সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হিন্দুসাম্রাজ্যদিনোৎসব :এক কন্ঠে বলো জয়তু শিবাজি জয়

                                                                       

                                            
                                  শিবাজীর চরিত্র-কথা 
       সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠা জাতির অভ্যুত্থান ভারত ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। তিনি ছিলেন একজন কুশলী সামরিক কৌশলবিদ।তিনি গেরিলা যুদ্ধের ধারণার সূচনা করেন।শিবাজীর সাম্রাজ্য স্থাপন ও তাঁর রাজ্যাভিষেক ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিগদর্শনের সূচনা করে। তার মধ্যে হিন্দু রাজনীতি ও স্বদেশনীতির সমস্ত শ্রেষ্ঠ গুণগুলোই প্রতিভাত হয়েছিল। তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, স্বদেশনিষ্ঠ, দৃঢ়, সৎ, সক্ষম প্রশাসক। তিনি ছিলেন মা ভবানী এবং নিজের মাতৃদেবী জীজা বাঈয়ের প্রতি অনুগত ও একান্ত শ্রদ্ধাশীল। শত্রুর প্রতি তিনি ছিলেন নির্মম, কিন্তু মহিলা, শিশু এবং নিজেদের লোকের প্রতি ছিলেন দয়াল। সমস্ত ধর্মের প্রতি তিনি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। সমস্ত ধর্মগ্রন্থের প্রতি তাঁর ছিল অসীম শ্রদ্ধা। তিনি তার গুরু স্বামী রামদাসের প্রতি ছিলেন অসীম শ্রদ্ধাশীল। তিনি গুরু রামদাসের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য শাসন করতেন।তিনি ছিলেন কর্মযোগের উপর আশ্রিত এক আদর্শ নৃপতি। তার গুরু রামদাস সর্বদা তাকে আদর্শ রাজা বলে উল্লেখ করতেন। আর শিবাজীও সর্বদা গুরুর উপদেশ অনুযায়ী রাজকার্য করতেন। 

    প্রখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার যদুনাথ সরকার বলেছেন, “একতাহীন, নানা খণ্ডরাজ্যে বিছিন্ন, মুসলমান রাজার অধীন, এবং পরের চাকর মারাঠাদের ডাকিয়া আনিয়া শিবাজী প্রথমে নিজ কার্যের দ্বারা দেখাইয়া দিলেন যে তাহারা নিজেই নিজের প্রভু হইয়া যুদ্ধ করিতে পারে। তাহার পর, স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করিয়া তিনি প্রমাণ করিলেন যে বর্তমানকালের হিন্দুরাও রাষ্ট্রের সব বিভাগের কাজ চালাইতে পারে; শাসন-প্রণালী গড়িয়া তুলিতে, জলে-স্থলে যুদ্ধ করিতে, দেশে সাহিত্য ও শিল্প পুষ্টি করিতে, বাণিজ্যপোত গঠন ও পরিচালন করিতে, ধর্ম রক্ষা করিতে, তাহারা সমর্থ; জাতীয় দেহকে পূর্ণতা দান করিবার শক্তি তাহাদের আছে। শিবাজীর চরিত্র-কথা আলোচনা করিয়া আমরা এই শিক্ষা পাই যে, প্রয়াগের অক্ষয় বটের মতো হিন্দুজাতির প্রাণ মৃত্যুহীন, কত শত বৎসরের বাধা-বিপত্তির ভার ঠেলিয়া ফেলিয়া আবার মাথা তুলিবার, আবার নূতন শাখাপল্লব বিস্তার করিবার শক্তি তাহাদের মধ্যে নিহিত আছে। ধর্মরাজ্য স্থাপন করিলে, চরিত্রবলে বলীয়ান হইলে, নীতি ও নিয়মানুবর্তিতাকে অন্তরের সহিত মানিয়া লইলে, স্বার্থ অপেক্ষা জন্মভূমিকে বড়ো ভাবিলে, বাগাড়ম্বর অপেক্ষা নীরব কার্যকে সাধনার লক্ষ্য করিলে,জাতি অমর অজেয় হয়।”

      শিবাজী মহারাজের এই রাজ্যাভিষেকের তাৎপর্য ভারতীয় এবং হিন্দু সমাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যযুগের মুসলমান শাসনের দীর্ঘ তমসাকাল কাটিয়ে আবার ধুমধাম করে এক হিন্দু রাজার রাজ্যাভিষেক হিন্দুজাতির মধ্যে এক নতুন আশা ও ভরসার সঞ্চার করেছিল। 
                           মহারাষ্ট্রে শিবাজী উৎসব 
        লোকমান্য তিলক রায়গড় দূর্গ সংস্কার কেন্দ্র করে শিবাজি উৎসব প্রচলন করেছিলেন। তিলক বলেছিলেন রায়গড় দূর্গ ছাড়া মহারাষ্ট্রে আর কোন স্থান এই উদ্দেশ্যের পক্ষে বেশী উপযোগী বলে বিবেচিত হতে পারে না। এর পরের বক্তৃতায় তিলক স্পষ্টভাবেই বলে দিলেন আফজল হত্যায় শিবাজি(Shivaji) কোনও পাপ করেননি,ন্যায্য পথই তিনি গ্রহন করেছিলেন। তিনি বললেন ঘরে যদি দস্যু ঢোকে এবং তাকে অন্য উপায়ে জব্দ করার বিশেষ অসুবিধা থাকে, তখন তাকে পুড়িয়ে মারাই যুক্তিযুক্ত । 
       
    শিবাজী উৎসব প্রনয়নের পিছনে একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ছিল।১৮৯৩ সাল। বোম্বাই প্রদেশে ঘটে উৎকট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সংখ্যাগুরু হওয়া সত্বেও মুসলমানদের হাতে হিন্দুদের যথেষ্ট নিগ্রহ সহ্য করতে হয়। দেখা যায়, অন্য সব শক্তি থাকা সত্বেও সন্মিলিতভাবে বিপক্ষের সঙ্গে শক্তি-পরীক্ষায় পরাণ্মূখতার এক অতিশয় দূর্বলতা।শুরু হয় আত্মানুসন্ধান। এই অবস্থার প্রতিকারের জন্য একটা সর্বসাধারণের পূজার কথা মাথা চাড়া দিল। সর্বসিদ্ধিদাতা গণেশ পূজা অনাড়ম্বরভাবে মহারাষ্ট্রে প্রচলিত ছিল। দাঙ্গার পরবৎসর ,১৮৯৪ সাল পূজার কর্মসূচী বেশ পাকা হয়ে উঠল। ১৮৯৫ সাল নাগাদ এটা বেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠল। গণপতিকে মহারাষ্ট্রীরা গজাসুর বিজয়ী মনে করে। তিলক ও শিবরাম পরঞ্জপের উদ্দীপনায় সকলকে এক করে সর্ব্বজনীন উৎসবে পরিণত করা হয় গণেশ-পূজা। 

                          বাংলায় শিবাজী উৎসব
    ইতিহাস বলছে ১৮৯৬ নভেম্বর ২২-এ হীরেন্দ্রনাথকে সভাপতি করে কলকাতায় শিবাজি উৎসব পালন করার আলোচনা হয়েছিল। বাংলায় ১৯০২ সালে অনুষ্ঠিত শিবাজি উৎসব সাধারনের দৃষ্টি বিশেষ ভাবে আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়। বিপিন চন্দ্র পাল ১৯০২ সালে শিবাজি উৎসব উপলক্ষে যে বক্তৃতা রাখেন, তাতে উল্লেখ করেন যে মহারাষ্ট্র -শক্তি-জোট সমস্ত হিন্দুর অন্তর্নিহিত রাজনৈতিক সম্ভাব্য অভ্যুত্থানের সূচনা করছে। এই প্রসঙ্গে বেঙ্গলী পত্রিকার সম্পাদকীয় উল্লেখ্য- “ভারতে শিবাজি উৎসব সকল জাতি ও শ্রেনীর যে একতার সুর বাঁধতে সচেষ্ট, সেটাই ইংরেজ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৃতিস্তম্ভ বলে মনে করা যেতে পারে। 

“ ১৯০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন শিবাজি উৎসব কবিতা । ১৩১১ সালে যুগপৎ বঙ্গদর্শন ও ভারতী-তে সেই কবিতা প্রকাশিত হয়।কবি লিখলেন 
 “মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালী, এক কন্ঠে বলো 
জয়তু শিবাজি 
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙ্গালী ,এক সঙ্গে চলো 
মহোৎসবে সাজি।
 আজি এক সভাতলে ভারতের পশ্চিম -পূরব
 দক্ষিণে ও বামে, 
একত্রে করুক ভোগ একসাথে একটি গৌরব 
এক পুন্য নামে।"
  
   ১৯০৬ জুন ৪ঠা থেকে ১২ই, ফিল্ড এন্ড এ্যাকাডেমী মাঠে শিবাজির আরাধ্য দেবী ভবানীর বিরাট মূর্তি ধুমধামের সঙ্গে পূজা করা হয়। ৫ই জুন ময়দানে এক বিরাট সভায় তিলক উপস্থিত হয়ে বক্তৃতা দেন। ৭ই জুন সুরেন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে মহারাষ্ট্রিয় নেতৃত্বকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়। ১৬ই অক্টোবর বঙ্গ-বিভাগ কার্য্যে পরিণত করা হলে, বাঙ্গলায় অশান্তির আগুন জ্বলে উঠলো। তখন উগ্র কর্মপন্থা আবিস্কার ও তার প্রয়োগের জন্যে বাঙ্গালী যুবকেরা মেতে উঠলো। শিবাজি-উৎসব তার উদ্দেশ্য পূরণে সার্থক প্রেরনার উৎস হয়ে উঠেছিল। সভা-সমিতিতে করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করো হল ঘরে ফিরে গিয়ে নিচেষ্ট বসে থাকার দিন শেষ । সুতরাং দ্বন্ধের উপযুক্ত ক্ষেত্র বুঝে ইংরেজের সঙ্গে সংগ্রামের জন্য তারা প্রস্তুত হয়ে উঠল।
     শিবাজি উৎসবই কুরুক্ষেত্র-সমরের মহাশঙ্খ ধ্বনি। বাঙ্গলায় বিপ্লবের ঘাঁটি তৈরি হয়েছিলো অরবিন্দ, যতীন্দ্রনাথ, পি মিত্র, ওকাকুরা ও সরলাদেবীর যুক্তপ্রচেষ্টায়। ১৯০২ সালে শিবাজি (Shivaji) ঊৎসব বাঙ্গালীর কানে ঝংঙ্কার দিলো নতুন উদ্যমের।
                           রাজ্যাভিষেকের ইতিহাস
         ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠিত হবে বলে স্থির হয়। বিরাট সমারোহের উপযোগী নানা ধরনের জাঁকজমক পূর্ণ সজ্জায় রাজধানী রায়গড় সুসজ্জিত করা হয়। সেযুগে ভোসলে বংশ শূদ্র বলে গণ্য হতো। ভিন্ন অন্যজাতের লোক রাজা হতে পারে না।এই অবস্থায় শিবাজীর মুন্সী বালাজী আবজী মারাঠা জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ পণ্ডিত কাশী বিশ্বেশ্বর ভট্ট (ডাকনাম গাগা ভট্ট)-কে রাজি করালেন। গাগা ভট্ট শিবাজীর ক্ষত্রিয়ত্ব প্রমাণে এবং তার আদিপুরুষরা যে সূর্যবংশীয় চিতোরের মহারাণার বংশ তা লিখিতভাবে জানিয়ে দিলেন এবং অভিষেকক্রিয়ায় নিজে প্রধান পুরোহিত হিসেবে কাজ করতে সম্মত হলেন। ভারতবর্ষের সকল প্রদেশের পণ্ডিতগণ এই রাজ্যাভিষেকে আমন্ত্রিত হলেন। এগারো হাজার ব্রাহ্মণ ও তাদের স্ত্রী-পুত্র নিয়ে পঞ্চাশ হাজার লোক রায়গড় দুর্গে হাজির হলো অভিষেকের পূর্বে প্রয়োজনীয় সব অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলে শিবাজী প্রথমে নিজের গুরু রামদাস স্বামী এবং মাতা জীজা বাঈকে বন্দনা করে তাঁদের আশীর্বাদ গ্রহণ করলেন।
     জ্যেষ্ঠ মাসের শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে ইংরাজি ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুন, খুব ভোরে উঠে শিবাজী প্রথমে মঙ্গলস্নান ও কুলদেব-দেবী-মহাদেব ও মা ভবানীর পূজা, কুলগুরু বালম ভট্ট, পুরোহিত বিশ্বেশ্বর ভট্ট এবং অন্যান্য পণ্ডিত ও সাধুদের বন্দনা ও বস্ত্রালঙ্কার দান করলেন। তারপরে নানা অনুষ্ঠানাদির পরে তিনি সিংহাসনে উপবেশন করলেন। উপস্থিত ব্রাহ্মণগণ উচ্চৈঃস্বরে শ্লোক পাঠ করে রাজাকে আশীর্বাদ করলেন। প্রথমে গাগা ভট্ট, তারপরে অষ্টপ্রধান ও ব্রাহ্মণগণ মহারাজাকে আশীর্বাদ করলেন। পণ্ডিত গাগা ভট্ট গঙ্গা-সিন্ধু-যমুনা-গোদাবরী-কৃষ্ণা ও কাবেরী নদীর পবিত্র জল তাঁর মস্তকে সিঞ্চন করলেন এবং অভিষেকমন্ত্র পাঠ করলেন। তার মাথার উপর রাজছত্র ধরা হলো। তাকে ‘শককর্তা’, ক্ষত্রিয় কুলবন্তস’এবং “ছত্রপতি’উপাধিতে ভূষিত করা হলো। এইভাবে তাঁর রাজ্যাভিষেক সম্পন্ন হয়।##
                                সাধন কুমার পাল

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...