সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

# মণিপুরের অশান্তির পেছনে কোন শক্তির হাত ?

কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতোই হবে দশা! প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না করলে নিজের রাজ্যেই শরণার্থী হতে হবে তাঁদের! এমনটাই আশঙ্কা করছেন মণিপুরের সংখ্যাগুরু মেতেই জনগোষ্ঠীর একাংশ।

১৮ মে ২০২৩ ,বৃহস্পতিবার মণিপুর (Manipur) হিংসা নিয়ে দিল্লিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘ওয়ার্ল্ড মেইটি কাউন্সিল’। সেখানে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট নবশ্যাম হেইগ্রুজাম বলেন, “মণিপুরে যে সমস্ত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে তা পূর্বপরিকল্পিত। আজ আমাদের দশা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতোই। অথছ, মেতেই এবং নাগারাই মণিপুরের ভূমিপুত্র। নিজের রাজ্যেই আমরা গণহত্যার মুখে দাঁড়িয়ে। এনিয়ে বারবার সরকারকে জানিয়েছি।” কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়ে তিনি আরও বলেন, “এই দুঃসময়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর আমাদের সঙ্গে দেখা করার সময় হল না।”

মণিপুরের মেইটি হিন্দুরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।সেজন্য দীর্ঘদিন করেই তাদেরকে Scheduled Tribes তালিকাভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন তারা।তাদের এই দাবি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর হাইকোর্ট।এই নির্দেশে মেইটিরা উজ্জীবিত হলেও আদালতের নির্দেশের পরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরে । কিন্তু এর বিরোধিতা শুরু করে খ্রীষ্টান আদিবাসীরা। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায় All Tribal Students’ Union of Manipur
এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে অন্তত দুজন মারা গিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অনেকে । একাধিক জায়গায় গুলি চলে, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

কেন ST-র দাবি মেইটিদের ?

২০১৩ সাল থেকেই তাদের এসটি করার দাবি জানাচ্ছে মেইটিরা। যদিও এই দাবির বিরোধিতা করে আসছে সেখানের আদিবাসী-জনজাতির লোকজন। মেইটিরা জানিয়েছে, শিক্ষা বা কাজের জন্য নয়, নিজেদের জমি, পরিচিতি এবং সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্যই ওই দাবি করছে তারা। মায়ানমার এবং অন্য এলাকা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতেও চাইছে তারা।

এই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। ওই দাবি মেনে মেইটিদের তপশীলি উপজাতি করা যায় কীনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনার জন্য মণিপুর সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত। তাতেই খেপে যায় আদিবাসীরা। তাদের প্রভাব কমে যাবে বলে আশঙ্কা করেছে আদিবাসীরা। তাই ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে তারা পথে নামতেই অগ্নিগর্ভ হয়েছে মণিপুর।

আগেও আপত্তি আদিবাসীদের

আগেও মেইটিদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে আদিবাসীরা। সেখানের জঙ্গল এবং জলাশয় সমীক্ষা করার কথা বলেছে মণিপুর সরকার। তারও বিরোধিতা করে আদিবাসীরা। এবার মেইটিদের নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করার নির্দেশ দিতেই ফের রাস্তায় নেমেছে আদিবাসীরা। তাতেই উত্তপ্ত হয়েছে মণিপুর।

মণিপুরের বর্তমান অশান্তির ধরণ ও কারণ ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়া পর সিএএ-এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠার সাথে মিলে যাচ্ছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে শুধু মাত্র আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়ে ছিল । কিন্তু রটিয়ে দেওয়া হলো নাগরিকত্ব চলে যেতে পারে সংখ্যালঘুদের ।এই আশঙ্কা থেকে হিংসাত্মক বিক্ষোভ শুরু করে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় একাংশ সংগঠিত হয় শাহিনবাগের মতো ভারত বিরোধী আন্দোলন। মণিপুরেও তাই মেইটি হিন্দুদের Scheduled Tribes নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর হাইকোর্ট। তাতে Scheduled Tribes আইনের সুবিধা ভোগী খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী নাগা, কুকিদের কোন রকম সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সোজা কথা সহজ ভাবে বললে বলতে হবে মণিপুরের বর্তমান অশান্তি ও ২০১৯ এর সিএএ নিয়ে অশান্তির মূল কারণ একটিই,  যত সংগত যুক্তিই থাক না কেন ভারতে হিন্দুদের কোন ভাবেই কোন রকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে শক্তিশালী হতে দেওয়া যাবে না এবং সেরকম ঘটনা ঘটলে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ‘হকের লড়াই’ লড়ছে মেইটিরা। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি হলেও তারা ক্রমে আগ্রাসনের শিকার হয়ে আসছে। পাহাড়ে বা মূলত কুকি-ঝাওদের এলাকায় মেইটিরা জমি কিনতে পারে না। অথচ, উপত্যকায় বা মেইটিদের জায়গায় জমি কেনার অধিকার রয়েছে কুকিদের। বিগত দিনে, মায়ানমার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়ে পাহাড়ে নিজেদের জনসংখ্যা বাড়াতে তৎপর হয়েছে কুকি-ঝোমি ও নাগারা।

তবে সমস্ত কারণের পিছনে আরো কিছু কারণ থাকে। মণিপুরের ক্ষেত্রে সেই কারণ গুলি দেখে নেওয়া যাক----  


1.মণিপুর বর্তমানে একটি গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে ,সহিংসতা ঘটছে সর্বত্র , তবে এতে চূড়ান্তভাবে মার খাচ্ছে হিন্দুধর্মবলম্বীরা এবং বিজয়ী হচ্ছে চার্চ অর্থাৎ খ্রিস্টানরা। কিভাবে? 
2. প্রথমে নামটির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত - মণিপুর। কারণ এটি সত্যিই একটি মণি - একটি রত্ন - উপর থেকে ভৌগোলিকভাবে রত্নের মতো দেখায়। চার দিক থেকে (100%) এটি পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত এবং কেন্দ্রে একটি নিচু নদী উপত্যকা।
 3. উপত্যকাটিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মেইটি হিন্দুরা বসবাস করে । অন্যদিকে পাহাড়গুলোতে যারা বসবাস করে তাদের প্রায় 100% খ্রিস্টান উপজাতি । তাই মণিপুরে হিন্দুরা আক্ষরিক অর্থেই  ভৌগোলিকভাবে অবরুদ্ধ।
 4. উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে বেশিরভাগই নাগা খ্রিস্টান এবং দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পূর্বে বেশিরভাগই কুকি খ্রিস্টান (কুকি বিভিন্ন মিজো উপজাতিদের একটি সাধারণ শব্দ – যারা সবাই খ্রিস্টান।)
 5. পার্বত্য উপজাতিদের জমি আইন দ্বারা 'উপজাতীয় ভূমি ' হিসাবে সুরক্ষিত যা অন্যদের সেখানে বসতি স্থাপনে বাধা প্রদান করে। এই পাহাড়ের বেশিরভাগ বাসিন্দা খ্রিস্টান হওয়ায় এই ভূমিগুলি কার্যত খ্রিস্টানদের জন্যই সুরক্ষিত যেখানে হিন্দুদের উপস্থিতি খুব সামান্য। 
6. হিন্দু অধ্যুষিত উপত্যকার আইন ভিন্ন কারণ মেইটি  হিন্দুরা বৈষ্ণব হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত স্বাভাবিক ভাবেই ST-এর ভুমি সুরক্ষা আইনের অধীনে শ্রেণীবদ্ধ নয়। তাই তাদের জমিতে যে কেউ এসে বসতি স্থাপন করতে পারে এবং বিশেষ করে পার্বত্য খ্রিস্টানরা যে কোনো সময় সেখানে এসে বসতি স্থাপন করতে পারে। এর ফলে সংখ্যাগত, সুরক্ষাগত দিক থেকে হিন্দুরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং ভারসাম্যহীন পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে। 
7. উপত্যকাটি , যা প্রধানত মেইটি হিন্দু অধ্যুষিত এবং ওরা সংরক্ষিত খ্রিস্টান ধর্মানম্বীদের থেকে সুরক্ষিত নয়, এবং উপত্যকার হিন্দুদের অ-এসটি বা সাধারণ হিন্দু বলা হয় কারণ এরা বৈষ্ণব হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত এবং আইন গত দিক থেকে ভূমি সুরক্ষার বাইরে।
 8. হিন্দুদের জনসংখ্যা ক্রমহ্রসমান হওয়ার জন্য মণিপুরের জনসংখ্যার পরিস্থিতি খুবই অস্থিতিশীল । বর্তমানে 49% হিন্দু এবং সানমাহি (হিন্দু ধর্মের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ উপজাতীয় পৌত্তলিক ধর্ম), 51% খ্রিস্টান এবং মুসলিম (42% খ্রিস্টান এবং বাকি মুসলিম)।
 9. মণিপুরের মুসলমানদের বলা হয় মেইতেই পাঙ্গাল (পাঙ্গাল মানে মেইটি ভাষায় মুসলমান)। তাদের বেশিরভাগেরই জন্ম মুঘল সৈন্য এবং মেইটি মহিলাদের বিবাহ সম্পর্ক থেকে। আসামের দক্ষিণের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা থেকে যাওয়া মুসলমান এবং বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরাও  এই সংখ্যা আরো দ্রুত বৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। 
 10. মণিপুরের জনসংখ্যাগত পরিস্থিতি : উপত্যকার প্রায় 15% ভূমি যেখানে 49% হিন্দু (সানমাহি সহ) এবং 9% মুসলমান বাস করে এবং আশেপাশের প্রায় 80-85% পাহাড় যেখানে 42% খ্রিস্টান বসবাস করে। 
11. কিন্তু হিন্দুরা এসটি আইনে সুরক্ষিত খ্রিস্টান ভূমিতে বসতি স্থাপন করতে পারে না, এর উল্টোটি সম্ভব এবং সর্বদাই ঘটছে । এটি সাধারণ ভাবে ঘটা সম্ভব নয় কারণ এই খ্রিস্টানরা অন্যান্য  অখ্রিস্টান উপজাতিদের সাথে  সহিংস আচরণ করে । মিজোরামে বসতি স্থাপনকারী একটি হিন্দু উপজাতিকে হিংসাত্মক উপায়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং সেই হিন্দুরা ত্রিপুরায় আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। 
12. তাই ধীরে ধীরে পাহাড়ের খ্রিস্টানরা এবং পাঙ্গাল মুসলমানরা মেইতি হিন্দুদের তাদের বাড়িঘর ও জমি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতি বছর এবং সময়ের সাথে মণিপুরে হিন্দুদের হার কমছে। আর খ্রিস্টান ও মুসলমানদের হার বাড়ছে। 
13. আদমশুমারির তথ্য বলছে মণিপুরের বেশিরভাগ অংশে হিন্দু শুন্য করার চক্রান্ত সংগঠিত হচ্ছে এবং মূল ভূখণ্ডের হিন্দুরা তাদের সাহায্য করার জন্য জেগে না উঠলে কাশ্মীরের মতো এই উপত্যকা থেকেও এটি বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাবে ।
 14.1901 সালে হিন্দু ছিল 96%, 1911 সালে 95%, 1921 সালে 94%, 1931 সালে 92%, 1941 সালে 89%, 1951 সালে 81%, 1961 সালে 74%, 1971 সালে 67%, 1971 সালে 67% 1991 সালে %, 2001 সালে 54%, 2011 সালে 52%, 2021 সালে 49%। 
 15. স্পষ্টতই , স্বাধীনতার পরে হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার গতি তীব্র হয়েছে এবং 2020 সালে হিন্দুরা 50% এর নিচে নেমে গেছে। যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে এবং মেইটিরা ধর্মান্তরিত হতে শুরু করে, মণিপুর খুব শীঘ্রই 100% খ্রিস্টান এলাকায় পরিণত হবে। বৃহত্তর হিন্দু সমাজ যদি তাদের সাহায্যে এগিয়ে না আসে তাহলে শীঘ্রই সেই দিন দেখতে হবে। 
16. সহিংস হয়ে উঠা অবশ্যই এক কোন উপায় নয় এবং মেইটি হিন্দুরা সহিংসভাবে প্রতিরোধ গড়ছে তবে এটাও মূল বিষয় নয়। কুকি খ্রিস্টান সহিংসতাকে হিন্দু সহিংসতার সাথে তুলনা করা মানে মূল ভূখণ্ডে হিন্দু ও মুসলমানদের দাঙ্গার সাথে তুলনা করা ।
 17. হিন্দুরা অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলছে কিন্তু তারা কি কখনো দাঙ্গা শুরু করে ? আর হিংসার বলি ও সহিংস আক্রমনকারীদের সমানভাবে দোষারোপ করা কি ঠিক? #মায়ানমারের শান্তিপূর্ণ বৌদ্ধ ও সহিংস রোহিঙ্গাদের সমানভাবে দোষারোপ করা কি ঠিক? ইহুদি এবং নাৎসিদের এক পাল্লায় তুলে বিচার করা কি ঠিক? 
18. হ্যাঁ মেইটিরাও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে  । কিন্তু যখন কুকি বা নাগা খ্রিস্টানরা মেইটি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যখন সহিংসতা চালায়,তখন ওরা সর্বদা বিষয়টিকে খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং চার্চের এলাকা দখলের দৃষ্টিতে দেখে । অন্যদিকে হিন্দুদের দৃষ্টিভঙ্গি হয় স্থানীয় ও উপজাতীয়দের মধ্যে লড়াই হিসেবে।
 19. সুতরাং এই ধরনের প্রতিটি সহিংসতা এবং দাঙ্গার ফলাফল , চার্চের আরও সম্পত্তি, আরও বেশি দখলকৃত জমি, আরও 'বিশুদ্ধ খ্রিস্টান ভূমি' এবং আরও বেশি খ্রিস্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং এই ধরনের প্রতিটি সহিংসতার ফল , হিন্দুদের কম জমি, কম সম্পত্তি, কম হিন্দু জনসংখ্যা । 
20.মণিপুরের ক্ষেত্রে  আমরা কি এখনও বলতে পারি যে এটা হিন্দু-খ্রিস্টান লড়াই নয়?
 21. কেউ কেউ বলেন যে এটি কেবল উপজাতীয় সহিংসতা এবং কিছু স্থানীয় কারণও রয়েছে। অবশ্যই এটি একটি উপজাতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং স্থানীয় কারণও আছে। তবে এটাই সম্পূর্ণ গল্প নয়। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ শুরু হয় সরকারের তরফ থেকে অবৈধ গীর্জা উচ্ছেদ ও আফিম চাষ ধ্বংস কে কেন্দ্র করে । 
22. বেশিরভাগ কুকি খ্রিস্টানরা আফিম চাষ করে কারণ তাদের জমিতে অন্য কারো হাত দেওয়ার অধিকার নেই । কুকি খ্রিস্টানরাঅবৈধ মাদক ব্যবসায় জড়িত। সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে তারা সাধারণ মেইটি  হিন্দুদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। 
23. মিডিয়া এটিকে উপজাতীয় সংঘর্ষ  হিসাবে তুলে ধরছে এবং কিছু হিন্দুও এই তত্ত্বে বিশ্বাস করতে পারে তবে খ্রিস্টানরা এটিকে একটি পবিত্র যুদ্ধ, যীশু খ্রিস্টের ভাবনা প্রসারের জন্য  একটি যুদ্ধ হিসাবে দেখছে এবং সেই কারণেই তারা একের পর এক অ-খ্রিস্টানদের জমির দখল করে চলেছে। 
24. এটাই আমাদের শেখা দরকার। হিন্দুরা এসব সংঘর্ষকে স্থানীয় ও উপজাতি হিসেবে দেখে। খ্রিস্টান ও মুসলমানরা একে পবিত্র যুদ্ধ ও জিহাদ হিসেবে দেখে। আর তাই হিন্দু লাভ ও সহিংসতার প্রভাব কখনই স্থায়ী হবে না, খ্রিস্টান সহিংসতার প্রভাব চিরস্থায়ী হয়ে থাকে । 
25. তাই হিন্দুরা সবসময় সভ্যতা গতভাবে হেরে যায় এবং খ্রিস্টান এবং মুসলমানরা সবসময় সভ্যতার দিক থেকে জয়ী হয়। সেজন্য ধীরে ধীরে হিন্দু ধর্ম দুর্বল হয়ে  যাচ্ছে। 
26. এখনও পর্যন্ত মেইটি হিন্দুরা তাদের প্রতিরোধ ধরে রেখেছ , কিন্তু বাকি হিন্দুরা যদি তাদের ব্যাপারে উদাসীন থাকে তাহলে শীঘ্রই বা কিছুদিন পরে তা ভেঙে পড়বে।
 27. কুকিরা শুধু ভারতেই নয়, তাদের অনেক সম্পর্কিত উপজাতি মায়ানমারেও রয়েছে এবং সেখানেই তারা পাকিস্তান ও চীন থেকে প্রশিক্ষণ নেয়। বিদেশী হস্থক্ষেপের  বিষয়টি উত্তর-পূর্বে সর্বদাই বড় চিন্তার কারণ। 
 28. এই সরকার মনোযোগ দিতে শুরু করেছে কিন্তু সাধারণ হিন্দুদেরই উত্তর-পূর্ব নিয়ে আগ্রহী হওয়া দরকার। আমরা যদি এই সংঘর্ষগুলিকে হিন্দু-খ্রিস্টান সংঘর্ষের লেন্স দিয়ে দেখতে শুরু করি এবং দীর্ঘ সভ্যতা যুদ্ধের এক একটি পর্যায় হিসাবে দেখি, তখনই প্রকৃত ভারত  জয়ী হতে শুরু করবে। 
           (ঋণ স্বীকার-- শ্রী পঙ্কজ সাক্সেনা)

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...