতি কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে পাস হয়ে গেছে। পরবর্তীকালে লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করে এটির আইনি বৈধতা দেওয়া হবে। তারপর বিভিন্ন রাজ্য আইন পাস করে বাস্তবে রূপায়ণ করবে।তোর 2021-22 শিক্ষাবর্ষে এই শিক্ষা নীতি কার্যকর হবে এরকমটাই মনে করা হচ্ছে।মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদলে এখন থেকে শিক্ষা মন্ত্রক হবে। 

বিভিন্ন অনুন্নত এলাকাকে দেশের মূল স্রোতের সাথে যুক্ত করার জন্য স্পেশাল এডুকেশন জোন গড়ার প্রস্তাব রয়েছে এই শিক্ষা নীতিতে। শুধু অনুন্নত এলাকার নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত জনগোষ্ঠী এখনো নানা কারণে পিছিয়ে রয়েছে তারা যাতে শিক্ষার মূল স্রোতের সংস্পর্শে আসতে পারে তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রেন্ডলি এডুকেশন সফটওয়্যার তৈরীর কথা বলা হয়েছে। ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরি তৈরীর কথা বলা হয়েছে।আঞ্চলিক ভাষায় ই-কন্টেন্ট তৈরীর কথা বলা হয়েছে। ছাত্র শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে থাকা দুই কোটি ছাত্রছাত্রীকে আবার বিদ্যালয় ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৩০:১ রাখার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে ও বড় রদবদল আসতে চলেছে। শিক্ষকতা করার যোগ্যতা হিসাবে মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো চার বছরে ইন্টিগ্রেটেড কোর্স চালুর কথা বলা হয়েছে। শিক্ষকতা করতে ইচ্ছুক সবাইকে 2030 সালের পর এই চার বছরের ইন্টিগ্রেটেড কোর্স এবং টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট উত্তীর্ণ হতে হবে। স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার উচ্চ শিক্ষা ও স্কুল শিক্ষার মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরীর চেষ্টা হয়েছে। জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে খরচ করার কথা বলা হয়েছে।

অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে জাতীয় শিক্ষানীতি তো তৈরি হলো এটাকে বাস্তবে ঠিকভাবে রূপায়িত হওয়া সম্ভব।এই প্রশ্নগুলো উঠে আসা স্বাভাবিক ব্যাপার কারণ আমরা দেখেছি এর আগে যতগুলো শিক্ষা কমিশন হয়েছে তার কোন সুপারিশ সঠিকভাবে কোনদিনই কার্যকর হয়নি। এর মূল কারণ বোধহয় রাজনৈতিক সদিচ্ছা । কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন যে এই সরকারের এই শিক্ষানীতি রূপায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিন্দুমাত্র অভাব নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট সমাজের সব ধরনের মানুষ এবং প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে  এই শিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু রূপায়ণ সম্ভব। সমস্ত ব্যবস্থারই একটি আশংকাও ইতিবাচক দিক থাকে। এত বড় একটি শিক্ষা ব্যবস্থা সত্যি সত্যি সুষ্ঠুভাবে রূপায়িত হবে কিনা এই ব্যাপারে  আশঙ্কা অমূলক নয় ।এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে যেভাবে সমস্ত কিছু পাল্টে দেওয়া হয়েছে তার জন্য সমাজের মানুষের মনস্থিতি তৈরি হওয়া প্রয়োজন আছে। মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। এর ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে ব্যাপক প্রচার প্রসার প্রয়োজন।##

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...