সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

৭১-এর বাংলাদেশ , এই মরিচীকার পিছনে ছুটে ভারত নিজের সর্বনাশ করছে



                    
                      সাধন কুমার পাল
রবীন্দ্রনাথ ভারত-বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা । দুই দেশের হৃদয়ে বাস রবীন্দ্রনাথের । বাংলাদেশে তথাকথিত 'অগাস্ট বিপ্লবের' সময়  মুজিবের পর বাংলাদেশে ভাঙা হল রবীন্দ্রনাথের মূর্তিও! লেখিকা তসলিমা নাসরিন প্রশ্ন তুলেছেন যে ''জাগ্রত ছাত্র জনতা'' রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে মানুষকে মুগ্ধ করেছিল,

সেই জাগ্রত ছাত্র জনতা রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য ভেঙে গুঁড়ো করেছে। তাহলে ওই গান ছিল লোক দেখানো? 'ভুয়া'?
 
 সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রবিবার (৮ জুন২০২৫) মোটরসাইকেল পার্কিং ফি নিয়ে একজন দর্শনার্থী এবং কর্মীদের মধ্যে ঝগড়ার ফলে মিলনায়তন এবং ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্যান্য অংশ লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত পৈত্রিক বাড়িতে ভাঙচুর করেছে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা ৷ বেশকিছু মূল্যবান সামগ্রীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমেই তা প্রথম প্রকাশ পায় ৷ এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে৷

প্রতিবেশী পাকিস্তানে  ভয়ংকর অস্থিরতা তৈরি হলেও তার প্রভাব ভারতে পড়ে না বললেই চলে। ভারত বরং তাড়িয়ে তাড়িয়ে  পাকিস্তানের অস্থিরতা উপভোগ করে বলা যেতে পারে। কিন্তু সাবেক পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঠিক এর বিপরীত । বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি হলে ভারতের তার কী প্রভাব পড়বে এই ভাবনায় ভারতেও দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনীভূত হয়। গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের পর থেকে ওই দেশের পরিস্থিতি যত খারাপ হচ্ছে ভারতের উদ্বেগ আশঙ্কা ততই বাড়ছে। প্রতিবেশী দেশে কোন সমস্যা হলে তার প্রভাব ভারতে পড়বে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। নেপাল ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশে সমস্যা হলে ভারত যতটা দুশ্চিন্তায় থাকে তার চাইতে অনেক বেশি দুশ্চিন্তা হয় বাংলাদেশ নিয়ে।  পাকিস্তান কেমন দেশ, ভারতে কি কি সমস্যা তৈরি করতে পারে সেই সম্পর্কে ভারতের সরকার তো বটেই এদেশের প্রতিটি মানুষ সচেতন, সজাগ। এর থেকে এটা স্পষ্টভাবে বলা যায় প্রতিবেশী সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট থাকলে এই ধরনের সমস্যাগুলো এড়ানো যেতে পারে।  আমার মনে হয় বাংলাদেশ নিয়ে তৈরি হওয়া ন্যারিটিভ ভারতের কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ সৃষ্টি করছে। 
বাংলাদেশ নিয়ে যে নেরিটিভ তৈরি করা হয়েছিল তা হল যে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের অবদান রয়েছে ,বাংলাদেশ গঠনে ভারতের ভূমিকা অপরিসীম সুতরাং বাংলাদেশ  কোন দিন ভারতের শত্রু হতে পারে না। এ রকম ন্যারেটিভ  শুধু ভারত সরকার নয় প্রত্যেকটি ভারতবাসীর মনেও এই চিন্তা বদ্ধমূল হয়ে আছে। এই বদ্ধমূল চিন্তা যে ভ্রান্ত সেটা বোধহয় আজ প্রমাণ হয়ে গেছে। এতদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামিক গোষ্ঠী বিচ্ছিন্নভাবে ভারত বিরোধী ক্রিয়াকলাপ চালালেও ভারত সেগুলোকে গুরুত্ব দেয়নি বললেই চলে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের বাংলাদেশ নীতিতে ভুলটা কোথায়? সেই প্রসঙ্গে আসবো ।তবে তার আগে এক নজরে বাংলাদেশের কিছু বিশেষ ঘটনা দেখে নেয়া যাক।
পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেও  'ভারত বিরোধীতা,' কেন্দ্রীক রাজনীতি প্রবর্তন করতে ইউনুস যে মরিয়া হয়ে উঠেছে তা ইতি মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন জেহাদী বাংলাদেশ ক্রমাগত রক্তচক্ষু দেখিয়েই চলেছে ।ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাগাতার বিবৃতি প্রদান করা নিয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল ঢাকা। তার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছিল। এবার মৌলবাদী ছাত্র-জনতার হাতে ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিয়ে ভারতের বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছে ইউনূসের সরকার। ' ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, 'বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের বাড়িটি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের বীরোচিত প্রতিরোধের ঐতিহ্য বহন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের গুরুত্ব যাঁরা বোঝেন তাঁরা এই বাড়ির ঐতিহ্য এবং গুরুত্ব সম্পর্কেও অবহিত। এই ভাঙচুর ও ধ্বংসলীলার কঠোর সমালোচনা করা উচিত।' ভারতের নাম না করে মন্ত্রকের মুখপাত্র রফিকুল আলম সাফ বলেছেন, 'অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাংলাদেশ বিবৃতি দেয় না। অন্য দেশের থেকেও একই প্রত্যাশা করি আমরা।' শুধু মুজিবের বাড়ি ভাঙা নিয়েই নয়, তিস্তার জলবণ্টন নিয়েও ভারতকে নিশানা করেছে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার।  স্থানীয় সরকার ও যুব এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, আগের সরকার ভারতের সঙ্গে নতজানু হয়ে কেবল ছবি তুলেছে। কিন্তু তিস্তা নিয়ে কোনও কথা বলেনি। আমরা তিস্তার ন্যায্য ভাগ দেওয়ার জন্য ভারতকে বাধ্য করব।' জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য  আখতার হোসেন বলেন, 'ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে। তিস্তার জল নিয়ে ভারত যে টালবাহানা করেছে দরকার হলে আন্তর্জাতিক স্তরে বিচারের সম্মুখীন হয়ে ন্যায্য পাওনা চাইব।'



ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশের রক্তচক্ষু
এমনিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্থলসীমান্তের দৈর্ঘ্য হল ৪,০৯৬ কিলোমিটার। সেটার মধ্যে ৩,০০০ কিমির মতো অংশে ইতিমধ্যে বেড়া আছে। তবে পাচার, অনুপ্রবেশের মতো বিভিন্ন ঘটনা রুখতে বাকি অংশেও বেড়া বসানোর তোড়জোড় করা হচ্ছে। তারইমধ্যে পাঁচটি জায়গায় বেড়া বসানো নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এমনিতেই দু'দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধাক্কা খেয়েছে। সেই আবহে সীমান্তে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। 
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সন্দেহভাজন সিগন্যাল ধরা পড়ল। উর্দু, আরবিতে সাংকেতিক ভাষায় সেই বার্তা ধরা পড়েছে। আর সেই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জঙ্গি কার্যকলাপের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে, বাঙ্কার খুড়ছে এই সমস্ত খবরও মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি চিকেন নেককে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি আসছে। উত্তর-পূর্বের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলিকে মদত দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে। পরিকল্পনা করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ভারতের জনসংখ্যার চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। পাকিস্তান থেকে অস্ত্রভর্তি জাহাজ বাংলাদেশে ঢুকেছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কর্তারা আইএসআইয়ের অফিসাররা সরাসরি এসে বাংলাদেশে বৈঠক করছে। ইউনুস বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা জন্য করলে এটাই মনে হয় যে কোন মূল্যে ইউনূসের বাংলাদেশ ভারতকে যুদ্ধে জড়াতে চায়।
বাংলাভাষী জেহাদীদের ছোবল থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করার অনেক সুযোগ ভারত পেয়েছে
বাংলাদেশের ইসলামিক জেহাদীদের হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষিত করার প্রথম সুযোগ ভারতের কাছে এসেছিল ১৯৭১ সালে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল আসলে উর্দূভাষী মুসলমান ও বাংলাভাষী মুসলমানদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই। শিয়াসুন্নি লড়াই এর মতো গোষ্ঠী কোন্দলে বিবদমান  ইসলামের মধ্যে অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের এটি একটি নতুন সংযোজন।
১৯৪৭ এ জন্মলাভ করা পাকিস্তানে সমস্ত দিক থেকে প্রবল ক্ষমতাবান ক্ষমতাসীন উর্দূভাষী মুসলমানদের সাথে লড়াই করার সামর্থ্য বাংলাভাষী মুসলমানদের ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই সে সময় উর্দূভাষী  মুসলিমদের সাথে টক্কর দেওয়ার জন্য বাংলাভাষী মুসলমানরা হিন্দু জনগোষ্ঠী ও ভারতের সমর্থন পাওয়ার জন্য নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি আবেগের মোড়কে আড়াল করে নিয়েছিল। তাতে উর্দুভাষী মুসলমানরা পরাজিত হয়েছিল। জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে হিন্দুরা কোনদিনই সুরক্ষা পায়নি। বাংলাদেশের হিন্দুরা ও ভারত  ধর্মনিরপেক্ষতার মরীচিকার মুখোশধারী শেখ মুজিবুর রহমানের দল আওয়ামী লীগের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করে এসেছে বছরের পর বছর ধরে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা দুই বাংলার বাঙালিয়ানার মিথ্যা আবেগে ভাসতে হিন্দু বাঙ্গালীদের সর্বনাশকে চিরকাল না দেখার ভান করে এসেছে। এই আওয়ামীলীগ জামানাতেই বাংলাদেশ ধীরে ধীরে হিন্দু শূন্য হয়েছে , ভারত বিরোধীতার চোরা স্রোত ক্রমশই শক্তিশালী হয়েছে।  আওয়ামী লীগ জামানায় ভারত কোন দিন বাংলাদেশের কাছে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে, বেড়ে চলা ভারত বিরোধীতা নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয় নি। আলফা ,এন এস সি এন এর মতো   উত্তর পূর্বাঞ্চলের  ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশের মাটি থেকে নিষ্ক্রিয় করার যে কাজ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ করেছে তার পিছনে যতটা ভারতকে সাহায্য করার তাগিদ ছিল  চেয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থ ছিল অনেক বেশী। কারণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই সমস্ত সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীগুলো বিএনপি ,বাংলাদেশ জাতীয় দলের মতো আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির  কাছ থেকে সমস্ত ধরনের সহায়তা  পেতো। সেজন্য ভারতের উচিত ছিল  স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করার বিনিময়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর সুরক্ষাকে নিশ্চিত করা। সেই সাথে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে শক্তপোক্ত কাঁটাতারের বেড়া তুলে দেওয়া। মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ একটি প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্ব অবশ্যই প্রয়োজন আছে তবে , সর্বোচ্চ সতর্কতাও প্রয়োজন।আজকের বাংলাদেশের পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বাঙালি মুসলমানদের ধর্মনিরপেক্ষতার নাটক ছিল আসলে ভারতের চোখে ধুলো দেওয়া ,আর ভারতের তরফে বাংলাভাষী মুসলিমদের চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করার বিষয়টি ছিল আসলে মীরজাফরকে বিশ্বাস করার মতো।
২০১৫ সালে একটি বড় সুযোগ হাতছাড়া করল ভারত
২০১৫ সালে ভারত বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। এই বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ১১১ টি ছিটমহল ও ভারত পেয়েছে ৫১ টি ছিটমহল। এই ১১১ টি ছিটমহলে বাংলাদেশ পেয়েছে মোট ১৭০০০একর জমি ও ভারত পেয়েছে মাত্র ৭৫০০ একর  জমি। অর্থাৎ বাংলাদেশ ১০ হাজার  একর জমি বেশি পেয়েছে। ভারতের নিরাপত্তার জন্য ভয়ংকর বিপদজনক তিন বিঘা করিডর মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষাকারী ৫,৬০২.৫ একর (প্রায়) আয়তন সম্পন্ন আঙ্গারপোতা দহগ্রাম ছিটমহল বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। সেই সময়  যদি এই আঙ্গার পোতা দহগ্রাম ছিটমহল ভারতভুক্ত হতো তাহলেও  বাংলাদেশ ৫ হাজার একর জমি বেশি পেতো। ঐ সময় সীমান্তের সমস্ত অসুরক্ষিত এলাকায় কাঁটাতার লাগানো যেতো আলোচনার মাধ্যমে। এই বাড়তি জমির বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত কে পূর্ণরূপে সুরক্ষিত করা যেতো। অনেক জায়গাতে ভারতের অংশ কলসির মতো বাংলাদেশের ভেতর ঢুকে গেছে, সেইসব এলাকা বাংলাদেশকে দিয়ে বাংলাদেশের থেকে কিছুটা ওই ধরনের এলাকা নিয়ে সীমান্তকে সোজা  করা যেতো। কিন্তু সেসব কিছুই করা হয়নি। হয়তো ভাবা হয়েছিল এই বাড়তি জমি দিলে বাংলাদেশ খুশি হয়ে যাবে ,শেখ হাসিনার পূর্ণ কর্তৃত্ব বাংলাদেশের উপর ফিরে আসবে, ভারতের সাথে বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। ভারত হয়তো ভুলে গেছে ভারত বিদ্বেষী পাকিস্তানের জঠর থেকে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের মতো ইসলামিক ভূখণ্ডকে কখনোই সামান্য জায়গা দিয়ে খুশি করা যায় না। গোটা ভারতবর্ষ ওদের  হাতে তুলে দিলেই একমাত্র ওরা খুশি হতে পারে। দীর্ঘ সময় ইসলামিক শাসনে থাকার পরও একটি দেশ যদি শিক্ষা না নেই তাহলে তার দুর্দশা তো হবেই। গীতায় বলা হয়েছে সমস্ত রকম সমস্যা, দুঃখ দুর্দশার মূলে অজ্ঞানতা। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অজ্ঞতাই আজকের এই উদ্বেগ- আশঙ্কার মূল কারণ। হাজার বছর ইসলামিক শাসনে থেকেও সেকুলার ভারত ইসলামিক মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে যে বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন হতে পারে নি তার বড় প্রমাণ ভারতের বাংলাদেশ নীতি। সেই একাত্তরের বাংলাদেশ, এই আবেগ ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সময় এসেছে ইসলামিক বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন করে রণকৌশল তৈরি করার। এই রণকৌশল তৈরি করতে যত বিলম্ব হবে ততই বিপদগ্রস্ত হবে ভারত।##

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...