সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তৃণমূল নেতা হাসান ইমরান কতটা বিপজ্জনক

এক সময় এই ধরণের তথ্য নিয়ে মিডিয়ায় প্রচুর শোরগোল হয়েছে । কিন্তু রাজনৈতিক বিতর্ক যেমন সময়ের সাথে থিতিয়ে যায়, এই ইস্যু গুলিও তেমনি হয়েছে।  মিডিয়ার তৎপরতা থামলেও ইসলামিক মৌলবাদের  তৎপরতা এবং এদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার প্রবনতা থেমে থাকাতো দুরের কথা বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য এই লেখা গুলির প্রাঙ্গিকতা ফুরিয়ে যায় নি।                     
                                 তৃণমূল নেতা হাসান ইমরান কতটা বিপজ্জনক 
   
                                                                   

           হাসান ইমরান কে রাজ্যসভায় পাঠানোর পরের ঘটনা পুনস্মরণ করলে আরো স্পষ্ট হবে যে মমতা যা কিছু করছে তা জেনে বুঝেই করছে।তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে একাধিক মৌলবাদী সংগঠনের যোগাযোগ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসও। দূতাবাস থেকে পাঠানো ওই রিপোর্টে ভারতে নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠন, স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া বা সিমি-র সঙ্গেও ইমরানের যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। 
      ইমরান রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার ঠিক পরেই বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সারন নয়াদিল্লিকে একটি ‘ডশিয়ার’ পাঠান। সেখানে বাংলাদেশের মাটিতে সক্রিয় ভারত-বিরোধী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ইমরানের যোগাযোগের কথা ছিল। তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে একাধিক মৌলবাদী সংগঠনের যোগাযোগ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসও। দূতাবাস থেকে পাঠানো ওই রিপোর্টে ভারতে নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠন, স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া বা সিমি-র সঙ্গেও ইমরানের যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। ইমরান রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার ঠিক পরেই বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সারন নয়াদিল্লিকে একটি ‘ডশিয়ার’ পাঠান। সেখানে বাংলাদেশের মাটিতে সক্রিয় ভারত-বিরোধী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ইমরানের যোগাযোগের কথা ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক অতীতে কোনও সাংসদ সম্পর্কে এমন গুরুতর অভিযোগ আসেনি। এই খবর পাওয়ার পরে বিদেশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন হাইকমিশন থেকে যে সব রিপোর্ট আসে, সরকার যেন তা নিয়ে সতর্ক থাকে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে নবান্নের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। ঢাকা দূতাবাস এবং কেন্দ্রীয় সরকার এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। সরকারের শীর্ষ মহলও এ নিয়ে অবহিত।”
        ৯/১১-র ঘটনার পরে এ দেশে জঙ্গি কার্যকলাপের উপর নিয়ন্ত্রণ আনার অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে সিমিকে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে। যদিও অন্য নানা নামে এই সংগঠন যে কাজকর্ম চালাচ্ছে, এমন রিপোর্টও রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢাকার হাইকমিশন তৃণমূল সাংসদের সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছে। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৭০-’৭১ সালে বাংলাদেশের শ্রীহট্ট অঞ্চল থেকে ভারতে আসেন তৃণমূল সাংসদ। প্রথম দিকে তিনি অসমের ধুবুরি এলাকায় থাকতেন। পরে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে চলে আসেন। ১৯৭৫-’৭৬ সালে ইমরান এ রাজ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। দ্রুত সেই সংগঠন বিস্তার লাভ করে। 
 ১৯৭৭ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনগুলিকে নিয়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনেই জন্ম হয় স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া (সিমি)-র। আহমেদ হাসান ইমরান সেই সম্মেলন থেকে সিমি-র পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তী তিন বছর তিনি সিমির সভাপতি পদে বহাল ছিলেন। তার পরেও সিমি নিষিদ্ধ হওয়া ইস্তক পশ্চিমবঙ্গে ইমরানই সিমির প্রধান।
   

       বিদেশ মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকার ১৯ দরগা রোডের দু’কামরার ঘরে সিমির প্রথম অফিস শুরু করেন ইমরান। সেখান থেকেই ১৯৮১ সালে সিমি-র মাসিক মুখপত্র ‘কলম’ পত্রিকা প্রকাশ শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটির মাসিক সংস্করণ এই ঠিকানা থেকেই ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়ে এসেছে। 
  মন্ত্রকের কাছে জমা পড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সময়ের সিমি-র সংগঠন সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ইমরান। ফলে ইসলামি দুনিয়ায় তাঁর গুরুত্বও বাড়তে থাকে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ইউএপিএ আইনে বেআইনি যোগসাজশের অভিযোগে পিএফআই এবং তার অনুমোদিত সংগঠনগুলির উপরে এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হল৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অভিযোগ, সিমি, বাংলাদেশের জেএমবি এবং আইসিস-এর মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গেও পিএফআই-এর যোগ পাওয়া গিয়েছে৷ বিজ্ঞপ্তিতে আরও দাবি করা হয়েছে, পিএফআই এবং তার অনুমোদিত সংগঠনগুলি এমন কার্যকলাপের সঙ্গে জড়াচ্ছে যা দেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ৷ শুধু তাই নয়, জনজীবনের শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে যা ব্যাহত করতে পারে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন ছোট ছোট সংগঠন তৈরি করে যুব সমাজ, ছাত্র, মহিলা, আইনজীবী সহ সমাজের দুর্বল শ্রেণির মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে সদস্য বাড়ানো এবং সংগঠনের জন্য টাকা তোলার কাজও চালাচ্ছিল৷        

       পিএফআই-এর কয়েকজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জঙ্গি সংগঠন সিমি-র নেতা, এমনও দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে৷এর পরেও মমতা ওর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। 
হাসান ইমরানের সঙ্গে একাধিক মৌলবাদী সংগঠনের যোগাযোগ নিয়ে রিপোর্ট থাকা সত্বেও তাকে রাজ্যসভায় পাঠানো ,এগুলির কোনটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।## 
সাধন কুমার পাল
 (ভারত বাংলাদেশের বিভিন্ন ওয়েব পোর্টাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...