সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যন্ত্রণায় কাতর বাংলাদেশ

 পোষা কালসাপের সহস্র ছোবলে দেশান্তরি হাসিনা

                যন্ত্রণায় কাতর বাংলাদেশ
                             সাধন কুমার পাল
২৬ আগষ্ট ২০২৪ সংখ্যায় লেখাটি প্রকাশিত 

গত ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার কোচবিহার শহরে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিলেন সেখানকার নাগরিক সমাজ। সোশ্যাল মিডিয়াতে সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছিল এই মিছিলে যোগদানের জন্য। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগে দেখা গেল সেই জমায়েত স্থান পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। মিছিলে যোগদানের উদ্দেশ্য নিয়ে যারা আসছে তাদের সঙ্গে সঙ্গে ধরে নিয়ে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশিদের জন্য কোনোরকম বিক্ষোভ মিছিল  বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিটি করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী সমাজ শীতঘুমে থাকলেও এই মিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অনেকেই। তাঁর মধ্যে একজন শিক্ষক সমূহ কর্মকার ফেসবুক পোস্টে লিখলেন, 'যাক, গ্রেপ্তার বরণ করে ফেসবুক পোস্টে লিখলেন,'যাক কিছুটা হলেও শাস্তি পেলাম'।

বাংলাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষোভ সর্বত্র। ওই দেশে অনেকেরই আত্মীয়-স্বজন আছেন তারা চরম অমানবিকতার শিকার হচ্ছেন, অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মিডিয়ায় বাংলাদেশের গণভবনের লুটের দৃশ্য দেখে অনেকের মনে ২০২১ সালের পোস্ট পোল ভায়োলেন্সের লুটপাটের অসহনীয় যন্ত্রণার দৃশ্য ভেসে উঠেছে। সেজন্য বাংলাদেশের ঘটনার জেরে পশ্চিমবঙ্গেরও আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। রাস্তায় বেরিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করলে হয়তো সেই ক্ষোভের কিছুটা হলেও বহিঃপ্রকাশ ঘটে অনেক মানুষই একটু হালকা অনুভব করতেন। কিন্তু না, এ রাজ্যে প্যালেস্তাইন নিয়ে মিছিল করা যাবে, গাজা নিয়ে মিছিল করা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দু হত্যা নিয়ে মিছিল করা যাবে না। এর থেকে মনে হয় জামাতের সেই স্লোগান 'বাংলাদেশ ট্রেলার হ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ মে ফাইনাল বাকি হ্যায়'সত্যি হতে বোধহয় খুব বেশি দিন লাগবে না।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে তালিবানি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনা সরকারের পতন ঘটানোর পর বাংলাদেশের স্রষ্ঠা শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিগুলোও ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হলো। সেই সঙ্গেই ঘটেছে নির্বিচার হিন্দু হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, খুন, ধর্ষণ, মন্দির ভাঙার ঘটনা। ১৯৭১ সালেও বাংলাদেশ অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান একই দৃশ্য দেখেছে। সে সময় পাকিস্তানের খান সেনা হিন্দুদের উপর নারকীয় হত্যালীলা চালিয়ে ছিল। পাকিস্তানি শাসকদের বর্বরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠা মুসলমানরাও সেই হত্যালীলার শিকার হয়েছিলেন। ১৯৪৭-এর পর পাকিস্তানের গণপরিষদে বাংলা ভাষার দাবি তুলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্থাপন করেছিলেন বাংলাদেশের ভিত্তি। এর মূল্য তাকে দিতে হয়েছিল। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে ৮০ অতিক্রান্ত ওই প্রৌঢ়কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন জাগে, তিনি কি শুধু হিন্দুর জন্য সেই লড়াইয়ে নেমেছিলেন? মাদারীপুর সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী দীপ্ত দে ২০২৪-এর এই তথাকথিত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রথম দিকের শহীদদের মধ্যে একজন। হুতাত্মাদের মন্দির ভেঙে তাদের বাড়িঘর লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে এই হিন্দু হুতাত্মার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছে বাংলাদেশের ধর্মান্ধ উন্মাদরা।
বাংলাদেশকে আফগানিস্তানের তালিবানি দেশে পরিণত করার জন্য কয়েকটি তারিখ ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়া খুবই প্রয়োজন। যেমন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যেদিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করা হয়েছিল, ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনটি এবং ৪ নভেম্বর ১৯৭২, যেদিন বাংলাদেশে এক ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রবর্তন হয়েছিল। ইতিহাস থেকে এই তারিখগুলি মুছে দেওয়ার জন্যই আওয়ামি লিগ জামানার অবসানের মতো একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনকে স্বাধীনতার সংগ্রাম বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভেঙে ফেলা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্মদাতা মুজিবুর রহমানের মূর্তিগুলো। যে বাংলা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল সেই বাংলা ভাষার একমাত্র নোবেল বিজেতা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্মারক, সংসদ ভবন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিচরিত ধানমণ্ডির বাড়ি, বিভিন্ন গ্রন্থাগার অর্থাৎ স্বাধীনতার বার্তা বহনকারী সমস্ত কিছুই মুছে ফেলা হচ্ছে বাংলাদেশের বুক থেকে। হিন্দুরা দলে দলে আশ্রয় নিচ্ছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে। কাতর আবেদন জানাচ্ছে বিএসএফের কাছে।


কোচবিহার জেলার শীতলকুচির পাঠানটুলি সীমান্ত গ্রামের কাঁটাতারের ওপারে ও জলপাইগুড়ি জেলার বেরুবাড়ির সীমান্তে বাংলাদেশি হিন্দুদের চিৎকার করে বলতে শোনা গেছে 'হয় ভারতে ঢুকতে দিন না হলে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুন'। একাত্তরে ভারত সীমান্ত খুলে দিয়ে আশ্রয় প্রার্থীদের সবাইকে আশ্রয় প্রার্থীদের সবাইকে আশ্রয় দিয়েছিল। এখন কিন্তু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। এখন ভারত শরণার্থী হিসেবে এদের স্বীকার করছে না। ফলে এখন বাংলাদেশের হিন্দুদের জিহাদিদের হাতে অসহায় মৃত্যু ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। যে আমেরিকা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলো ভারতে ছোটোখাটো সমস্যা হলে বড়ো প্রতিক্রিয়া দেয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, ইসলামি দেশগুলোর সংগঠন এ যারা কাশ্মীর নিয়ে অতি সক্রিয় প্রতিক্রিয়া দিতে থাকে, তারা সবাই কিন্তু  আজকে নিশ্চুপ।

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নারকীয় অত্যাচার নিয়ে কেউ একটি বাক্য ব্যয় করছে না।

বাংলাদেশের জেল ভেঙে কয়েদিরা পালিয়ে যাচ্ছে। পালানো কয়েদিদের মধ্যে রয়েছে আনসারুল বাংলা ও জামাতুল মুজাহিদিনের বাছা বাছা কুড়িজন আন্তর্জাতিক মানের সন্ত্রাসবাদী। যারা কিনা ভারত-বাংলাদেশ সবার জন্যই এক মূর্তিমান বিপদ। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এইসব কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীরা জেল ভেঙে পালানোর পর যথারীতি সীমান্ত টপকে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়ে ফেলেছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গকে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীরা সবচাইতে নিরাপদ জায়গা বলে মনে করে আসছে।
বাংলাদেশ থেকে এমন সব ভয়ংকর ভিডিয়ো আসছে যেগুলো সবার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় আক্রমণ করা হয়েছে, জীবন্ত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে পুলিশ কর্মীদের। পুলিশ কর্মীদের দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে জনবহুল এলাকায় ওভার ব্রিজের নীচে। শোনা যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মীকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশের কোনো থানায় এখন কোনো পুলিশ কর্মী নেই। সবাই থানা ছেড়ে পালিয়েছে। সেনাবাহিনীও নিষ্ক্রিয়। বিজয় উৎসব পালনে ব্যস্ত। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি হোটেলেও বহু মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে এক চরম অরাজক পরিস্থিতি। থানাহীন, প্রশাসনহীন বাংলাদেশে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশে এত বড়ো ঘটনা ঘটলো কেন বা কেমন করে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই বিদেশের হাত দেখতে পাচ্ছেন। কেউ বলছেন এর পেছনে আমেরিকা হয়েছে, কেউ বলছেন চীন, পাকিস্তান লবি রয়েছে। এরকম বিভিন্ন বক্তব্য বা আন্দাজ উঠে আসছে। তবে কোটা সংস্কার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার উদ্দেশ্য যে, আরও অনেক বড়ো ছিল তা ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে।
শেখ হাসিনার বিগত ১৬ বছর শাসনকালে ধীরে ধীরে আজকের এই অরাজক পরিস্থিতির পটভূমি তৈরি হচ্ছিল, যার জন্য বিদেশি শক্তির অঙ্গুলিহেলনে বাংলাদেশে এত বড়ো একটি ঘটনা ঘটে গেল। শেখ হাসিনা হেফাজতে ইসলামির মতো কট্টর ধর্মান্ধগোষ্ঠীকে বিপুল পরিমাণ জমি ও অর্থ দান করে ব্যাঙের ছাতার মতো মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। এই মাদ্রাসায় শুধুমাত্র কোরান ও ধর্মান্ধতার পাঠ নিয়ে বেড়ে উঠছে হাজার হাজার ধর্মান্ধ বাংলাদেশি। হেফাজতে ইসলামকে খুশি করতে শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বনাশ করে ইসলামিক শিক্ষা চালু করতে সব রকম ভাবে সাহায্য করেছেন। বাংলাদেশে মসজিদ মাদ্রাসা থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন মসজিদ মাদ্রাসা গড়ে উঠতে সাহায্য করে হাসিনা ঘোষনা করেছিলেন তিনি মদিনা সনদে দেশ চালাবেন এবং ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করবেন। এই হাসিনা জামানাতেই পাঠ্যপুস্তকে হিন্দু লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোল্লাবাদীদের খুশি করতে নিজের দলে স্থান করে দিয়েছেন ধর্মান্ধদের। নিজের দলে ওলামা আওয়ামি লিগ নামে একটি শাখা তৈরি করে সেখানে মোল্লাবাদীদের আদর আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশের জন্মের পর  সর্বপ্রথম শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার ডিগ্রিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল্য করে 'কওমি মাতা' খেতাব উপহার পেয়েছিলেন। এই কওমি সন্তানেরাই এবার তার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন।
জিহাদিরা যখন লালনের মূর্তি ভেঙেছিল তখন হাসিনা নিশ্চুপ ছিলেন। তারা যখন হিন্দুদের দুর্গা, কালী, সরস্বতী মূর্তি ভাঙতো হাসিনা কিছুই
বলতেন না। ওরা যখন কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের মূর্তি ভেঙেছিল, হাসিনা কিছু বলেননি। লেডি জাস্টিস-এর মূর্তি সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে সরানোর দাবিও হাসিনা মাথানত করে মেনে নিয়েছিলেন।


শুধু মোল্লাবাদীরাই নয় হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জাত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী। ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষোভের কারণ আওয়ামি লিগ জামানায় প্রভাবশালীরা হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে । সেই সাথে কায়েম হয়েছিল এক গণতন্ত্রহীন স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা। মানুষের ক্ষোভ এতোটাই তীব্র ছিল যে  পুলিশ লেলিয়ে, সেনা  নামিয়ে, নির্বিচারে গুলি চালিয়েও হাসিনা বিরোধী জনস্রোতকে ঠেকানো যাচ্ছিল না।

'৭২-এর ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। নারীর প্রগতির পক্ষে, নারীর সমান অধিকারের পক্ষে তিনি কোনো কাজ করেননি। নারী বিরোধী পারিবারিক আইন এবং উত্তরাধিকার আইন যেটি আজও ধর্মভিত্তিক সেটিকে সমান অধিকার ভিত্তিক করার কোনো উদ্যোগ নেননি। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি জারি করার চেষ্টা করেননি। তিনি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বিদায় করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেননি, তার শাসনামলেও অমুসলিমরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে নিগৃহীত হয়েছে লাগাতার। তার শাসনামলে একের পর এক মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী ব্লগাররা জিহাদিদের হাতে   খুন হয়েছে। হাসিনা এর বিরুদ্ধে একটি বাক্যও উচ্চারণ করেননি। তিনি বরং ব্লগারদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন, খুন হওয়ার জন্য তাদেরই দায়ী করেছেন। দেশকে প্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত কাজই হাসিনা করতে পারতেন। কারণ তিনি একসময় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন।

কিন্তু সেই পথে না হেঁটে তিনি বাংলাদেশের শত শত হিন্দু বিদ্বেষী, নারী বিদ্বেষী, ইহুদি-বিদ্বেষী ধর্ম ব্যবসায়ীকে ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে কিশোর তরুণ-তরুণীদের মগজ ধোলাই করার অনুমতি দিয়েছেন। যারা দিনের পর দিন ধর্ম সমাবেশের নামে বাংলাদেশের তরুণ তরুণীদের মোল্লাবাদী দীক্ষা দিয়েছেন। বর্তমানে মূর্খ ও ধর্মান্ধ জিহাদিরা এই বাংলাদেশের সম্পদ, এই মৃত্যু উপত্যকাই এখন বাংলাদেশ। এই বীভৎস হত্যাকারীরাই এখন বাংলাদেশের সম্মাননীয় নাগরিক। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন লুটপাট করে, বাংলাদেশ সংসদ ভবন লুঠপাট করে, মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির বাড়ি আগুন জ্বালিয়ে, শেখ হাসিনার অন্তর্বাস ঝুলিয়ে প্রকাশ্যে নারকীয় উচ্ছ্বাস করেও এই ধর্মান্ধরাদের হাত থেকে  বাদ যাচ্ছে না বেগম রোকেয়াও। আগামীদিনে বাংলাদেশের মসনদে ধুরন্ধর ধর্মান্ধ লোকেরা বসবে, দেশটিকে আফগানিস্তান বানিয়ে ছাড়বে। অবশ্য শুধু বাংলাদেশে কেন ভারতেও এমন অনেক অসভ্য বর্বর আছে যাদের কাছে আফগানিস্তান স্বর্গরাজ্যের সমান।

এপারে শ্যামাপ্রসাদের বঙ্গেতেও ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাসিনার মতোই ভয়ংকর রাজনীতি করে যাচ্ছেন। ৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার মাত্র ছ'মাস আগে গত ৭ জানুয়ারি ২০২৪ 'অবাক' জয় পেয়েছিলেন হাসিনা। বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দল ৩০০ আসনের মধ্যে ২২৪টিতে জয় পেয়েছিল। মমতা ব্যানার্জিও হাসিনার মতো নির্বাচনের নামে প্রহসন করে বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। হাসিনার মতো মমতা সাগরেদরাও পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিতে ভরিয়ে তুলেছে পশ্চিমবঙ্গকে।মমতাও বাংলাদেশের মতো 'জয় বাংলা', 'খেলা হবে' স্লোগানে পশ্চিমবঙ্গের আকাশ বাতাস মাতিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশের মতোই ভয়ংকর পরিণতির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। কারণ এ রাজ্যের পরিস্থিতিও অনেকটাই হাতের বাইরে। #
আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য এই ব্লগারকে উৎসাহিত করবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...