সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রক্তে রাঙা অরণ্য: অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট ও লাল সন্ত্রাসের শেষ অধ্যায়


                                     


                          সাধন কুমার পাল

নিশব্দে রাত ভেদ করে, গভীর অরণ্যের আঁধারে যখন রাষ্ট্র ও বিপ্লবের মুখোমুখি লড়াই চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছিল—ঠিক তখনই ভারতের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচিত হলো। ছত্তীসগড়ের আবুজমাড় অরণ্যে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’-এর নামে পরিচালিত ভয়াবহ অভিযানে ঝরে গেল ভারতের অন্যতম কুখ্যাত ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের মাওবাদী নেতা নম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজুর জীবন। এই এক অভিযানেই কেঁপে উঠেছে ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের ভিত্তি—শুধু একজন শীর্ষ নেতার মৃত্যু নয়, বরং একটি বিপ্লবী আদর্শের চরম বিপর্যয়।


এই ঘটনার অভিঘাত শুধু জঙ্গলে সীমাবদ্ধ নেই—এর প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক মহল, বুদ্ধিজীবী সমাজ ও তথাকথিত 'লেফট-লিবারেল' ইকোসিস্টেমেও। একদিকে রাষ্ট্র যখন লাল সন্ত্রাসের মূল কাণ্ডারিদের নির্মূল করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, অন্যদিকে কিছু মুখোশধারী কলম-সন্ত্রাসী ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এই অভিযানের নৈতিকতা ও মানবাধিকারের পাঠ পড়াতে।
এই প্রবন্ধে আমরা বিশ্লেষণ করব কেমনভাবে বাসবরাজুর পতন একটি আদর্শের পতনেরও ইঙ্গিত দেয়, কেমনভাবে রাষ্ট্রের ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ ভারতের নিরাপত্তা নীতিতে এক মাইলফলক হয়ে উঠেছে এবং কীভাবে এই সংঘাত উন্মোচন করছে ভারতের রাজনীতি, সমাজ ও তথাকথিত প্রগতিশীলতার অন্তর্গত দ্বন্দ্বকে।
নম্বালা কেশব রাও, যিনি বাসবরাজু নামেও পরিচিত, ২০২৫ সালের ২১ মে ছত্তীসগড়ের নারায়ণপুর জেলার আবুজমাড় জঙ্গলে একটি বড় মাওবাদী-বিরোধী অভিযানে নিহত হন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মাওবাদী)-এর মহাসচিব ও শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। গত তিন দশকের মধ্যে নিহত সর্বোচ্চ পর্যায়ের মাওবাদী নেতা চিহ্নিত বাসবরাজু। এই অভিযানে ২৭ জন মাওবাদী বিদ্রোহী এবং একজন DRG সদস্য নিহত হন। রাওয়ের মাথার উপর সম্মিলিতভাবে ১০ কোটিরও বেশি টাকার পুরস্কার ছিল এবং তিনি বহু প্রাণঘাতী হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন।২০১০ সালে ৭৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান এর গণহত্যা এবং ২০১৩ সালে ঝিরাম ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে হত্যা সহ আরো মারাত্মক সমস্ত ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হিসাবে চিহ্নিত ছিলেন এই বাসব রাজু। তাঁর মৃত্যু মাওবাদী আন্দোলনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এই মৃত্যু মাওবাদী আন্দোলনকে নেতৃত্বহীন করে ফেলেছে এবং তাদের কার্যক্ষমতায় বড় রকমের আঘাত এনেছে। ভারত সরকার এই ঘটনাকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নকশালবাদের সম্পূর্ণ অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আবার একবার অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে "লেফট লিবারেল-ইসলামী-ইভানজেলিস্ট" ইকো সিস্টেম। কারণ এই সিস্টেমের রাঘববোয়ালেরা ভারত সরকারের নকশাল নির্মূল অভিযানকারীদের জালে উঠেছে। নিরাপত্তা রক্ষীদের জালে জীবিত অথবা মৃত, যাদের মাথার দাম উঠেছিল কোটি কোটি টাকা সেই সমস্ত রাঘববোয়াল ধরা পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যারা ভারতবর্ষকে চীনের মতো কয়েদ খানা কিংবা দারুল ইসলামের চারণভূমি অথবা ভ্যাটিকানের অনুগামী করে তুলতে চায় তারা আর বসে থাকে কি করে। বিশ্বজুড়ে এরা পরস্পর লড়াই করলেও ভারতবর্ষে এরা এক হয়ে লড়ছে। যারা কিনা বলে বন্ধুকের নলই ক্ষমতার উৎস সেই রক্ত পিপাসু মাওবাদী নেতাদের 'গরিবের বন্ধু' ,'বঞ্চিতের আওয়াজ' ইত্যাদি তকম্মায় ভূষিত করে ভারত সরকারকে গণতন্ত্রের পাঠ পড়াতে, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পাঠ পড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এই ইকো সিস্টেম। এদের বক্তব্য শুনলে যে কোন মানুষ ভরকে যেতে বাধ্য। এরা উচ্চশিক্ষিত প্রশিক্ষিত মুখোশধারী সন্ত্রাসবাদী। এদের হাতে অস্ত্র থাকে না । কলম ও ক্যামেরা হচ্ছে এদের মূল অস্ত্র। সি পি আই (এম এল ) লিবারেশন বাসবরাজুর হত্যার ঘটনাকে ঠান্ডা মাথায় 'বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেছে। সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বাসবরাজুর হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন' ছত্রিশগড়ে একজন সিনিয়র মাওবাদী নেতা বেশ কয়েকজন আদিবাসী ঠান্ডা মাথায় হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সিপিআই। এটি বিদ্রোহ দমন অভিযানের আড়ালে বিচার বহির্ভূত পদক্ষেপের আরেকটি উদাহরণ ।আইনসম্মত গ্রেপ্তারের পরিবর্তে বারবার প্রাণঘাতী শক্তির ব্যবহার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও আইনের শাসনের প্রতি রাষ্ট্রের অঙ্গীকার নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করে।' মাওবাদী নেতাদের সরকারের প্রতি খোলা চিঠি: ‘অপারেশন কাগার’ বন্ধ করে শান্তি আলোচনার আহ্বান ও অস্ত্রবিরতির আবেদনে ২০২৫ সালের ২ এপ্রিল, সিপিআই (মাওবাদী) মুখপাত্র অভয়-এর মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায় যে তারা অবিলম্বে অস্ত্রবিরতি চায় এবং সরকার যদি মাওবাদী বিরোধী সামরিক অভিযান বন্ধ করে ও ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার মতো এলাকায় নিরাপত্তা শিবির তুলে নেয়, তাহলে তারা শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।ওরা দাবি করে, গত ১৫ মাসে 'অপারেশন কাগার'-এর নামে ৪০০-রও বেশি মাওবাদী সদস্য ও আদিবাসী সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়াও, ওরা নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বেআইনি আটক, মহিলা যোদ্ধাদের ওপর যৌন সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
২১ এপ্রিল থেকে ১১ মে ২০২৫ পর্যন্ত পরিচালিত ২১ দিনব্যাপী "অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট", মাওবাদীদের একটি পরিচিত শক্ত ঘাঁটি কারেগুত্তালু পাহাড় (কেজিএইচ) কে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়েছিল। অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্টের সাফল্যের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকজন সিনিয়র মাওবাদী কমান্ডারকে নির্মূল বা আহত করা, যার মধ্যে মাওবাদীদের সশস্ত্র শাখা পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি (পিএলজিএ) এর নেতারাও ছিলেন। এই অপারেশনে ১৬ জন মহিলা সহ মোট ৩১ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে, এবং ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে ১.৭২ কোটি টাকা সমষ্টিগত পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। মাওবাদী চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই অভিযানটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর ফলে ৪৫০টি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভডিভাইস (আইইডি), ৮০০টিরও বেশি ব্রিগেড গ্রেনেড লঞ্চার (বিজিএল) শেল এবং বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও, মেগা অভিযানের সময় প্রায় ১২,০০০ কিলোগ্রাম খাদ্য দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিএল শেল, ঘরে তৈরি অস্ত্র এবং আইইডি উৎপাদনের সাথে যুক্ত কমপক্ষে চারটি প্রযুক্তিগত ইউনিট সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা হয়েছে। - অভিযানের সময় ২১০ টিরও বেশি মাওবাদী আস্তানা (গুহার মতো বাঙ্কার) সফলভাবে সনাক্ত এবং ধ্বংস করা হয়েছিল। মাওবাদীদের কারিগরি বিভাগ এই আস্তানাগুলিকে অস্ত্র তৈরির ইউনিট হিসাবে ব্যবহার করছিল। এই বাঙ্কারগুলির অস্তিত্ব প্রমাণ করে কারেগুত্তালু পাহাড়কে নিষিদ্ধ মাওবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিরাপদ স্বর্গ হিসাবে বিবেচনা করে আসছে। সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, '২০২৬ সালের ৩১শে মার্চের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নকশালবাদ (মাওবাদ) নির্মূল করার সংকল্প পূরণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ৩১টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি এবং এটি ১২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এবং আমাদের কাছে তথ্য আছে যে আরও বেশি সংখ্যক নকশালকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। নিষ্ক্রিয় করা ৩১ জন নকশালের মধ্যে ২৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই অভিযানের নামকরণ করা হয়েছিল অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট, এবং কোবরা, সিআরপিএফ এবং ছত্তিশগড় পুলিশের দল এই অভিযানে জড়িত ছিল। এত বড় উদ্ধার আগে কখনও কোনও অভিযানে ঘটেনি। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সাফল্য ,"
এটি উল্লেখযোগ্য যে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী বছরের মার্চ মাসের আগেই দেশ থেকে 'লাল সন্ত্রাস' নির্মূল করার সংকল্প নিয়েছে। এর আগে সরকার ঘোষণা করেছিল যে দেশে মাওবাদী সন্ত্রাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির সংখ্যা ২০১৪ সালে ৩৫টি জেলার তুলনায় কমে ৬টিতে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বাহিনী নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর আধিপত্য বিস্তারকারী এলাকাগুলিতে ৩০০ টিরও বেশি নিরাপত্তা শিবির স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে, যার ফলে মাওবাদীদের অবাধ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে যার ফলে প্রশাসন দুর্গম এলাকাগুলিতে উন্নয়নের কাজ দ্রুত করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও, নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটিগুলিতে অভিযান জোরদার করেছে, তাদেরকে মুক্ত করে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে স্থানীয় মাওবাদী ক্যাডারদের আত্মসমর্পণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র বছরের প্রথম চার মাসে ৭০০ জনেরও বেশি মাওবাদী ক্যাডার কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
     সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ভারতজুড়ে, বিশেষ করে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা এবং কেরালায় মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রবণতা  নিরাপত্তা অভিযানের তীব্রতা, মাওবাদী আদর্শের প্রতি মোহভঙ্গ এবং সরকারি পুনর্বাসন কর্মসূচির প্রতি আকর্ষণের সংযুক্ত প্রয়াসের সাফল্যকে প্রতিফলিত করে।
নেতৃত্বের ধারাবাহিক পতন, অভ্যন্তরীণ হতাশা এবং সরকারিভাবে গৃহীত সক্রিয় নীতিমালার সম্মিলিত প্রভাবের ফলে মাওবাদীদের শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে শুধু বস্তার অঞ্চলে কিছু সশস্ত্র ক্যাডার অবশিষ্ট রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় কমিটিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে নকশালবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্যে আশাবাদী। ##

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতের প্রথম "Gen Z Movement"

          লিখেছেন :: সাধন কুমার পাল Gen Z বা  Generation Z  হল সেই প্রজন্ম যারা মূলত ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে (কিছু গবেষক ১৯৯৫–২০১০ বা ২০০০–২০১৫ পর্যন্তও ধরে নেন)। অর্থাৎ, এই প্রজন্মের মানুষদের বর্তমান বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ২. নামকরণের কারণ: • Baby Boomers  (১৯৪৬–১৯৬৪) • Generation X  (১৯৬৫–১৯৮০) • Millennials  বা  Gen Y  (১৯৮১–১৯৯৬) • তার পরবর্তী প্রজন্মকে বলা হয় Gen Z। "Z" অক্ষরটি এসেছে ধারাবাহিকতার কারণে। ৩. প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য: • Gen Z হল প্রথম প্রজন্ম যারা জন্ম থেকেই ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। • এদের বলা হয় Digital Natives (ডিজিটাল-প্রাকৃতিক)। • Facebook, Instagram, YouTube, TikTok, Snapchat, WhatsApp – এসব প্ল্যাটফর্ম এদের জীবনের অংশ। ৪. শিক্ষাগত ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: • তথ্য জানার জন্য বইয়ের বদলে বেশি ব্যবহার করে গুগল ও ইউটিউব। • মনোযোগের সময়কাল তুলনামূলকভাবে ছোট (short attention span), তবে একসাথে অনেক তথ...

তিনবিঘা থেকে শিলিগুড়ি করিডর: সীমান্তে নতুন আগুন, নিরাপত্তায় শৈথিল্য

                                                                    সাধন কুমার পাল     বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উস্কানিমূলক মন্তব্যের পর চিকেন'স নেক অঞ্চলটি  নতুন করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়  রাজ্যগুলিকে(সেভেন সিস্টারস) "স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে  "সমুদ্র পথে  প্রবেশের নিরিখে অভিভাবক" হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।  ভারতের আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হল, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডরের কাছে লালমনিরহাটে ব্রিটিশ আমলের বিমান ঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চীনা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লালমুনিরহাট বিমান ঘাঁটির কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবরের মধ্যে শুরু হতে পারে, যেখানে একটি পাকিস্তানি কোম্পানি উপ-ঠিকাদার হিসেবে থাকবে। ভারত-ভ...

শিক্ষকদের কান্নায় কি ডুববে মমতার সিংহাসন?"

                                                   সাধন কুমার পাল     ত্রিপুরায় তখন রক্তমাখা লাল রাজত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন সিপিএমের মানিক সরকার, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘সাদামাটা মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ২০১০ এবং ২০১৩ সালে বাম সরকারের আমলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন কিছু প্রার্থী। আগরতলা হাই কোর্ট চাঞ্চল্যকর রায় দেয়—পুরো প্যানেল অবৈধ, বাতিল করতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তৎকালীন সরকার, কিন্তু ২০১৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এই রায়ের ঢেউ রাজনীতির ময়দানেও পড়ে। পরের বছর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা হাতছাড়া হয় মানিক সরকারের। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। ২০২৪ সালের এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্...