পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া কে কেন নিষিদ্ধ করা হল
            ভারতে ইসলামী শাসন জারির চেষ্টা
অপারেশন অক্টোপাসের দ্বিতীয় রাউন্ডে, NIA, ATS এবং রাজ্য পুলিশ PFI-এর মিশন ২০৪৭ সম্পর্কিত এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছে যা এই সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞার কারণ বলে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতকে গৃহযুদ্ধে ও অশান্তি সৃষ্টি করা, ২০৪৭ সালের মধ্যে অপারেশন গাজওয়া-ই-হিন্দ সম্পূর্ণ করা এবং ভারতে ইসলামী শাসন জারি করা।
হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচার
গোয়েন্দা সূত্রে বেশ কিছু বড় রহস্য সামনে এসেছে। PFI তহবিল যেগুলি এখনও পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করেছে এন আই এ, তার একটা বড় অংশ উপসাগরীয় দেশগুলিতে বসবাসকারী মুসলমানদের কাছ থেকে এসেছে। কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং তুরস্কে পিএফআই-এর তহবিল ও নেটওয়ার্কেও হদিশ মিলহেছে। PFI উপসাগর থেকে ভারতে অর্থ পাচারের জন্য কয়েকটি হাওয়ালার ব্যবহার ও সামনে এসেছে।  কর্ণাটক এবং কেরালা ছিল পিএফআই-এর মানি ব্যাঙ্ক এবং এখান থেকে টাকা সারা ভারতে ছড়িয়ে দেওয়া হত। আর সেই টাকাতেই চলত দেদার বে-আইনি কার্যকলাপ। 
   অ্যাকাউন্টে অবৈধ লেনদেন
শুধু তাই নয়, পিএফআই-এর তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকের তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে পিএফআই হাওয়ালা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করতে স্থানীয় লোকদের নাম ব্যবহার করত। অর্থাৎ উপসাগরীয় দেশ থেকে যে অর্থ এসেছে তা স্থানীয় অনুদান হিসেবে দেখানো হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা যখন সেই সব ঠিকানা ক্রস-ভেরিফাই করে, তখন সব তথ্য সামনে উঠে আসে। রিহ্যাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এটিকে পিএফআই-এর একটি দাতব্য সংস্থা হিসাবে বিবেচনা করা হত, তবে তদন্তে দেখা গেছে যে এই রিহ্যাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনটি পিএফআই-এর তহবিল সংগ্রহকারী শাখা যেখানে সৌদি আরব থেকে প্রচুর  কালো টাকা অ্যাকাউন্টে জমা হত।
ভারতবিরোধী অ্যাজেন্ডা
PFI এবং এর রাজনৈতিক সংস্থা SDPI-এর অনেক সিনিয়র নেতা কিছু NGO-এর সঙ্গে তুরস্কে যেতেন। তুরস্ক থেকে ভারতবিরোধী অ্যাজেন্ডা স্থির করা হয়। তুরস্কে, পিএফআই-এর সদস্যরা সিরিয়ায় সন্ত্রাসে যে সব সংস্থা থেকে হাওলার মাধ্যমে টাকা আসত তাদের সঙ্গে দেখা করত। 
          ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা
শুধু তাই নয়, এন আই এ-এর কাছে পিএফআই এবং এসডিপিআই-এর সঙ্গে যুক্ত এমন কিছু মানুষের তালিকা রয়েছে যারা ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছে। সূত্রের খবর, পিএফআই-এর অ্যান্টি-ইন্ডিয়া ব্রিগেড এই অ্যাজেন্ডায় কাজ করছিল, কিন্তু অপারেশন অক্টোপাস প্রতিটি পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়।
ভারতের পপুলার ফ্রন্ট নিজেকে একটি নব্য-সামাজিক আন্দোলন বলে অভিহিত করে যা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, দলিত এবং সমাজের অন্যান্য দুর্বল অংশের লোকদের ক্ষমতায়নের নামে ভারতবিরোধী ক্রিয়া কলাপে সরাসরি নামানোর  জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এর শিকড় খুঁজে পায় নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন সিমি (স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া)। 1992 সালে শ্রী রামজন্ম ভূমির জায়গায় বিতর্কিত কাঠামো ভেঙ্গে ফেলার পর অনেক ইসলামিক সংগঠনের আবির্ভাব ঘটে। এই সংগঠনগুলি ভারতের মুসলমানদের অনুভূতি শোষণ এবং তাদের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য তাদের সংগঠিত করার দিকে মনোনিবেশ করেছিল। এরকম একটি সংগঠন ইসলামিক সেবা সংঘ (আইএসএস) আলেম আব্দুল নাসের মাদানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি কোয়েম্বাটোর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান এবং ভারত সরকার আইএসএস নিষিদ্ধ করেছিল। আইএসএস-এর বেশিরভাগ নেতা তখন ইসলামপন্থী সংগঠন সিমি-তে চলে যান যা পরবর্তীতে ২০০১ সালে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। সিমি নিষিদ্ধ হওয়ার পর এই নেতারা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফ্রন্ট নামে আরেকটি সংগঠন গড়ে তোলেন। 2006 সালে, এই সংগঠনটি আরও দুটি সংগঠনের সাথে একীভূত হয়ে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া গঠন করে। এর অনেক ফ্রন্টলাইন নেতা কেরালার এবং অতীতে সিমির একটি অংশ ছিল।#
সাধন কুমার পাল 
(বিভিন্ন ওয়েব পোর্টাল থেকে তথ্য সংগ্রহীত হয়েছে)  

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন