সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

" হিন্দুত্ব" ভারতের সংবিধানের প্রাণ

               


সংবিধানে শ্রীরামচন্দ্রের বনবাস যাত্রার ছবি

                                          

সাধন কুমার পাল:ভারতে প্রতি বছর 26 নভেম্বর সংবিধান দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিনটি "জাতীয় আইন দিবস" নামেও পরিচিত 26 নভেম্বর 1949 তারিখে, গণপরিষদে ভারতের সংবিধানে গৃহীত হয় এবং 26 জানুয়ারী 1950 সালে কার্যকর হয়। ভারত সরকার একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে 19 নভেম্বর 2015 তারিখে 26 নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। গত 11 অক্টোবর 2015 তারিখে মুম্বাইতে বি.আর. আম্বেদকরের স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি মেমোরিয়ালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘোষণা করেনএর আগে এই দিনটি আইন দিবস হিসেবে পালিত হত। সংবিধানের গুরুত্ব এবং : আম্বেদকরের চিন্তা ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য 26 নভেম্বর দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।

গত ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত 'লোকমত' নাগপুর সংস্করণের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে লোকমত গ্রুপ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে 'হিন্দুত্ব এবং জাতীয় সংহতি' বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে সংঘ দেশের 130 কোটি মানুষকে "হিন্দু" হিসাবে বিবেচনা করে এবং সঙ্ঘ সংবিধানে বিশ্বাস করে এবং অন্য কোনও "শক্তি কেন্দ্রে" নয়। তিনি বলেন যখন সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকরা বলে যে এই দেশ হিন্দুদের এবং 130 কোটি মানুষ হিন্দু, তার মানে এই নয় যে আমরা কারও ধর্ম, ভাষা বা বর্ণ পরিবর্তন করতে চাই… আমরা সংবিধান ছাড়া অন্য কোনও ক্ষমতা কেন্দ্র চাই না কারণ আমরা এটাতেই বিশ্বাস করি,” । 

সংবিধানে নন্দলাল বোসের আঁকা নটরাজের ছবি

    হিন্দুত্ব ভারতীয় সংবিধানের সত্যিকারের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এটি দেশের 5,000 বছরের পুরানো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হয়েছে। জাুনুয়ারী মাসে তেলেঙ্গানায় একটি ভাষণে সংঘ প্রধান বলেছিলেন "সকল ভারতীয় হিন্দু" কারণ তাদের পূর্বপুরুষরা সকলেই হিন্দু ছিলেন।তিনি উত্তর প্রদেশে এক বক্তব্যে বলে ছিলেন, সংবিধান বলছে আমাদের মধ্যে মানসিক সংহতি আনার চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু এই সংহতির আবেগ কি? সেই আবেগ হলো—এই দেশ আমাদের, আমরা আমাদের মহান পূর্বপুরুষের বংশধর এবং বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। এটাকেই আমরা হিন্দুত্ব বলি,”।যেমন সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং এই বৈচিত্রের মধ্যে রয়েছে ঐক্যের সুতো"

                                     

সংবিধানে নন্দলাল বোসের আঁকা ছবি

 

 তিনি বলেন, দেশের সমগ্র জনসংখ্যার প্রত্যেকেই ভারত মাতার বংশধর এবং বন্দেমাতরম মানুষকে একত্রিত করে রেখেছে। আমাদের সকলের একসাথে চলা উচিত এবং হিন্দুত্বই আমাদের সকলকে ভারতীয়  হিসাবে একত্রিত করে। আমাদের সমস্ত অন্যায় কাজ ত্যাগ করতে হবে এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। সমস্ত অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমস্ত জুড়ে থাকা সত্যকে আমরা হিন্দুত্ব বলি। এটা আমাদের জাতীয় পরিচয়। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু এটি আমাদের দেশে বছরের পর বছর ধরে এবং সংবিধান প্রণয়নের আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল এবং এটি সম্ভব হয়েছে হিন্দুত্বের জন্যই ।


তিনি বলেছিলেন যে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের ধারণাটি প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতির নিজস্বতা এবং ভারতীয় সাংস্কৃতিক পরিচয় হিন্দুত্ব দ্বারাই বোঝানো হয়েছে। বিশ্ব মনে করে যে ঐক্যের জন্য অভিন্নতা দরকার। কিন্তু আমাদের দেশে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য খোঁজার ধারণা প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত আছে।তিনি আরও বলেছিলেন যে হিন্দুত্ব শব্দটি প্রথমে শিখ ধর্মীয় নেতা গুরু নানক দেব দ্বারা তৈরি হয়েছিল এবং বীর সাভারকার নয় হিন্দু হল একটি সংস্কৃতি এর নাম যা মূলত দেশের মানুষের জীবনধারা।##


https://sadhankumarpaul.blogspot.com/2019/04/blog-post_30.html


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...